ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরব শিক্ষাঙ্গনের অপেক্ষা

প্রকাশিত: ২০:২২, ২৯ মে ২০২১

সরব শিক্ষাঙ্গনের অপেক্ষা

বুধবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যৌথভাবে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেনের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে আশাজাগানিয়া উপাদান পাওয়া যাবে। তবু তরুণেরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন তারুণ্যের স্বভাবগত মানসিকতা থেকে। এক বছরেরও বেশি সময় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর সরব শিক্ষাঙ্গন থেকে দূরে থাকা কতখানি দুঃসহ সেটা অভিভাবক এবং কর্তৃপক্ষের না বোঝার সামান্যতম কারণ নেই। শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করেই বলেছেন, আমরা যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দিতে পারি সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেন সংক্রমণের হার না বাড়ে। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের মধ্যে এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। আমি অনুরোধ করব সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, যাতে আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি। আগামী পক্ষকালের মধ্যে অর্থাৎ ১৩ জুন থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এ সুসংবাদ প্রত্যাশিত ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি টিকার ওপর খানিকটা নির্ভর করছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে চাওয়া হয়েছে। তবে ধরে নেয়া যায়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর নিচে, তাই অধিকাংশই হয়ত টিকা নিতে পারেননি। তবে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিকল্প কী করা যায় সেটা ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। এটি স্বস্তির খবর যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তারা টিকা নিতে পারবেন। টিকাদান কার্যক্রম শেষ করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার আশ্বাস মিলেছে। শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের জন্য এটিও আনন্দিত হওয়ার মতো তথ্য যে, গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার মতো আর পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে না। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করিয়েই এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে। একইভাবে আগামী বছরের (২০২২ সালের) এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে। অন্যদিকে এ বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো, যদি পরীক্ষা নেয়ার মতো পরিস্থিতি হয় তাহলে পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। অন্যথায় এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে এই পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে। উন্নত বিশ্বে শিক্ষাঙ্গন অনেক আগেই খুলে দেয়া হয়েছে এবং পাঠদানের দিনগুলো শিক্ষাঙ্গনে উপস্থিতি ও ঘরে অনলাইনে ক্লাস এ দুটি ব্যবস্থার ভেতর সমন্বয় করা হয়েছে। তবে ওইসব দেশে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে। আমাদের শিক্ষাঙ্গনগুলোতেও কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করা চাই। সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষক এবং অভিভাবকদের এ বিষয় সামান্যতম ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। খুব সহজে করোনা যাবে না। তাই নিজ সুরক্ষা শতভাগ নিশ্চিত করাই আসল কথা। এতে সব পক্ষের সচেতনতা ও সতর্কতার কোন বিকল্প নেই।
×