ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে

প্রকাশিত: ২৩:০৭, ২৭ মে ২০২১

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সময় ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বুধবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যৌথভাবে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, আমরা স্কুলগুলো খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পঞ্চম শ্রেণীগুলো সপ্তাহে ছয়দিন এবং বাকিগুলো একদিন করে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এখন আমরাও (প্রাথমিক) ১৩ জুন থেকে স্কুলগুলো খোলার চেষ্টা করব। শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি বলেন, আমরা যেন দ্রুত খুলে দিতে পারি সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেন সংক্রমণের হার না বাড়ে। সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের মধ্যে এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। আমি অনুরোধ করব সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি যাতে আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারি। গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার মতো আর পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে না। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে শ্রেণীকক্ষে ক্লাস করিয়েই এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে। একইভাবে আগামী বছরের (২০২২ সালের) এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে। অন্যদিকে এ বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলো, যদি পরীক্ষা নেয়ার মতো পরিস্থিতি হয় তাহলে পরীক্ষার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। অন্যথায় এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে এই পরীক্ষার মূল্যায়ন হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বছরের (২০২২) এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে। এ জন্য এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ১৮০ দিন ক্লাস করানোর জন্য সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচী করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব শিক্ষার্থীর জন্য আগামী জুন থেকে সপ্তাহে দুটি করে এ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। আর জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা নেয়ার পরিস্থিতি হলে নেয়া হবে। আর না হয় এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা যায় কি-না, সেটা দেখা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি ১২ জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে পরদিন ১৩ জুন থেকে খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ১৩ জুন উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকা দেয়ার ওপর। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্কুল-কলেজ হয়ত আগেই খুলে দেয়া যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি হয়ত টিকার ওপর খানিকটা নির্ভর করছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে চাওয়া হয়েছে। তবে ধরে নেয়া যায়, যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর নিচে, তাই অধিকাংশই হয়ত টিকা নিতে পারেননি। তবে টিকা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বিকল্প কী করা যায়, সেটা ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম জোরদার করা হবে ॥ শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হবে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তারা টিকা নিতে পারবেন। টিকাদান কার্যক্রম শেষ করেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব শিক্ষার্থীকে করোনার টিকার আওতায় এনেই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছেন। তবে টিকা সম্পন্ন না হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে খুলে দেয়া যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে যাদের বয়স চল্লিশের উর্ধে তাদের প্রায় সবাই টিকা নিয়েছেন। এখনও যারা বাদ আছেন তারাও দ্রুত সময়ের মধ্যে নিতে পারবেন। সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। টিকা পাওয়ার সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। এখন টিকা পাওয়া গেছে, অগ্রাধিকারভিত্তিতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করা হবে।
×