ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সেরাম সিইওর কথায় টিকা রফতানির ইঙ্গিত মিলছে না

প্রকাশিত: ০১:০২, ১৯ মে ২০২১

সেরাম সিইওর কথায় টিকা রফতানির ইঙ্গিত মিলছে না

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারতে ভাইরাসের টিকা সঙ্কটে ক্ষোভ ও সরকারের তুমুল সমালোচনার পাশাপাশি রফতানি নিয়েও যখন সোচ্চার সবাই, তখন বাংলাদেশও দেশটি থেকে টিকা পেতে জোরালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার দ্রুত টিকা পাঠাতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ফোন করেন। ওই দিনই অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদকারী সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়ার (এসআইআই) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা ব্যাপক সমালোচনার মুখে রফতানির বিষয়ে তার অবস্থান তুলে ধরে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ভারতের চাহিদা আগে পূরণের কথা বলায় বাংলাদেশের মতো যেসব দেশ টিকা আশায় রয়েছে, তাদের অনিশ্চয়তা কাটার কোন ইঙ্গিত মিলছে না। খবর বিডিনিউজের। বাংলাদেশে দেয়া হচ্ছে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড। দুই চালান পাঠানোর পর বাংলাদেশকেও টিকা দিতে পারছে না বিশ্বের সবচেয়ে বেশি টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। লন্ডন থেকে দেয়া বিবৃতিতে আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘তার প্রতিষ্ঠান ভারতের মানুষের জীবনের বিনিময়ে কখনও টিকা রফতানি করেনি।’ ৪০ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী রফতানি নিয়ে অব্যাহত সমালোচনার মুখে ভারতীয়দের ভ্যাকসিন না দিয়ে কেন রফতানি করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, বিশাল জনগোষ্ঠীর কারণে ভারতের টিকাদান কর্মসূচী দুই বা তিন মাসে শেষ করা যাবে না। এ জন্য দীর্ঘ সময় লাগবে মন্তব্য করে তিনি মহামারী মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেন। বিবৃতিতে কোভিশিল্ড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটির প্রধান এই ব্যক্তি বলেন, যেসব দেশে টিকা ও ওষুধ রফতানি করা হয়েছে, ভারত এখন সেসব দেশ থেকে সহায়তা পাচ্ছে। চারদিক থেকে প্রশ্নের মুখে কোন পরিস্থিতিতে টিকা রফতানি করা হয়েছিল সেই প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আদর পুনাওয়ালা গত বছর মহামারীর প্রথম দিকে তার দেশের সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে টিকা দেয়া যখন শুরু হয়, তখন ভারতে মজুতের পর মজুত ছিল। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল মহামারীর অন্য সময়ের চেয়ে একদম সর্বনিম্নে। টিকা কর্মসূচীও দারুণভাবে শুরু হয়েছিল। একই সময়ে অনেক দেশ খুবই সঙ্কটের মধ্যে পড়েছিল। তারা সাহায্যের জন্য খুবই আকুতি করছিল। সরকারও যতটুকু সহায়তা করা সম্ভব, ততটুকুর জন্য হাত বাড়িয়েছিল। মহামারী একই ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক সীমানা বা পরিসরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুনিয়াজোড়া এই মহামারীতে সবাই যতক্ষণ না এই ভাইরাসকে পরাজিত করতে পারবে ততক্ষণ কেউ আমরা একাই নিরাপদ থাকতে পারব না। লন্ডন থেকে সেরাম ইনস্টিটিউটের এই বিবৃতি পাঠানো হয়। টিকা নিয়ে আগ্রাসী চাপের কারণে এপ্রিলে ভারত ছেড়ে তিনি সেখানে যান। করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে সরকারীভাবে তার ওপর হামলার আশঙ্কা থেকে এপ্রিলে আদর পুনাওয়ালাকে দেয়া ‘ওয়াই’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তায় সব সময় থাকছে ৪/৫ জন কমান্ডো। তবুও তিনি ভারতে ফেরা বিলম্বিত করেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরতে পারেন বলে এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আদর পুনাওয়ালার বিবৃতিতেও ভারতে টিকা দিতে দীর্ঘ সময় লাগার কথা বলা হয়েছে। এতে সেরাম ইনস্টিটিউট স্বল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে টিকা পাঠাতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
×