ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে সংঘর্ষ গুলি

দুই মামলায় প্রার্থীসহ আটক ৩৯

প্রকাশিত: ২৩:১৮, ১৮ মে ২০২১

দুই মামলায় প্রার্থীসহ আটক ৩৯

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১৭ মে ॥ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শিবচরে (করোনায় স্থগিত) ইউপি নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ৭ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় ৯৬ জনের নামের পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে। শিবচর থানা পুলিশ ঘটনার দিন এক চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৭ জনকে আটক করে। মামলা দায়ের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরও ৩২ জনকে আটক করে। এ নিয়ে সোমবার ভোর পর্যন্ত ৩৯ জনকে আটক করা হলো। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়ন (করোনায় স্থগিত) নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আতিকুর রহমান মাদবর ও মনোয়ার হোসেন বেপারীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৯৬ জনকে আসামি করে শিবচর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ সোমবার ভোররাতে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল বেপারীসহ ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা এক জায়গায় বসে বৈঠক করছিল বলে পুলিশ জানায়। এর আগে ঘটনার পর ওইদিন রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন বেপারীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উল্লেখ্য, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শিবচর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মাদবর ও সাবেক চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন বেপারীর মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। করোনা সংক্রমণের কারণে স্থগিত হওয়া ইউপি নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে আতিকুর রহমান মাদবর ও মনোয়ার হোসেন বেপারী দু’জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। শনিবার সন্ধ্যায় ওই ইউনিয়নের আকনকান্দি গ্রামের একটি রাস্তায় আতিক মাদবরের সমর্থক মিরাজ আকন ও মনোয়ার বেপারীর সমর্থক তুষার বেপারীর সঙ্গে ইউপি নির্বাচন নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায় তুষার বেপারী মিরাজ আকনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে চলে যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সংঘর্ষ। রাত ৮টার দিকে কুতুবপুর বাজারের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মনোয়ার বেপারীর সমর্থক সাবেক ইউপি সদস্য আঃ সালাম মাদবরকে (৬৫) তার দোকানে ঢুকে আতিক মাদবরের সমর্থক কাউসার বেপারীসহ কয়েকজন মিলে মারধর করে। এরই জের ধরে সাহেব বাজার মনোয়ার বেপারীর বাড়ি সংলগ্ন আতিক মাদবরের সমর্থক দুলাল বেপারীর একটি মার্কেটে মনোয়ার বেপারীর ছোট ভাই মানজার বেপারীর নেতৃত্বে ভাংচুর চালানো হয়। এ সময় দুলাল বেপারীসহ আতিক মাদবরের সমর্থকরা মার্কেটের সামনে জড়ো হয়। এ সময় নিজ বাড়ির ছাদ থেকে তাদের লক্ষ্য করে মানজার বেপারীর নেতৃত্বে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে মাহবুবুর রহমান (৩৮), এস্কান বেপারী (৪০), কাউসার বেপারী (৩৭), আঃ রাজ্জাক মাদবর (৬৫), ওবায়দুল বেপারীসহ ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে আরও ১৩ জন আহত হয়। পুলিশ এ ঘটনায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোয়ার হোসেন বেপারী, শাহাদাৎ বেপারী, কাদির বেপারী, আলমগীর বেপারীসহ ৭ জনকে আটক করে। শিবচর থানার ওসি (তদন্ত) আমির হোসেন বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। সোমবার সকালে দুলাল বেপারীসহ ৩২ জন এক জায়গায় বসে বৈঠক করছিল। এ সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দুটি মামলায় এ পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
×