ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় কাজ হারিয়ে শতশত ইটভাটার শ্রমিক গ্রামে ফিরে এসেছে

প্রকাশিত: ১৬:২৮, ১৭ মে ২০২১

করোনায় কাজ হারিয়ে শতশত ইটভাটার শ্রমিক গ্রামে ফিরে এসেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ করোনা পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়ে নিরুপায় হয়ে গ্রামের বাড়ি ফিরে এসেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের শতাধিক টেলা গাড়ি চালক ইট ভাটার শ্রমিক। তারা তাদের আয়ের একমাত্র উৎস ঠেঁলাগাড়ি ট্রাক্টরে চাপিয়ে সাথে নিয়ে এসেছে। তাদের ঘরে ঈদের কোন আনন্দ নেই। কাজ হারিয়ে বিষন্ন মনে পরিবারের সাথে ঈদ করতে হয়েছে। গ্রামে ফিরে এসে কি কওে জীবিকা নির্বাহ করবে এই চিন্তায় মহাবিপাকে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ গুলো। আগামী দিন গুলোতে কিভাবে পরিবার পরিজন স্ত্রী, সন্তান ও স্বজনদের মুখে দুই বেলা খাবার তুলে দিবে। এই চিন্তায় পরিবারের সাথে থেকেও ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণিত হয়েছে। জেলার তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজন পাড়ের শতাধিক ইটের ভাটার ইউ পরিবহন শ্রমিকের। গ্রামের ফিরে এসে দেখেন তাদের মত অনেক শ্রমজীবি মনারী পুরুষ দেশের বিভিন্ন শহরে নানা পেশায় শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে করোনায় কাজ হারিয়ে শহরে টিকতে না পেরে গ্রামে ফিরে এসেছে। তিস্তা , ধরলা ও সানিয়াজনের গ্রাম গুলোতে বিগত দিনে দেখা যেত ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লা, বগুড়াসহ নানা প্রান্তর হতে শতশত শ্রমিক বড়বড় কোর্চ গুলি ভাড়া করে বাড়ি আসত। ২/৩ দিন পর্যন্ত কোর্চ গুলো অবস্থান করত। পরে পূনরায়কোর্চে চেপে কাজে ফিরে যেত। এ বছর সেই দৃশ্য ছিলনা। করোনাকালীণ সময়ে সকল ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। তাই এবারে বাসে আসতে পারেনি। এবারে বেশিভাগ শ্রমিক একে বারে কাজ হায়িয়ে চলে এসেছে। করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন কলকারখানা বন্ধ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে কিছু কলকারখানা ও গামেন্টর্স ফ্যাক্টরি চালু ছিল। ঈদের পরে সে গুলোও প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। তাই স্থায়ীভাবে কাজ হারিয়ে তারা গ্রামে ফিরে আসছে। এবারে শ্রমিকদের মধ্যে বিশেষ নজর কেড়েছে ইটভাটার শ্রমিকগণ। জেলা সদরের কুলাঘাট ইউনিয়নের স্টিল ব্রিজ সংলগ্ন চরখাটামারা, শিবেরকুটির গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন জেলার ইটভাটায় কাজ কওে এমন শ্রমিকগণ কাজ হারিয়ে ফিরে এসেছে। এদেও সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। শিবের কুটি গ্রামের আব্দার আলী (৪৬) জানান, তাঁর গ্রামে কমপক্ষে ৫০ জন বগুড়ায় ইট ভাটায় ইট তৈরি, পরিবহনসহ নানা শ্রমের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। এই কাজ করে তাদের সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে ছিল। কিন্তু করোনায় ইউভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ইটের ভাটায় কাজ নেই। তাই বাড়ি ফিওে আসতে হয়েছে। প্রতিবছর ঈদে বাড়ি আসি ২/৩ দিন পর ফিরে যাই। এবার ঈদ করতে এসেছি কিন্তু ভাটায় ফিরে যাওয়া হবেনা। ভাটা মালিক ইটের ভাটা বন্ধ করে দিয়েছে। ইটভাটায় কাজ নেই। তাই ইটেরভাটার কাজে ব্যবহ্নিত ঠেঁলাগাড়ি সাথে করে নিয়ে এসেছি। ওখানে কার জিম্মায় ঠেঁলা রাখব। আর ফিরে যাওয়া যেখানে অনিশ্চিত। কাজ হারিয়ে এখন কি করে খাব। সেই চিন্তায় পড়ে গেছি। গ্রামে তো কৃষি কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজ নেই। কৃষি শ্রমিকের কাজের তুলনায় এখন কৃষি শ্রমিক অনেক বেশি হয়ে গেছে।
×