ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের উত্তরপ্রদেশে এবার গঙ্গার তীরে মিলল বালিতে পোঁতা লাশ

প্রকাশিত: ১৪:৩৫, ১৩ মে ২০২১

ভারতের উত্তরপ্রদেশে এবার গঙ্গার তীরে মিলল বালিতে পোঁতা লাশ

অনলাইন ডেস্ক ॥ বিহার ও উত্তর প্রদেশে গঙ্গা নদীতে কয়েক ডজন লাশ ভেসে আসার পর এবার নদীটির ধারে অন্তত দুটি স্থানে বালিতে পোঁতা একাধিক মৃতদেহ মিলেছে বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো। যে দুটি স্থানে এ মৃতদেহগুলো পাওয়া গেছে, সেই স্থান দুটি উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে উন্নাও জেলার মধ্যে পড়েছে। মোবাইল ফোনে তোলা ছবি ও ভিডিওতে দুই স্থানেই একাধিক পোতাঁ লাশ ও স্থানীয়দের ভিড় দেখা গেছে; বেশিরভাগ মৃতদেহের গায়ে জড়ানো ছিল গেরুয়া কাপড়। উন্নাওয়ের এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যে দুটি স্থানে বালিতে পোঁতা লাশ মিলেছে তার অন্তত একটিকে উন্নাওসহ তিন জেলার বাসিন্দারা শ্মশান হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন। যে মৃতদেহগুলো মিলেছে, সেগুলো কোভিড রোগীর কিনা তা নিশ্চিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। “কেউ কেউ মৃতদেহ না পুড়িয়ে নদীর ধারে বালিতে কবর দেয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছি। আমি তাদেরকে এ বিষয়ে তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও বলেছি,” বিবৃতিতে বলেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্র কুমার। উদ্ধার মৃতদেহগুলো কোভিড রোগীর কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সরকারি এ কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে লাশগুলো করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের- এমন ইঙ্গিত নেই। এনডিটিভি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে একদল কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে যে দুটি স্থানে মৃতদেহগুলো পাওয়া গেছে, সেসব স্থানে আরও গভীর গর্ত খুঁড়ে লাশগুলোকে সমাহিত করেছেন। পোড়ানোর কাঠের অভাবে এ মৃতদেহগুলো বালিতে পুঁতে ফেলা হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। চলতি সপ্তাহে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে গঙ্গায় ভেসে আসা ৭০ এরও বেশি মৃতদেহের দেখা মিলেছে। মঙ্গলবারও উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে নদীতে ভেসে আসা লাশ পাওয়া গেছে। “খবর পেয়েছি। আমাদের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন, তদন্ত চলছে। লাশগুলো কোথা থেকে আসছে তা বের করার চেষ্টা করছি,” সেদিন গাজিপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এমপি সিং এমনটাই বলেছিলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই। পোড়ানোর কাঠের অভাব, লাশগুলোকে ভাসিয়ে দেওয়ার একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। সরকারি তালিকায় স্থান না দেওয়া কোভিড-১৯ এ মৃতদের লাশ এভাবে ভাসিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও কারও কারও অনুমান। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃত্যু হু হু করে বাড়তে দেখা যাচ্ছে; মৃতদের সৎকারে অনেক এলাকার শ্মশান কুলিয়ে উঠতে পারছে না বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। সরকারি হিসাবে মহামারী শুরুর পর থেকে ভারতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৩৭ লাখের বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু পেরিয়েছে আড়াই লাখ। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এ হিসাবে আস্থা রাখতে পারছেন না। তাদের ধারণা, ভারতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা সরকারি তথ্যের ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি; কর্তৃপক্ষ যা বলছে, মৃত্যুও তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি।
×