ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাত পোহালেই ঈদ ॥ শিমুলিয়ায় ঈদযাত্রার শেষ দিনে চলছে ১৬ ফেরী

প্রকাশিত: ১৩:২১, ১৩ মে ২০২১

রাত পোহালেই ঈদ ॥ শিমুলিয়ায় ঈদযাত্রার শেষ দিনে চলছে ১৬ ফেরী

সংবাদদাতা, মুন্সীগঞ্জ ॥ শুক্রবার ঈদ শুধু রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে কেন্দ্র করে ১৩ মে বৃহস্পতিবার শেষ দিনেও দক্ষিণবঙ্গের ২১জেলার মানুষের ভীর অব্যাহত রয়েছে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলা সংলগ্ন শিমুলিয়া ঘাটে। লকডাউনে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ভোর থেকেই হাজার হাজার যাত্রী ঘাটে এসে জড়ো হচ্ছেন। আজ থেকে পরিবহন পারাপারের ঘোষণায় বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা। তবে শিমুলিয়া ঘাটের প্রবেশমুখের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্টের পাশাপাশি ঘাটে শৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। পাশাপাশি কাজ করছে বিজিবি। অন্যান্য দিনের ন্যায় আজও ঢাকা থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আর কঠোর ভোগান্তি পেরিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে আসছেন যাত্রীরা। পুরান ঢাকার নয়াবাজারস্থ বাবুবাজার ব্রিজের সামনে থেকে শিমুলিয়া ঘাট ৩৬ কিলোমিটার সিটিং সার্ভিস গাড়িতে আসতাম ৬০ কখনো ৭০টাকা ভাড়া দিয়ে। কাজ কাম নাই আগের মত টাকা ও ইনকাম নাই কিন্তু শিমুলিয়া ঘাটে আজকা আইলাম ৯০০ শত টাকা খরচ কইরা। আবার কয়েক কিলোমিটার পায়ে হাঁটলাম ৩-৪ বার গাড়ি চেঞ্জ করতে লাগছে। বাবু বাজার ব্রিজের নিচ থেকে পায়ে হেটে ব্রিজের মাঝ বরাবর সিড়ির সামনে থেকে ভ্যানে উঠে ব্রিজ পার হয়ে কদমতলী মোড় সেখানে নেমে অটোরিক্সায় ঝিলমিল প্রজেক্টের সামনে তারপর অটোরিক্সায় আব্দুল্লাহপুর সেখান থেকে ভ্যানে ধলেশ^রী সেতুর সামনে নেমে চেকপোষ্ট পার হয়ে হেঁটে ব্রিজের উপর তারপর অটোরিক্সায় সিরাজদিখান থানার নিমতলী। সেখান থেকে পুলিশি চেকের পর পায়ে হেটে কিছু দূর প্রচন্ড রোদের মধ্যে হেটে অটোরিক্সা নিয়ে বেজগাঁও হয়ে মাওয়া পুরান ঘাটের ১ কিলোমিটার উত্তরে নেমে আবার পায়ে হাটা শুরু পুলিশ, বিজিবি, সাংবাদিক আরো কত মানুষের প্রশ্ন শেষে শিমুলিয়া ঘাট। আমাগো দুঃখ-কষ্ট কেউ দেখে না। আমি একজন ছোট কাপড় ব্যবসায়ী, করোনায় আমাগো ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক ক্ষতি হইছে। কই তখন কেউ সাহায্য করলো না! এখন মা-বউ, বাপ-ভাইয়ের সাথে ঈদ করতে যামু, এইখানেই যত নিয়ম। এত নিয়মে আমাদের ভোগান্তি বাড়ছে, আমাগো বেশি ভাড়া দিয়ে আসতে হলো।’ সদরঘাটের কাপড় ব্যবসায়অ কর্মস্থল থেকে শরীয়তপুরে বাড়ি যেতে শিমুলিয়া ঘাটে আসার পথে ভোগান্তি আর বেশি ভাড়ার দেয়ার কথা এভাবেই জানাচ্ছিলেন আঃ জলিল নামের এক যাত্রী। শুধু জলিল নন, ১৩ মে বৃহস্পতিবার শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রায় সবারই ছিল একই রকমে কথা। লকডাউন নিজ নিজ অবস্থানে থাকার নির্দেশনা থাকলেও পরিবারের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ির পথে মাইলের পর মাইল হেঁটে আর পরিবহনে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে প্রায় সবাইকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন সিএনজি, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক বলেন, ‘ঈদের আগে ভাড়া বেশিই। আমরা তো রিস্ক (ঝুঁকি) নিয়া আসি। অনেক রাস্তা ঘুরে আসতে হয়। পুলিশ আটকাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইসা থাকা লাগে। কষ্ট করে গাড়ি চালাই, কয়েকটা টাকা কামানোর জন্যইতো।’ আজ থেকে যাত্রী আর যানবাহন পারাপারে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বর্তমানে ১৬টি ফেরি সচল রয়েছে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার ঘাটে প্রবেশের সবগুলো পথেই প্রচন্ড ভির লক্ষ্য করা যায়। গত কয়েকদিনের চেয়ে ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি ফেরিতেই যাত্রী-যানবাহনকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে উঠানো হচ্ছে। এতে পন্টুনে জটলা ও ভোগান্তি কমে এসেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ জানান, শিমুলিয়ার তিনটি ফেরিঘাটই সচল রয়েছে। নৌরুটে বর্তমানে ডাম্প, রোরো ও মাঝারি আকৃতির ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ হিলাল আহমেদ জানান, ঘাট এলাকায় আগের মত চাপ নেই। যাত্রী চলাচল ও ঘাট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
×