জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতে উর্ধমুখী করোনা সংক্রমণের মধ্যেই এবার এলো একটি ইতিবাচক খবর। ঘরের তাপমাত্রায় রাখা যায় এমন কোভিড টিকা তৈরি করেছে দেশটি। বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এ কাজে পুরোপুরি সফল হলে কমে আসবে পরিবহন জটিলতা। টিকা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সহজে পৌঁছে দেয়া যাবে। মহামারীর শুরু থেকেই কার্যকর কোভিড টিকা নিয়েছিল আলোচনা। টিকা আসার পর তা সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়া নিয়ে শুরু হয় নতুন করে কথাবার্তা। কারণ টিকা ভাল রাখতে চাই নির্দিষ্ট তাপমাত্রা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে রেকর্ড প্রায় চার হাজার জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা। খবর ওয়েবসাইটের। এখন পর্যন্ত ব্রিটেনের এ্যাস্ট্রাজেনেকা, রাশিয়া ও চীনা ভ্যাকসিনই সাধারণ ফ্রিজের তাপমাত্রায় রাখলে ভাল থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের টিকাগুলো ভাল রাখতে দরকার উচ্চ শীতল পরিবেশ। এ অবস্থায় একেবারেই সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা যায়, এমন টিকা নিয়ে গবেষণা করছে ভারত। এসেছে সাফল্যও। ঘরের তাপমাত্রাতেও অনায়াসে রেখে দেয়া যায়, এমন কোভিড টিকা বানাচ্ছে বেঙ্গালুুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি)। আর এতেই আশার আলো দেখছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এটি সফল হলে গ্রামেগঞ্জে তা ছড়িয়ে দেয়া আরও সহজ হবে। সাধারণ ফার্মেসির দোকান পর্যন্ত চলে যাবে টিকা। আইআইএসসির টিকা প্রকল্প প্রধান অধ্যাপক রাঘবন বরদারাজন বলেন, ইঁদুর ও গিনিপিগের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, আমাদের বানানো টিকা দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধী ব্যবস্থায় প্রচুর পরিমাণে এ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারছে এবং তা খুব অল্প সময়ে। তিনি আরও বলেন, সেই এ্যান্টিবডিগুলো ইঁদুর ও গিনিপিগের দেহে ঢুকে পড়া সার্স-কভ-২ ভাইরাসকে অনায়াসেই অকেজো, নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারছে। ভাইরাস কোষে ঢুকে আর বংশবৃদ্ধি ঘটাতে পারছে না। ফলে সংক্রমণও হচ্ছে না। ভারতে একটি ঘরে, স্বাভাবিক তাপমাত্রা গড়ে ২১ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। তাই এই টিকা সংরক্ষণ খুবই সহজ হবে। এদিকে শনাক্ত রোগী সংখ্যায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতে এবার কোভিড-১৯ একদিনে প্রায় চার হাজার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। মহামারী শুরুর পর থেকে দেশটিতে আর কখনোই ২৪ ঘণ্টায় এত রোগীর মৃত্যু হয়নি। বুধবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একদিনে তিন লাখ ৮২ হাজারের বেশি রোগী শনাক্তেরও খবর দিয়েছে। এ সংখ্যা আগের দুইদিনের চেয়ে বেশি। শনিবার দেশটি একদিনে ৪ লাখের বেশি রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। পরেরদিন ওই সংখ্যা তিন লাখ ৯২ হাজার ৪৮৮ জনে নামে; সোম ও মঙ্গলে দৈনিক শনাক্ত ধারাবাহিকভাবে কমতে দেখে ‘সংক্রমণ কমছে’ বলে কর্মকর্তারা স্বস্তিও প্রকাশ করেছিলেন। বুধবারের সংখ্যা তাদের উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয়ার কথা। সব মিলিয়ে কোভিড-১৯ এ দেশটিতে এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে দুই কোটি ৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৪৮ জন; সরকারী হিসাবে ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার ১৮৮ জনের। বিশ্বজুড়ে গত এক সপ্তাহে যত রোগী শনাক্ত হয়েছে, তার ৪৬ শতাংশই ভারতে মিলেছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
