ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে ২০ টাকার ‘ডাব’ ১২০ টাকায় বিক্রি

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ৫ মে ২০২১

বরিশালে ২০ টাকার ‘ডাব’ ১২০ টাকায় বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ তীব্র গরমে ও চলতি রমজানে প্রতিদিনের ইফতারে অনেকেই ডাবের পানি রাখায় বরিশালের সর্বত্র বেড়েছে ডাবের চাহিদা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে অসাধু ডাব ব্যবসায়ীরা। গৃহস্থের কাছ থেকে মাত্র ২০ টাকায় কেনা ডাব বরিশালের খুচরা বাজারে আকার ভেদে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকার মৃধারহাটের বাসিন্দা ফিরোজ হাওলাদার বহু বছর ধরে গাছের ডাব বিক্রি করছেন পাইকারদের কাছে। এবছরও তার গাছের ৯৮ জোড়া (১৯৬ পিস) ডাব কিনে নিয়েছেন পাইকাররা। আকার ভেদে প্রতি পিস ডাবের দাম পরেছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বাবুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব রহমতপুর গ্রামের বাসিন্দা নারিকেল চাষী গৌতম পালের রয়েছে ৭৫টি নারিকেল গাছ। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তিনি ২০ টাকা পিস হিসেবে ডাব বিক্রি করেছেন। একাধিক পাইকাররা জানিয়েছেন, সব খরচ শেষে আমরা খুচরা বিক্রেতাদের কাছে একেকটি ডাব সর্বোচ্চ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। সেটা কি করে এক থেকে ১২০ টাকা হয়ে যায় তা তারাই (খুচরা বিক্রেতা) ভালো বলতে পারবেন। বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুরের বাসিন্দা ডাবের পাইকার হারুন-অর রশিদ এবং সালাম ফকির বলেন, ২০ টাকা দরে প্রতি পিস ডাব কিনলেও তা গাছ থেকে সংগ্রহ এবং প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে মোকাম পর্যন্ত আনতে ঘাটে ঘাটে টাকা খরচ হয়। একজন গাছি (গাছে উঠে ডাব কাটার শ্রমিক) প্রতিবার গাছে উঠতে ৫০ টাকা করে নেয়। তাছাড়া ভ্যান কিংবা ট্রাকে করে সেই ডাব বরিশালসহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠাতেও অনেক খরচ হয়। সবমিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে পাঁচ থেকে সাত টাকা লাভ ধরে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হয়। এতে ডাব প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকার বেশি দাম পরেনা। পাইকারদের কাছ থেকে এই দামে সংগ্রহ করা ডাব সাধারণ মানুষের কাছে ১২০ টাকায় বিক্রি করে খুচরা বিক্রেতারা। নগরীর বিবিরপুকুর পাড় এলাকার ডাব বিক্রেতা সিরাজ বেপারী বলেন, পাইকারদের কাছ থেকে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে প্রতি পিস ডাব ক্রয় করা হয়েছে। এরপর পরিবহন খরচ রয়েছে। সবমিলিয়ে ১২০ টাকা করে প্রতি পিস ডাব বিক্রি না করলে পোষায় না। সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা শাখার সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, তরমুজের পর এবার ডাব। পাইকারি দরের চেয়ে অনেক বেশি দামে এই দুটি পণ্যই বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। দুটি ক্ষেত্রেই একটি বিষয় লক্ষনীয় যে, এখানে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে তারা। সেই সাথে গড়ে তুলেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এখনই এই সিন্ডিকেট ভেঙ্গে না দিলে আগামী দিনগুলোর জন্য এরা ভয়ঙ্কর হবে। এ ব্যাপারে বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, বাজার দর নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনাসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে পুরো জেলাজুড়ে তরমুজের বাজারে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানোর পর বর্তমানে দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন থেকে ডাবসহ অন্যান্য মৌসুমী ফলের ক্ষেত্রেও একইভাবে অভিযান চালানো হবে।
×