ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিসভায়ও মমতার চমক!

প্রকাশিত: ২৩:৫৪, ৫ মে ২০২১

মন্ত্রিসভায়ও মমতার চমক!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জী। জয়ের পর একাধিক তৃণমূল সূত্র মনে করছে, নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের মতো মন্ত্রিসভা গঠনের বড়সড় চমক দিতে যাচ্ছেন মমতা। এবারের মন্ত্রিসভায় বহু নয়া মুখ আসতে পারে। সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্বও বাড়তে পারে। মন্ত্রী বাছাইয়ে তারুণ্য ও যোগ্যতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে। ভোটে জিতলেও আগের বেশ কয়েক জন মন্ত্রী বাদ পড়তে পারেন। তবে এবারের নির্বাচনে তৃণমূলের বিশাল জয়ের পেছনে মুসলিম ভোট বড় ভূমিকা রেখেছে বলে দেশটির একাধিক গণমাধ্যমের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে। খবর আনন্দবাজার, মুসলিম মিরর, এনডিটিভি ও অন্যান্য ওয়েবসাইটের। এবারের নির্বাচনে বিধানসভার আসনগুলোর মধ্যে ৬৩ আসনে প্রাধান্য ছিল মুসলিম ভোটের। এর মধ্যে ৬১ আসনে নির্বাচন হয়েছে। প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে দুটি আসনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। ৬১ আসনের মধ্যে মমতার তৃণমূল পেয়েছে ৫৮, বিজেপি দুটি ও একটি আসন পেয়েছে সংযুক্ত মোর্চা। পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোটারদের প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর বেশির ভাগই চারটি জেলায়। এগুলো হলো মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। মুর্শিদাবাদে রয়েছে ১৬ আসন। বাকি তিনটি জেলার প্রত্যেকটিতে আছে ৯টি করে আসন। বিজেপি মুসলিম প্রাধান্যপূর্ণ আসনগুলোর মধ্যে মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছে। এ দুটির একটি হলো উত্তর দিনাজপুর, অপরটি হলো মুর্শিদাবাদে। আর সংযুক্ত মোর্চার ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট জিতেছে একটি আসনে। রাজ্যের ২৯৪ আসনের মধ্যে ৭৪টিতে সংখ্যালঘু ভোটার ৪০ শতাংশ বা তার বেশি। ওই সব কেন্দ্রের বেশির ভাগেই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। এদিকে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর পশ্চিমবঙ্গ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। গত দুই দিনে সেখানে সংঘর্ষে ১৪ জন রাজনৈতিক কর্মী নিহত হয়েছেন। অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। এ পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জী। নিহতদের মধ্যে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের লোক রয়েছে। রাজ্যে সহিংসতার জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছেন মমতা। অন্যদিকে রক্তপাতের জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে বুধবার মমতার শপথের দিন পশ্চিমবঙ্গে ধিক্কার দিবস এবং দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিজেপি। ধিক্কার দিবসের কর্মসূচীতে যোগদান এবং আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের কাছ থেকে প্রতিবেদন চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা ঝড়ের কাছে ‘মোদি ম্যাজিক’ পরাজিত হয়। দেশটির কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বাঘা বাঘা নেতা পশ্চিমবঙ্গ চষে বেড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতার কার্ড খেলতে চেয়েছিলেন। তবে বিজেপির সাম্প্রদায়িকতার ওই টোপ গেলেনি পশ্চিমবঙ্গবাসী। গেরুয়া শিবিরের ‘পদ্মফুলের’ পরিবর্তে মমতার ঘাসফুলেই আস্থা রেখেছে তারা। প্রথম দফায় গত ২৭ মার্চ ৩০, দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল ৩০, তৃতীয় দফায় ৬ এপ্রিল ৩১, চতুর্থ দফায় ১০ এপ্রিল ৪৪, পঞ্চম দফায় ১৭ এপ্রিল ৪৫, ষষ্ঠ দফায় ২২ এপ্রিল ৪৩ ও সপ্তম দফায় ২৬ এপ্রিল ৩৪ আসনে ভোট নেয়া হয়। তবে দুই প্রার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় সপ্তম দফায় ৩৬ আসনের পরিবর্তে ৩৪ আসনে ভোট নেয়া হয়।
×