ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

করোনা আতঙ্ক তুচ্ছ করে শপিংয়ে ছুটছে লোকজন

প্রকাশিত: ২৩:৩৩, ৫ মে ২০২১

করোনা আতঙ্ক তুচ্ছ করে শপিংয়ে ছুটছে লোকজন

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ করোনাভাইরাসের আতঙ্ক কাজ করছে না চট্টগ্রামে। আতঙ্ককে তুচ্ছ করে মানুষ ছুটছে শপিংয়ে। মার্কেট খোলার অপেক্ষায় অনেকেই ঘুরছে বন্ধ মার্কেটের দ্বারে দ্বারে। চট্টগ্রামে দেড় শতাধিক শপিংমলের মধ্যে বেশিরভাগই খুলেছে আধো আধোভাবে। মার্কেটের সম্মুখভাগে সিকিউরিটি কর্মীদের দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ব্যবসায়ী সমিতির লোকজন। মাস্ক মার্কেটে আগত পুরুষদের পকেটে আর মহিলাদের হাতব্যাগে। আবার অনেকে বলছে প্রতিনিয়ত মাস্ক ব্যবহারে দম বন্ধ হয়ে আসছে। তাই প্রয়োজন হলে কিনে নেবে। অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপাচাপি থাকলে মাস্ক কিনতে বাধ্য হবে আগতরা-এমন উক্তি অনেকটা মাননসই হয়ে গেছে মার্কেটগুলোতে। চট্টগ্রামে কাপড়ের মজুদাগার হিসেবে খ্যাত টেরিবাজার। শপিংমলগুলো থানকাপড়ের জন্য টেরিবাজার নির্ভরশীল। গত কয়েক বছর ধরে রেডিমেড কাপড়ও মিলছে কাপড়পট্টি নামে খ্যাত এই টেরিবাজারে। শুধু টেরিবাজারই নয়, চট্টগ্রামের আরেকটি প্রাচীন বাজার হিসেবে খ্যাত রিয়াজুদ্দিন বাজার। সেখানেও ঠাসাঠাসি ক্রেতার। থামানো যাচ্ছে না গা ঘেঁষে চলা। কে কাকে ধাক্কা দিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করবে যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। বিষয়টি নাজুক হলেও মানছে না কেউই। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক মোটেও কাজ করছে না প্রথম ঢেউটি স্বাভাবিক থাকায়। সরকার এ নিয়ে চারদফায় লকডাউন ঘোষণা দিয়ে মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে বাধ্য হয়েছে। লকডাউনে এখন শুধু বন্ধ আছে সরকারী অফিস, আদালত আর বেসরকারী অফিসগুলো। নয়ত সবকিছুই খোলা। রাস্তায় গাড়ির জ্যাম। রিক্সা যেন পুরো রাস্তাই দখল করে নিয়েছে। প্রাইভেট কার আর মোটরসাইকেল চলছে রিক্সার ফাঁকে ফাঁকে। তবে সরকার পরিবহন সেক্টরে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পেরেছে পাবলিক পরিবহন বন্ধ রেখে। অন্যথায় সবকিছুই স্বাভাবিক থাকত। রাস্তায় নামলেই মিলছে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল। নগরীর লালদীঘিরপাড়সহ বিভিন্ন স্পটে ভাড়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেট কার আর মাইক্রোগুলোও নেই। সব ভাড়ায় ব্যস্ত। ব্যক্তিগত প্রাইভেট গাড়িগুলো কোন না কোন শপিংমলের পার্কিংয়ে অথবা বাজারের পার্কিংয়ে কিছু সময়ের জন্য অলস সময় কাটাচ্ছে। কারণ, মালিক শপিং করতে গাড়িটি ব্যবহার করছে। সোমবার বিকেলে নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম কাপড়পট্টি হিসেবে খ্যাত টেরিবাজার গিয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেকটি গলিতেই ক্রেতার ভিড়। ২০২০ সালের রমজানের ঈদের কেনাকাটা ক্রেতারা করতে পারেনি শুধুমাত্র করোনাভাইরাসের আতঙ্কে আর সরকারের লকডাউনের প্রতিবন্ধকতায়। কিন্তু এবার লকডাউন যে কারণে ব্যবহার করা হয়েছে তা শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ী আর ভোক্তার চাপের মুখে শিথিল করায় মার্কেটগুলোতে থৈ থৈ ক্রেতারা। নো মাস্ক নো সার্ভিস-বুলিতেই শেষ হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেমন এ বিষয়ে তৎপর নয়, তেমনি মার্কেটের পক্ষ থেকে সিকিউরিটি হিসেবে দাঁড় করানো মানুষগুলোও অনীহা প্রকাশ করছে। কারণ, আগতরা মানতে নারাজ স্বাস্থ্যবিধি। শিশুদের মুখেও যেমন মাস্ক দেখা যাচ্ছে না, তেমনি আবালবৃদ্ধবনিতারাও মাস্ককে অসহ্য যন্ত্রণা মনে করছে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। চট্টগ্রামের শপিংমলগুলো মোটামুটি জমে উঠেছে ঈদ বাজারে। যেন গত বছরের বকেয়া কেনাকাটাটাও এ বছর সেরে নিচ্ছে। অনেকেই দুই ঈদের বাজার একসঙ্গে চালাচ্ছে এমনও মন্তব্য উঠে আসছে দোকানিদের কাছ থেকে।
×