ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাবি উপাচার্যকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৫ মে ২০২১

রাবি উপাচার্যকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ফোন

রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ সিন্ডিকেটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৫০ জনকে নিয়োগ দিতে চলেছেন। গত কয়েকদিন ধরে এমন গুঞ্জন চলছিল বিশ্ববিদ্যালয় মহলে। এই উদ্দেশ্যে গত সোমবার দিবাগত রাতে উপাচার্য জামাতা সিনেট ভবনের তালা ভেঙ্গে গোপন নথি নিয়ে যান বলেও অভিযোগ ওঠে। এদিকে নিয়োগ বন্ধে মঙ্গলবার সকালে উপাচার্য বাসভবনের সামনে সিন্ডিকেট স্থগিতের দাবিতে অবস্থান নেয় দুর্নীতি বিরোধী আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা। এই পরিস্থিতিতে নিয়োগ সংক্রান্ত গুঞ্জন সম্পর্কে জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে উপাচার্যকে ফোন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার আব্দুস সালামসহ একাধিক সূত্র এটি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ফোন ও শিক্ষকদের বাধার মুখে সিন্ডিকেট সভা বাতিল করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম বলেন, তারা (শিক্ষকরা) গুজবে নিমজ্জিত হয়েছে। কেন এই গুজব হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে অনুমোদনক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে। কোন এ্যাপয়েন্ট হবার সুযোগ নেই, দেয়ারও সুযোগ নেই। আজকে শেষ পর্যন্ত এই গুজবগুলোর জন্য প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে ভাইস চ্যান্সেলরকে জানতে চাওয়া হচ্ছে কি ব্যাপার, এসব গুজব হচ্ছে কেন? এটা একটা নিছক গুজব। সরকারের আদেশ অমান্য করা দ-নীয় অপরাধ। এদিকে অবৈধ নিয়োগের আশঙ্কায় মঙ্গলবার সকালে সিন্ডিকেট স্থগিতের জন্য আওয়ামীপন্থী দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা উপাচার্য বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে তাদের ওপর ধাক্কাধাক্কি করে চাকরি প্রত্যাশীরা। এতে প্রক্টরসহ একাধিক শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এই সময় আকাশ নামের বহিরাগত এক ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে গুলি করে মারার হুমকি দেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি জানান, হুমকিদাতা আকাশ রাবি ছাত্রলীগের কেউ নয়, সে স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি প্রত্যাশী। পরে বেলা ১১টার দিকে সিন্ডিকেট সভা বাতিল করতে প্রশাসন বাধ্য হয়। এ সময় মতিহার থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা সেখানে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে এবং উপাচার্য জামাতার নথি ‘চুরি’র অভিযোগের বিষয় জানিয়ে শাস্তি দাবি করা হয়। শিক্ষকরা জানান, সোমবার গভীর রাতে উপাচার্য জামাতা ও আইবিএ শিক্ষক এটিএম শাহেদ পারভেজ বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে সিনেট ভবনের তালা ভেঙ্গে নিয়োগ সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গোপননথি সরায় যা গুরুতর অপরাধ। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক শাহেদ পারভেজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমি পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি সোমবার গভীর রাতে বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সিনেট ভবনের তালা ভেঙ্গে সেখান থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসে।
×