ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লকডাউনের সুযোগে সীতাকুণ্ডে সরকারী প্রাইমারী স্কুল দখল

প্রকাশিত: ২১:০৮, ৫ মে ২০২১

লকডাউনের সুযোগে সীতাকুণ্ডে সরকারী প্রাইমারী স্কুল দখল

নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকু-, চট্টগ্রাম, ৪ মে ॥ চট্টগ্রামের সীতাকু-ে চলমান লকডাউনকে পুঁজি করে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দখলের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দখলকারীরা স্কুলের ব্যবহৃত কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ১০০ জোড়া হাই বেঞ্চ, চেয়ার ৫টি, টেবিল ৫টি, পানির কল লুট ও একটি টিনশেড স্কুল ভবন ভেঙ্গে দখল করে ফেলে। বিষয়টি জানার পর সোমবার সকালে স্কুল সংশ্লিষ্টরা সীতাকু- মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। জানা যায়, ১৯৩৫ সালে জৈনকা সুভাষিণী দত্ত (তখনকার) অজপাড়াগাঁয় শিক্ষার আলো ছড়াতে নিজেই শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে সীতাকু- পৌরসদর ৪নং ওয়ার্ড কলেজ রোডের উত্তর পাশে দত্ত বাড়ি নামে নামকরণ করে বেসরকারীভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল চালু করেন। স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালে জাতীয়করণের মধ্য দিয়ে স্কুলটি সরকারীকরণ করা হয়। এরপর থেকে স্কুলটি আজ পর্যন্ত উপজেলায় ও জেলা পর্যায়ে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে আসছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় এখনও অব্যাহত রয়েছে। স্কুলটিতে শিশু শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত মোট ৭৪৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় দখলদার চঞ্চল দত্ত গং সরকার ঘোষিত লকডাউন ও স্কুল ছুটিকে পুঁজি করে শনিবার ও রবিবার রাতের যে কোন সময় বি.এস খতিয়ানভুক্ত স্কুলের একটি টিনশেডের ঘর দখল করে এবং সরকারী সম্পত্তি স্কুলের ১০০ জোড়া হাই বেঞ্চ, ৫টি চেয়ার, ৫টি টেবিল ও একটি কল লুট করে নিয়ে যায়। সোমবার স্কুল সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি অবগত হয়ে সীতাকু- মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পরবর্তী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে অভিযুক্ত কাউকে আটক করেনি। দখল বিষয়ে জানতে চাইলে দখলকারীদের একজন তৃপ্তি দত্ত বলেন, ‘আপনি ফোনে কথা না বলে বাসায় আসেন, এভাবে ফোনে বক্তব্য দেয়া যায় না। আর এই জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। মামলাধীন বিষয় নিয়ে কোন মন্তব্য করা সমুচিন নয়।’ দখলের বিষয়ে স্কুলটি প্রধান শিক্ষক তৃপ্তি রানী ধর বলেন, ‘লকডাউন ও স্কুল ছুটিকে পুঁজি করে দখলদার চঞ্চল দত্ত, মদন কুমার দত্তের পুত্র পুলক দত্ত ও পুত্রবধূ তৃপ্তি দত্ত রাতের আঁধারে স্কুলের মূল ফটক পরিবর্তন করে নিজস্ব একটি গেট নির্মাণ করেন। গেটের ভেতরে কৌশলে রাতে লোকজন নিয়ে স্কুলের নামে বিএস খতিয়ানভুক্ত একটি টিনশেডের ঘর দখল পরবর্তী মালামাল নিয়ে যান। একইভাবে সরকারী সম্পত্তি স্কুলের ১০০ জোড়া বেঞ্চ, ৫টি চেয়ার, ৫টি টেবিল ও একটি পানির কল লুট করেন। আমি বিষয়টি আমার শিক্ষা অফিসার, ইউএনওকে অবগত করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, ‘অভিযোগের আলোকে আমরা স্কুলের জায়গাটি পরিদর্শন করেছি, যেহেতু জায়গা সংক্রান্ত বিষয়, তাই আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করলে উনি স্থানীয় কাউন্সিলর, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও দখলদারদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল।’ অপরদিকে এ বিষয়ে সীতাকু- উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নুরুচ্ছফা বলেন, ১৯৩৫ সালে থেকে আজ পর্যন্ত স্কুলটিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কোন মামলা-মোকাদ্দমা থাকলে তা মূল নিষ্পত্তির পর সমাপ্ত হবে। কিন্তু এভাবে রাতের আঁধারে সরকারী সম্পত্তি দখল, লুড জঘন্য অপরাধ। আমরা আইনগতভাবে অগ্রসর হচ্ছি।
×