ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের প্রধান বিরোধী মুখ এখন মমতা

প্রকাশিত: ২০:৪০, ৪ মে ২০২১

ভারতের প্রধান বিরোধী মুখ এখন মমতা

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ‘মোদি ম্যাজিকে’ যেন হাওয়ায় ভাসছিল বিজেপি। আগেরবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যাদের আসন সংখ্যা ছিল ৩। তারা এবার ঘোষণা দিয়েছিল, বিজেবি ২০০ আসনে জিতবে। কিন্তু ভোটের ফলে দেখা গেল, আকাশে ওঠার সেই স্বপ্ন থেকে তাদের মাটিতে নামিয়ে এনেছে মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূল কংগ্রেস। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। বাম রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া রাজ্যটিতে এক দশক আগে ক্ষমতায় আসা মমতা ‘রাম শাসনের’ অপেক্ষা দীর্ঘ করে টানা তৃতীয়বার সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। ভোটে নিজে হারলেও জোড়াফুলের এই বিজয়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, বাংলার জয় ভারতকে বাঁচাল। তার নির্বাচন কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের মতে, এই ভোটে জিতে সারা ভারতের প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে উঠলেন মমতা ব্যানার্জী। তাদের কথার প্রতিফলন ধরা পড়ে বিশাল ভারতের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অভিনন্দন বার্তায়। ধরা পড়ে আরও চারটি রাজ্যে ভোট হলেও পশ্চিমবঙ্গের ফল নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের মাতামাতিতে। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস গড়ে এক সময় বিজেপির হাত ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী হওয়া মমতা হালে বিজেপি প্রধানমন্ত্রীর চরম বিরোধী হিসেবেই পরিচিত করেছেন নিজেকে। ভারতের পার্লামেন্টে বিজেপির একচ্ছত্র আধিপত্যে প্রধান বিরোধী দল বলে কিছু যখন নেই, তখন মমতাকে নিজেদের কণ্ঠস্বর ভাবছেন আঞ্চলিকসহ সর্বভারতীয় দলগুলোর নেতারাও। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জিতে মোদি ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে সরাসরি তার বিরোধিতা করে যাচ্ছেন মমতা। বারবার বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের শাসক দলের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলোকে জোটবদ্ধ করতে সক্রিয় রয়েছেন মমতা। বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে মোদিবিরোধী প্রচারে নিজের প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন। মহারাষ্ট্রে উদ্ধব সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দিল্লীর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের হয়েও সরব হয়েছেন। উত্তর প্রদেশে অখিলেশের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কাশ্মীরে মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহদের আটক করার প্রতিবাদও জানাচ্ছেন। এক্ষেত্রে লোকসভা কিংবা রাজ্যসভায় না থেকেও সারা ভারতে মোদিবিরোধী শীর্ষনেতা হিসেবে মমতা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর অন্য নেতারাও দৃশ্যত এখন ভরসা রাখছেন তার ওপরই। তাই মমতাকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তীব্র কটাক্ষ করেছেন মোদিকেও। তাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন, আগামী দিনে বাকি বিরোধী দলগুলোও রুখে দাঁড়াবে। টানা দ্বিতীয়বার কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পর মোদি-অমিত শাহ জুটি সর্বভারতীয় দলগুলোকে কোণঠাসা করে ফেলার পর আঞ্চলিক দলগুলোকেও অস্তিত্বের সঙ্কটে ফেলে দিচ্ছে। তখন পশ্চিমবঙ্গে মমতার এই জয় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্য সবাইকে প্রেরণা জোগাবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
×