ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে পুলিশের সোর্সকে টাকা না দেওয়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

প্রকাশিত: ১৬:২৬, ৩ মে ২০২১

কক্সবাজারে পুলিশের সোর্সকে টাকা না দেওয়ায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ পুলিশের সোর্সকে টাকা না দেয়ায় শাহ আলম নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দায়ের হয়েছে সদর মডেল থানায়। শহরের জেল গেইট এলাকার শাহ আলম চোখে দেখতে পান না দীর্ঘদিন ধরে। ২০১৭ সাল থেকে সরকারীভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ভাতা পেয়ে আসছেন তিনি। জানা যায়, ২৬ মার্চ কক্সবাজার জেলগেট এলাকায় নাটকীয়ভাবে একটি অপহরণের ঘটনা ঘটে। ঘটে যাওয়া অপহরণ চেষ্টা মামলায় এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে আসামি করা হয়েছে। রামু দক্ষিণ মিঠাছড়ির রশিদ আহমেদের পুত্র রাহমত উল্লাহ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়, ২৬ মার্চ দুপুরে সাইদুজ্জামান আরিফ (১৭) তার দুই বন্ধু রফিকুল ইসলাম শাহেদ ও জুনায়েদ আল হাবীব কক্সবাজারে যাবার পথে জেল গেইট এলাকায় তাদের গাড়ী নষ্ট হয়। তখন ৮-১০ জন যুবক ছুরা ও চাকুর ভয় দেখিয়ে তাদের পাহাড়ে নিয়ে যায়। মারধর ও এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। স্বজনরা মুক্তিপণ দিতে রাজি হলে রাত ৯ টায় সাইদুজ্জামান ও জুনায়েদ আল হাবীবকে ছেড়ে দেয়। তবে রফিকুল ইসলাম শাহেদকে আটকে রাখে। তাকে নিয়ে লিংরোডস্থ তার বোনের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে দিতে গেলে স্থানীয়রা ইউসুফকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। মামলায় দক্ষিণ পাহাড়তলীর মৃত ইসমাঈলের পুত্র মো: ইউসূফ (২৫), সদর ঝিলংজা পাওয়ার হাউজ এলাকার মো: আলমগীরের পুত্র মো: শাহীন ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শাহ আলমকে (৩নং) আসামি করা হয়েছে। এজাহারে আসামি শাহিনকে গ্রেফতারের সময় শাহ আলম পালিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয়। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর পিতা শামসুল আলম বলেন, শাহ আলম ২০১৭ সাল থেকে সরকারীভাবে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি ভাতা পেয়ে আসছে। কোনদিন বড় করে কথা বলার সাহসও যার নেই, তাকে অপহরণের অভিযোগে আসামি করা হয়েছে। এটা কেউ মেনে নিতে পারেনা। কারণ যে ব্যক্তি চোখে দেখেনা, সে কি করে ছুরা ধরে অপর ব্যক্তিকে অপহরণ করবে? গত কয়েকদিন ধরে রাতে পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে তল্লাশির নামে হয়রানি ও হুমকি দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত জাহেদা বেগম আমার কাছে কয়েক দফা টাকা দাবি করেছিল। টাকা না দেয়ায় হয়ত আমার অন্ধ ছেলেটাকে আসামি করে হয়রানি করে চলেছে। আমি এর বিচার চাই। হুমকি দেয়ার অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন বলেন, শাহ আলম দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হলেও সে বড় মাফিয়া। এ মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলে কী অপরাধ করবে না, তা কি করে হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিরা তার নাম বলেছে। তাই আসামি করা হয়েছে।
×