ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে

প্রকাশিত: ২০:১০, ৩ মে ২০২১

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে

সামনে ঈদ-উল-ফিতর। আনন্দ নেই শ্রমজীবী কাজহারা দুস্থ মানুষের মনে। পবিত্র মাস রমজানে সেহরি ও ইফতারে ভালমন্দ খাবার জোটানোও কঠিন হয়ে পড়েছে। এসব হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মতো সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগ এবার কমই দেখা যাচ্ছে। ব্যক্তিপর্যায়ে মানুষও অতখানি দাঁড়াচ্ছে না মানুষের পাশে। করোনার নতুন ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছে অর্থনীতি। তবু আশাবাদ থেমে নেই। ফিতরা ও জাকাতের মাধ্যমে সহায়তা পাবে দরিদ্র মানুষেরা। জনকল্যাণমুখী সরকার গত রোজার ঈদের মতো এবারও বিশেষ সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে দেশের ক্ষতিগ্রস্তদের এই দুঃসময়ে জীবন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ লাখের বেশি পরিবারকে পরিবারপ্রতি আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। এই বিশেষ মানবিক উদ্যোগ ঈদের আগে একটু হলেও হাসি ফোটাবে ভুক্তভোগীদের মুখে। জনকল্যাণমূলক সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সার্বিক সহায়তা দান। দেশে প্রথম করোনারোগী শনাক্তের পর থেকে মানুষ বাঁচাতে একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলেছে জনতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার। এটা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে চলেছেন। একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন, পাশাপাশি চলছে তা বাস্তবায়নের কাজ। গত বছর ও চলতি বছর দুই ধাপে দীর্ঘসময় মানুষের চলাচল ও কর্মকান্ড সীমিত হয়ে পড়ায় অর্থনীতিও অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি বিপন্ন অবস্থার মধ্যে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। যাদের জীবন হলো দিন এনে দিন খাওয়ার মতো। করোনা সঙ্কটের ভেতর কাজ বন্ধ থাকায় তাদের আয়রোজগারের পথ প্রায় বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে মৌলিক মানবিক প্রয়োজন কিভাবে মিটবে? তাদের জীবন বাঁচাতে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে একের পর এক কল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে সরকার। এসব পদক্ষেপের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে রেশন কার্ডের মাধ্যমে দুবেলা দুমুঠো খাওয়ার ব্যবস্থা এবং গত ঈদের আগে দুই কোটি দরিদ্রের হাতে নগদ টাকা পৌঁছানো। দুর্যোগ মহামারী বা অর্থনৈতিক মহামন্দায় উন্নত দেশগুলোতে আর্থিক সহায়তার আওতায় নাগরিকদের ব্যাংক হিসেবে নগদ টাকা প্রদানের রেওয়াজ একটি নিয়মিত ব্যাপার। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় বয়স্কা, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের নগদ অর্থ প্রদানের রেওয়াজ গত দুই যুগ ধরে চালু হলেও বাংলাদেশ সরকার বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক সঙ্কট কাটাতে তাদের নগদ টাকা প্রদান করার কাজ শুরু করেছে গত বছর থেকে। ফলে দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটছে। তারা অনুধাবনে সক্ষম হচ্ছে দেশের সরকার গরিবের বন্ধু। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর তালিকার বাইরে এই কোটি মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ইতোমধ্যে দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ নগদ অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান জনকল্যাণমুখী সরকার একেবারে প্রথম থেকেই তালিকা করে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে নতুন তালিকা প্রণয়ন করে জরুরী বিতরণ ব্যবস্থা। প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীকে বেগবান করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়ে থাকে নতুন কার্যক্রম। করোনাজনিত সঙ্কটেও একের পর এক জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার, যার বিশেষ দৃষ্টান্ত নগদ অর্থ প্রদান। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী দৈনিক ২ ডলারের নিচে আয় করেন দেশে এমন লোক আছেন ১৫ শতাংশের মতো, সংখ্যায় যা আড়াই কোটির কাছাকাছি। এদের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ সরকারের নগদ অর্থ সহায়তার আওতায় চলে আসা একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
×