ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

হাওড়ে ধান কাটার পর্যাপ্ত শ্রমিক ও যন্ত্র রয়েছে

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২৩ এপ্রিল ২০২১

হাওড়ে ধান কাটার পর্যাপ্ত শ্রমিক ও যন্ত্র রয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ গতবছর হাওড়ের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, এ বছরও সেভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। কৃষিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে। এ মুহূর্তে হাওড়ে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোন সঙ্কট নেই। পর্যাপ্ত শ্রমিক রয়েছে। একইসঙ্গে, কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওড়ে এ বছর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে এবছর ধান চালের উৎপাদন বাড়াতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। বেশি জমি চাষের আওতায় আনা, উন্নত জাতের ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। বীজ, সারসহ নানা প্রণোদনা কৃষকদেরকে প্রদান করা হয়েছে। হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা বাবদ ৭৬ কোটি টাকার প্রণোদনা কৃষকদেরকে দেয়া হয়েছে। এছাড়া, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মীরা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কৃষকের পাশে থেকেছেন। নতুন উন্নত জাতের ধান চাষের জন্য চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এসব উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এবছর ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। একই সঙ্গে, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। আশা করা যায়, গত বছরের তুলনায় এবছর বোরোতে ৯- ১০ লাখ টন বেশি উৎপাদন হবে। উল্লেখ্য, এ বছর সারাদেশে বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কৃষিমন্ত্রী এসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধান কাটায় এগিয়ে আসার ও এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব অনুযায়ী, এবছর হাওড়ভুক্ত ৭টি জেলা- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু হাওড়ে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত হাওড়ভুক্ত ৭টি জেলায় ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ। অন্যদিকে শুধু হাওড়ের ১ লাখ ৮০ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৪০ ভাগ। সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের আরএডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪৯.১০ শতাশ, যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪১.৯২ শতাংশ।
×