ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও প্রধান

এক মাসেই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২১ এপ্রিল ২০২১

এক মাসেই করোনা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ করোনা নিয়ন্ত্রণে আশার বাণী শোনালেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় যেসব উপকরণ এই মুহূর্তে মানুষের হাতে রয়েছে, তাতে আগামী এক মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। করোনায় বিশ্বজুড়ে উচ্চ মৃত্যুহারের প্রেক্ষিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ছোঁয়াচে এ ভাইরাসে আক্রান্ত ১৪ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার ২৭৫ জনে পৌঁছেছে। মারা গেছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৪৫৪ জন। সুস্থ হয়েছে, ১২ কোটি ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৭৩ জন। খবর আলজাজিরা ও বিবিসি অনলাইনের। তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস বলেন, ‘করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৯ মাস। তারপর এই সংখ্যা ২০ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৪ মাস এবং তারপরের ৩ মাসে করোনায় বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩০ লাখে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারী বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান কেরখোভ জানান, গত এক সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫২ লাখ মানুষ। গত বছর মহামারী শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত এক সপ্তাহে সংক্রমণের হিসেবে এটি সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। কেরখোভ বলেন, ‘সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ চিত্রে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত বছর যখন মহামারী শুরু হলো, দেখা গেছে ৫০ বছর বা তার অধিক বয়সী মানুষ বেশি ঝুঁকিতে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, ২০-২৫ বছর বয়সী তরুণীরাও উল্লেখযোগ্য হারে আক্রান্ত হচ্ছেন এ ভাইরাসে। সোমবারের ভার্চুয়াল ওই সংবাদ সম্মেলনে সুইডেন থেকে যোগ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। সেখানে বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা বণ্টনে ন্যায্যতার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। থুনবার্গ বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে গণটিকাদান কর্মসূচী শুরু হওয়ার পর বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, উন্নত দেশগুলোতে প্রতি চারজনে একজন টিকা নিয়েছেন, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে প্রতি ৫শ’ জনে টিকা নিয়েছেন একজন।’ ফ্লাইট চালুর পরই নিউজিল্যান্ডের বিমানবন্দরে করোনা শনাক্ত ॥ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের ফ্লাইট চালুর পরই অকল্যান্ড বিমানবন্দরের করোনাভাইরাসে সংক্রমিত এক কর্মী শনাক্ত হয়েছেন। তবে ওই কর্মী সংক্রমিত হওয়ার সঙ্গে ভ্রমণের কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের ফ্লাইটও বাতিল করা হয়নি। এক বছরের বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো স্থানীয় সময় সোমবার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। দুই দেশের মধ্যে কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, করোনায় সংক্রমিত ওই ব্যক্তি উড়োজাহাজ পরিষ্কারের কাজ করতেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওই কর্মীর টিকা দেয়া ছিল। আরডার্ন আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে তার কথা হয়নি। তবে ওই ব্যক্তি করোনায় সংক্রমিত হওয়ায় দুই দেশের যাতায়াতে কোন প্রভাব পড়বে বলে তিনি মনে করেন না। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্য মানুষের ভ্রমণব্যবস্থা চালু হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে চলাচলকারী যাত্রীদের কোন কোয়ারেন্টাইনে থাকার প্রয়োজন নেই। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। সীমান্তে কড়া নজরদারি ও লকডাউনের কারণে দুই দেশে সংক্রমণের হার খুব কম। ভারতে বয়স ১৮ হলেই মিলবে টিকা ॥ কোভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারত। সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে দেশব্যাপী টিকাদান কর্মসূচী চলছে। তবুও নিয়ন্ত্রণে নেই পরিস্থিতি। প্রতিদিন দুই লাখের বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আগামী ১ মে থেকে গোটা ভারতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে টিকা দেয়া হবে। সোমবার এমন ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। বর্তমানে ভারতে শুধু করোনা প্রতিরোধে সম্মুখ সারির লোকজনকে টিকা দেয়া চলছে। এখন ভারতের স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখ সারির কর্মী এবং ৪৫ বছরের বেশি বয়স্করা বর্তমানে টিকা পাচ্ছেন। আগামী ১ মে থেকে এই টিকাদান শুরু হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈঠক মোদি বলেন, ভারতের বেশিরভাগ মানুষকে যাতে অল্প সময়ের মধ্যে টিকা দেয়া যায়, তার জন্য গত এক বছর ধরেই চেষ্টা করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই রেকর্ড গতিতে এগিয়েছে দেশ। সোমবারের পদক্ষেপকে ভারতের টিকাদান প্রক্রিয়ার তৃতীয় পর্যায় বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ভারতে করোনা টিকাদান কর্মসূচী। প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের টিকা দেয়া হয়। ওয়ার্ল্ডো মিটারের মঙ্গলবার সকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। একই সময়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৫৭ জন।
×