ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাই অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:০৫, ২০ এপ্রিল ২০২১

করোনাই অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ৫০ বছর উদ্যাপন করেছে এবং এরই মধ্যে দেশটি বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি ঘটনা সমীক্ষায় পরিণত হয়েছে, যা খুব কম অর্থনীতিবিদই অনুমান করেছিলেন। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ যখন জিডিপি প্রবৃদ্ধি হারে প্রতিবেশী অনেককে ছাড়িয়ে গিয়েছিল তখন অনেকেই এটিকে একটি আকস্মিক সাফল্য হিসেবে উপহাস করেছিলেন। কিন্তু তখন থেকে বছরান্তে তাদের ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ, যা বিস্ময়করভাবে এখন সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হয়ে গেছে। বৈদেশিক বাণিজ্য উদারীকরণের পর ১৯৯০-এর পরবর্তী সময় থেকে অর্থনীতির গতিধারা দ্রুত বদলাতে শুরু করে এবং ২০০৯-এর পর থেকে আরও গতিশীল হয়। তারই ফলে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের মানদ- অনুযায়ী ২০১৫ সালের নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়। প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এবং ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া, যা ২০১৫ সালেই অর্জিত হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ ২০১৮ সালের জাতিসংঘের মানদ-ে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের শর্ত পূরণ করেছে এবং ২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের মতো শর্তগুলো পূরণ করে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা লাভ করবে। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২০ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসেবে স্থির মূল্যের সমতায় জিডিপির আকার ৩০তম এবং চলতি ডলার মূল্যে অবস্থান ৩৯তম। সিইবিআর প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২৪ সালেই বাংলাদেশের জিডিপি আকারে ৩০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। হংকং সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশনের হিসাবে ২০৩০ সালের মধ্যে ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতি এবং সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের মতে বাংলাদেশ ২০৫০ সালে ১২তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। সম্প্রতি আইএমএফের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মাথাপিছু জাতীয় উৎপাদনে ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার পেছনে যে নিয়ামকগুলো সহায়তা করেছে সেগুলো হলোÑ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সহায়ক পরিবেশ, গ্রামাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের বিস্তৃতি, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ, তৈরি পোশাক শিল্প, সরকারের উন্নয়ন নীতি এবং অন্যান্য সামাজিক সূচকে উন্নতি। গত পাঁচ দশকে রূপান্তরের গভীরতা আরও ব্যাপকতা লাভ করে যখন ২০০৯ সালের পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার সাড়ে তিন গুণের বেশি বেড়ে যায় এবং ৫০ বছরের মধ্যে গত দশকে গড় প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ছিল অর্থ্যাৎ ৬.৭৬ শতাংশ, যা বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে প্রতি দশকে ১ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সক্ষম হয়েছে, যা প্রশংসনীয় অবশ্যই। বাংলাদেশ এক সময় কৃষিপ্রধান দেশ ছিল। মোট দেশজ উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি আসত কৃষি থেকে আর কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিল ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ। জিডিপিতে শিল্পের অবদান ছিল ১২-১৩ শতাংশের মতো। ধীরে ধীরে কৃষির অবদান কমে শিল্প ও সেবা খাতের পরিধি বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নব্বইয়ের দশক থেকে শিল্প খাতের অবদান বাড়তে শুরু করে প্রধানত তৈরি পোশাক শিল্পের প্রসারের কারণে। এখন সেবা খাতের অবদানও কমে যাচ্ছে। তার স্থান নিচ্ছে শিল্প। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান মাত্র ১৩ শতাংশ, যদিও কৃষি খাতের ওপর নির্ভরশীল শ্রমশক্তি ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে শিল্প খাতের অবদান ৩৫ শতাংশ। রূপকল্প ২০৪১ প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০৩১ সালের মধ্যে শিল্প খাতের অবদান ৪০ শতাংশ হবে, যদিও ধীরে ধীরে তা কমে ২০৪১-এ আবার ৩৫ শতাংশে নেমে আসবে এবং সেবা খাত সম্প্রসারিত হবে। তখন কৃষির অবদান থাকবে মাত্র ৫ শতাংশ। ২০৪১ সালে মাথাপিছু বার্ষিক আয় দাঁড়াবে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সালে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় হলেও রফতানিতে প্রথম, ধান ও আলু উৎপাদনে যথাক্রমে চতুর্থ ও সপ্তম, সবজি ও মাছ উভয় উৎপাদনে তৃতীয়, চা উৎপাদনে নবম এবং গবাদিপশু পালনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বাদশ অবস্থানে রয়েছে। সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৮৬ ভাগই হয় বাংলাদেশে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫.২৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৮.১৫ শতাংশ। পূর্বকার মতো মোট জিডিপি বৃদ্ধি ও অগ্রগতিতে প্রধান অবদান রেখেছে সেবা, শিল্প ও কৃষি খাত যথাক্রমে ৫১.৩০, ৩৫.৩৬ এবং ১২.৩৫ শতাংশ, যা বিগত অর্থবছরে ছিল যথাক্রমে ৫১.৩৫ এবং ১৩.৬৫ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য অনুসারে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির শতাংশ হিসেবে দেশে তখন মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছিল ৭৪.৬৯ শতাংশ, মোট জাতীয় সঞ্চয়ের পরিমাণ ৩০.১১ শতাংশ, যা বিগত অর্থবছরে ছিল ২৯. ৫০ শতাংশ এবং মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৩১.৭৫ শতাংশ (ব্যক্তি খাত ২৩.৬৩ শতাংশ ও সরকারী খাত ৮.১২ শতাংশ), যা বিগত অর্থবছরে ছিল ৩১.৫৭ শতাংশ। বছরটিতে মোট বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ ২.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিগত অর্থবছরের তুলনায় ৩৯.৫৯ শতাংশ কম এবং বিশ্বের ০.২৯ শতাংশ, যেখানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা বিশ্বের ২.১১ শতাংশ। দারিদ্র্য নিয়ে কাজ করে যে তিন মহান বাঙালী নোবেল জয়ের অনন্য গৌরব অর্জন করেছেন তারা হলেন ড. অমর্ত্য সেন (১৯৯৮), যিনি পেয়েছেন দারিদ্র্য বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান তৈরির জন্য, ড. মুহম্মদ ইউনূস (২০০৬), যিনি পেয়েছেন দারিদ্র্য দূরীকরণে গরিবদের উপযোগী ব্যাংক তৈরির জন্য আর ড. অভিজিৎ ব্যানার্জী (২০১৯) পেয়েছেন দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষাগার পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য। তারপরও দারিদ্র্য জয় পুরোপুরি হয়নি। বাংলাদেশের সার্বিক দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচীর মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে ড. আখতার হামিদ খানের কুমিল্লা মডেলের চার স্তর যথাক্রমে পল্লী পূর্ত কর্মসূচী, টিটিডিসি, থানা সেচ কর্মসূচী ও দ্বি-স্তরবিশিষ্ট সমবায়। দারিদ্র্য বিমোচন বাংলাদেশের বিগত ৫০ বছরের অন্যতম বড় কার্যক্রম, যার কিছু মডেল বিশ্বে প্রশংসা পেয়েছে তৃতীয় বিশ্বের কিছু দেশে জাতীয় কর্মসূচী হিসেবে। সত্য হলো, দারিদ্র্য, আর্থিক অসচ্ছলতা, উর্ধমুখী অসমতা ও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কা সত্ত্বেও বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক রূপান্তর অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে এবং আজকের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে। দেশটির সাফল্যের বড় অংশের পেছনে ফজলে হাসান আবেদের ব্র্যাক এবং মুহম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংকের মতো এনজিগুলোর অবদান রয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে একটি হস্তক্ষেপ প্রত্যাশার চেয়ে বড় অবদান রেখেছিল, আর তা হলো পরিবারের জ্যেষ্ঠ নারী সদস্যদের কাছে ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের প্রথমদিককার সিদ্ধান্ত। এটি ঘরে নারীদের কথা বলার অধিকার সংহত করেছিল, পালাক্রমে শিশুকল্যাণে পারিবারিক ব্যয় প্রবাহিত করায় ভূমিকা রেখেছিল। যার জন্য গড় আয়ু বৃদ্ধি, সাক্ষরতা ও অপুষ্টি মোকাবেলায় বাংলাদেশ এত উন্নতি করেছে। বাংলাদেশে বিশ্বের অন্যতম বড় ক্ষুদ্রঋণ খাত আছে, যা ঋণ ফাঁদ থেকে পরিবারগুলোকে বেরিয়ে আসতে এবং নিজস্ব ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করতে সাহায্য করেছে। একটি কম্পিউটেবল জেনারেল ইকুলিব্রিয়াম মডেল ব্যবহার করে দেখিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ নিছকই অর্থ গ্রহণের চেয়ে বেশি মাত্রায় পরিবারগুলোকে সাহায্য করেছে। আর্থিক-রাজস্ব ও মুদ্রানীতিতে পৃষ্ঠপোষকতা জুগিয়ে এটি দেশের জিডিপি ৯-১২ শতাংশ চাঙ্গা করেছে। কিন্তু বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত দেড় দশকে দ্রুত দারিদ্র্য কমানোর প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নেই। অর্থাৎ সেই সকল দেশে যে গতিতে দারিদ্র্য কমেছে (৩.২ শতাংশ হারে তানজানিয়া), বাংলাদেশে কমেছে এর চেয়ে কম (১.৩৭ শতাংশ হারে)। প্রশ্ন হচ্ছে, দারিদ্র্য জয়ের প্রমাণিত এবং প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব মডেল থাকার পরও বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্তির হারে অন্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে কেন? বাংলাদেশের অর্থনীতির সফলতার আরেক সোপান হচ্ছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪৫তম বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণকারী দেশে পরিণত হয়েছে। নবেম্বর ২০১৯ ও নবেম্বর ২০২০ শেষে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩১ হাজার ৭২৯ মিলিয়ন ও ৪০ হাজার ৮৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর বছর শেষে গত ৩০ ডিসেম্বর রিজার্ভ দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বাংলাদেশের অন্তর্মুখী রেমিটেন্স ও রফতানি বৃদ্ধি, আমদানি হ্রাস এবং বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তি ইত্যাদি কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়েছে। বর্তমানে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রসহ ১০-১২টি মেগা প্রকল্পসহ কয়েক ’শ প্রকল্প দেশী-বিদেশী অর্থায়নে বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। করোনাকালে সরকারী ব্যয় ক্রমবর্ধমান হারে চালু থাকায় কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার হয়েছে। বাংলাদেশের অথর্নীতি সচল থাকার পশ্চাতে সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সঠিক কর্মপন্থা ছাড়াও কৃষক, শিল্পোদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, ব্যাংকার, বৃহৎ ভোক্তাশ্রেণীসহ সবার অবদান অনস্বীকার্য। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সক্ষমতার বিষয়টি এখন স্বীকৃত। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেন্টার ফর ইকোনমিক এ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) এক নতুন জরিপে বলা হয়েছে, ২০৩৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান আকার ৩০২ বিলিয়ন, যা ২০৩৩ সালে হবে ৮৫৫ বিলিয়ন। কিন্তু বাদ সেধে বসেছে করোনা (কোভিড-১৯) ভাইরাসের সংক্রমণ, যা একে একে সরকারের সকল কর্মসূচী বাস্তবায়নে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কাম্য ছিল না। এমতাবস্থায় সরকারের করণীয় হলো (১) সকল বিধিমালা অনুসরণপূর্বক জীবন-জীবিকার স্বার্থে সব ধরনের আর্থিক তথা স্বাস্থ্য সহায়তা অব্যাহত রাখা, (২) করোনা ব্যবস্থাপনায় সংসদ সদস্য/স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি/এনজিও প্রতিনিধি/সমবায় প্রতিনিধিদের কাজে লাগাতে হবে। এ ব্যাপারে ভারতের কেরালা মডেল ও বাংলাদেশের বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে, (৩) সরকারের টিকাদান কর্মসূচী বিনামূল্যে অব্যাহত রাখতে হবে এবং সকল গুজব বন্ধ করতে হবে, (৪) বর্তমানে বাংলাদেশ যখন সাফল্যের সঙ্গে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালনা করে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, ঠিক তখনই বিশ্বজুড়ে একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার নতুন ধরন। বাংলাদেশেও করোনার নতুন ধরনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের বিপক্ষে সবচেয়ে কার্যকর উদ্যোগ হলো দেশে বিপজ্জনক এ নতুন স্ট্রেইনগুলোর অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল থেকে দ্রুত সংক্রমণক্ষম ও ভ্যাকসিন প্রতিরোধী স্ট্রেইন বাংলাদেশে প্রবেশ না করে এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিদের নিজ খরচে কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহামারী সৃষ্টিকারী ভাইরাসের ধরন পরিবর্তন হতে দেখা যায়। এজন্য প্রয়োজন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহামারী প্রতিরোধের কৌশলগুলোও পরিবর্তন করা আবশ্যক। বাংলাদেশ সরকার দ্রুত ভ্যাকসিন অর্জন এবং ভ্যাকসিন বিতরণে বিশাল সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে দ্রুত সংক্রমণক্ষম ও ভ্যাকসিন প্রতিরোধী নতুন ধরনগুলোর অনুপ্রবেশ বন্ধ করতেও সরকারের কার্যকর ভূমিকা জরুরী। লেখক : গবেষক ও অর্থনীতিবিদ
×