ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৫জন টিকা নিয়েছেন

প্রকাশিত: ১৯:১৫, ১৯ এপ্রিল ২০২১

৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৫জন টিকা নিয়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনেও থেমে নেই টিকাকরণ কর্মসূচি। সোমবার পর্যন্ত দেশে দুই ডোজ মিলিয়ে ৭২ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৪জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে সবমিলে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৭ লাখ ২৯ হাজার ১৪৭জনকে। আর ২য় ডোজ ১৫ লাখ ৭ হাজার ২৮৭ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। প্রথম ডোজ যে কেন্দ্র থেকে নেওয়া হয়েছে, ঠিক একই কেন্দ্র থেকে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নইলে ভ্যাকসিনের সনদ সংগ্রহে জটিলতা সৃষ্টি হবে বলেও জানানো হয়েছে অধিদফতরের পক্ষ থেকে। কঠোর লকডাউনের কারণে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকা এবং বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া মানুষদের মধ্যে যারা প্রথম ডোজ একখান থেকে নিয়েছেন, তাদের অনেকেই সেই স্থানে নেই। অথচ ২য় ডোজের এসএমএস চলে আসায় তারা কিছুটা দুশ্চিনতায় রয়েছেন। তবে নির্ধারিত দিনের পরও ২য় ডোজ নেওয়া যাবে বলে অধিদফতর থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দেরিতে হলেও তাদের নির্ধারিত স্থান থেকেই টিকা নিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, টিকাকেন্দ্র বদলানোর কোনও সুযোগ নেই। দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হবে প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া কেন্দ্র থেকেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এবং কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড ডিপ্লয়মেন্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, প্রথম ডোজের পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত নেওয়া যায়। এখনই কেন্দ্র পরিবর্তন করাটা একটু চ্যালেঞ্জিং। সফটওয়্যারের ওপর চাপ পড়বে। টিকাকেন্দ্র পরিবর্তনের কোনও সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এতে সিস্টেমে চাপ পড়বে। আর অফিসিয়ালি কেন্দ্র পরিবর্তন না করলে পরে টিকার সনদ পেতে সমস্যা হবে জানিয়ে অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এই কারণেও আমরা এখন এ নিয়ে কিছু করছি না। যদি দেখি যে লকডাউন বেশি লম্বা হয়ে যাচ্ছে তখন এ নিয়ে কাজ করবো। আপাতত যেহেতু ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত টিকা দেওয়ার সুযোগ আছে, তখন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। এরমধ্যে পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলে সবাই নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে দ্বিতীয় ডোজ নেবেন। তিনি বলেন, প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। তাই টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে শঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই। আমাদের হাতে সময় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারপরও যদি লকডাউন দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগে জানা গেছে, করোনার টিকার প্রথম ডোজ রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছেন মিজানুর রহমান। তার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার তারিখ আগামীকাল বুধবার। কিন্তু জরুরি কাজে ভোলায় গিয়ে তিনি সেখানে আটকা পড়েছেন লকডাউনে। ভোলায় একটি টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে তিনি টিকা নিতে চান জানালে সেখান থেকে বলা হয়, টিকা নিতে পারলেও তিনি সার্টিফিকেট পাবেন না। একইভাবে ১১ ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে করোনার প্রথম ডোজের টিকা নেন বছরের নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী নাসিমা বেগম। টিকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী চলে আসেন ঢাকার ছেলের বাড়িতে। ৮ এপ্রিল তাদের ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত লকডাউন থাকাঢ চাঁপাই নবাবগঞ্জ ফিরতে পারেননি। তাদের ছেলে আসিফ হোসেন বলেন, ১১ এপ্রিল টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা ছিল তাদের। মোবাইলে খুদেবার্তাও পেয়েছিলেন গত ৯ এপ্রিল। কিন্ত রাজধানীর অন্য একটি টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে তাদের ঠিকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। চাঁপাই নবাবগঞ্জের এই দুইজনের মতো লকডাউনে আটকে পড়েছেন অনেকেই। কেউ ঢাকার বাইরে থেকে এসে ঢাকায়, কেউবা আবার ঢাকার বাইরে গিয়ে। তাদের অনেকেই টিকার দ্বিতীয় ডোজের তারিখ চলে আসায় উদ্বিগ্ন।
×