ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র তাপদাহে পানি শূন্যতা, ব্যাপক হারে ঝরছে আম

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৮ এপ্রিল ২০২১

তীব্র তাপদাহে পানি শূন্যতা, ব্যাপক হারে ঝরছে আম

সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ বৈশাখের তৃতীয় সপ্তাহেও প্রচন্ড তাপদাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগানগুলোয় পানি শূন্যতায় ব্যাপক হারে ঝরে পড়ছে আম। এতে বাগান মালিকরা চিন্তায় পড়েছেন। অনেকে আম ঝরে পড়া রোধে বাগানে পানি প্রয়োগ করছেন কিন্তু তাতেও তেমন কাজ হচ্ছে না। এটা চলতে থাকলে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা বাগান মালিকদের। অন্যদিকে, কৃষি বিভাগ আপদকালীন এ দুর্যোগে দিনে অন্তত দুবার বাগানে সেচ ও আমের ডগায় পানি ছিটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে মুকুল থেকে বেরিয়ে আসা বাড়ন্ত আমগুলো নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলেন বাগান মালিকরা। কিন্তু মাসব্যাপী টানা তাপদাহ দু:চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তীব্র খরায় আমের বোঁটা লাল হয়ে পানি শূন্যতায় মাটিতে ঝরে পড়ছে গাছের ছোট ছোট আম। বাগান মালিকদের উদ্বিগ্ন না হয়ে গাছের গোড়ায় সেচ নিশ্চিতসহ কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহম্মদ নজরুল ইসলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি বছর ৩৪ হাজার ৭৩৮ হেক্টর জমিতে আম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। এ সময়ে আমের গুটি বড় হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের গুটি ঝরে পড়ছে। জেলার ৫ উপজেলাতেই একই অবস্থা। ফলে চলতি মৌসুমে আমের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন আমবাগান মালিক ও চাষিরা। লোকসান ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তারা। গাছের পরিচর্যা করছেন। কিছু বাগান মালিক ডিজেলচালিত স্যালোমেশিন দিয়ে গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন। কিন্তু পানি সংকটে বেশিরভাগ বাগানে সে সুযোগও মিলছে না। বৃষ্টি না হলে আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন বাগান মালিকরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাগানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, গাছের নিচে বিছিয়ে পড়ে আছে আমের গুটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুরের আম ব্যবসায়ী এবং চাষি সেতাউর রহমান বলেন, প্রতি বছরই আমচাষ করি। কিন্তু এ বছরের মতো প্রতিকূলতার মধ্যে পড়িনি। মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে মুকুল ছিল ভরা। গুটিও এসছিল ভালো। কিন্তু তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় গুটি ঝরে পড়ছে। গাছের শতকরা প্রায় ৩৫ ভাগ গুটি নেই। ফলে এ বছর আমের ফলন বিপর্যয় ঘটবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঁচ মাস ধরে বৃষ্টি নেই। ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাপমাত্রাও বেশি। অতিরিক্ত খরার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। বাগানের মাটি শুকিয়ে গেলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য জেলার আমচাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে শতভাগ বাগানে সেচ দেয়া অসম্ভব। দ্রুত সময়ে বৃষ্টি না হলে ফলন বিপর্যয় হতে পারে।
×