ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জবিতে ভার্চুয়ালি বাংলা নববর্ষ পালিত

প্রকাশিত: ১৬:২৪, ১৪ এপ্রিল ২০২১

জবিতে ভার্চুয়ালি বাংলা নববর্ষ পালিত

জবি সংবাদদাতা ॥ করোনা মহামারীর কারণে এবার ভার্চুয়ালি বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ পালন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। আজ বুধবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ (JnU Prip Dhaka)-এর মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, বৈশাখের বিষয় টা হলো আমরা বাঙালি হিসেবে একে অপরের কাছে আসতে ভালোবাসি। এমন জীবন ঘনিষ্ঠ আবেগ ও অনুভূতি সম্পন্ন জাতি পৃথিবীতে আর একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। আমরা পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয় সেখানে অনেকে অংশগ্রহণ করে যারা ঢাকা শহরে থাকেন। এছাড়াও গ্রামে গঞ্জে সর্বত্র বৈশাখী আমেজ পরিলক্ষিত হয়। সেই আমেজটি এবছরও গতবছরের ন্যায় একটু ভিন্ন ধারায় আমাদের কাছে ধরা দিয়েছে। আসলে বাঙালির প্রাণের উৎসব হলো এই বৈশাখ উৎসব এবং এটি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে একে অপরের কাছে আসার এক অনন্য উৎসব। ধর্মীয় ক্ষেত্রে উৎসব পালনে একটা ভেদাভেদ থাকে কিন্তু এই উৎসবে কোনো ভেদাভেদ নেই। এই উৎসব হয়ে ওঠে সকল বাঙালির। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ঐতিহ্য আছে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বর্তমানে ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক। তিনি অত্যান্ত দক্ষতার সাথে এই বৈশাখী উৎসবকে পুরনো ঢাকায় একটি নতুন যাত্রা দিয়েছে। এই বৈশাখী উৎসবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়। যেটি সকলেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পুরনো ঢাকার যেখানে ব্যাবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র স্থল যেখানে হালখাতার প্রচলন এখনো আছে। সেখানে এ উৎসবটি কেন জানি একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জবি উপাচার্য আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রী, শিক্ষক মণ্ডলী এক্ষেত্রে বরাবরই অনেক বছর থেকে একটি জোরালো ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে পহেলা বৈশাখ উৎযাপিত হয় সারাদিন ব্যাপি তার সাথে অন্য কিছুরই তুলনা হয় না। সেটা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি যে বিভিন্ন পরিচয় এসব কিছুই ধারণ করে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে একটি অনন্য উদাহরণ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র -ছাত্রীরা বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এবং এখনো করছে। এখন আমাদের এমন একটা সময় চারিদিকে শুধু দুঃখ সংবাদ কি জানি কাল সকালে আবার কি দুঃখের সংবাদ শুনি। এমন সময় আমরা অতিবাহিত করছি। এ সময় আনন্দ কেমন জানি বিষন্ন মনে হচ্ছে। বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের ঐতিহ্যকে লালন করার ক্ষেত্রে কতটা সিরিয়াস সেটা পহেলা বৈশাখ গ্রাম, গঞ্জ এবং শহরে সর্বোচ্চ উদযাপন দেখে বুঝা যায়। কিন্তু এখন আমরা যে দুর্যোগের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছি মানুষ মানুষকে দূরে ঢেলে দিতে বাধ্য করেছে। সাময়িক দূরে থাকার বিনিময়ে আমরা যেন আবারো কাছে আসতে পারি পহেলা বৈশাখের দিনে আমাদের সকল বাঙালির এই প্রত্যাশা থকবে। এই অন্ধকার, পাপ সেগুলো নতুন বছরের আগমনে দূরীভূত হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছে একটা সাংস্কৃতিক বলয়ের মাধ্যমে সেই শুরুটা সফল হবে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়। আজকে যে অন্ধকার, অমানিশা আশাকরি অচিরেই অন্ধকার পেরিয়ে আলো আসবে। এসময় তিনি সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে বলেন। এছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ নূরে আলম আব্দুল্লাহ ও সম্পাদক অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম। সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহমুদুল হাসান -এর সঞ্চালনায় সংগীত বিভাগের আয়োজনে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
×