স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিলেট, নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মাণবাড়িয়ার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুরুত্বপূর্ণ থানাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ডিএমপির দু’টি বিভাগে ১৪ থানায় বাঙ্কার স্থাপন করে মেশিনগান দিয়ে ২৪ ঘণ্টা পাহারা বাসানো হয়েছে। প্রতিটি থানায় বসানো হয়েছে লাইট মেশিনগান (এলএমজি) ও চাইনিজ রাইফেল সংবলিত ভারি অস্ত্রের সজ্জিত নিরাপত্তা চৌকি। মঙ্গলবার মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, মতিঝিল বিভাগের ৭টি থানায় বালুর বস্তা দিয়ে বাঙ্কার তৈরি করে পুলিশ ডিউটি করছে। মতিঝিল, সবুজবাগ, খিলগাঁও, পল্টন মডেল, রামপুরা, মুগদা ও শাজাহানপুর থানায় বালুর বস্তা দিয়ে নিরাপত্তা চৌকি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে লাইট মেশিনগান (এলএমজি) ও চাইনিজ রাইফেল সংবলিত ভারি অস্ত্রের সজ্জিত হয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে থানার বাড়তি নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের দিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা তো আপনারা দেখেছেন। সেই কারণেই নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে বালুর তৈরি সেই বাঙ্কারে করে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ ডিউটি করবে। এছাড়া থানা ভিত্তিক যতগুলো পুলিশ ফাঁড়ির রয়েছে। সেখান নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি থানারও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মূলত মাদ্রাসা অধ্যুষিত এলাকা এবং তুলনামূলক জরাজীর্ণ থানাগুলোর নিরাপত্তা বেশি দেয়া হচ্ছে। ডিএমপির ওয়ারী বিভাগে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে পুরান ঢাকার ৭টি থানা এলাকায় বাঙ্কার স্থাপন করে লাইট মেশিনগান (এলএমজি) ও চাইনিজ রাইফেল সংবলিত ভারি অস্ত্রের সজ্জিত নিরাপত্তা চৌকি তৈরি করা হয়েছে। ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ জানিয়েছেন, ওয়ারী বিভাগের সব থানায় নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। ওয়ারী বিভাগের ওয়ারী থানা, ডেমরা থানা, শ্যামপুর থানা, যাত্রাবাড়ী থানা, গে-ারিয়া থানা ও কদমতলী থানায় এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে। এছাড়া পুরান ঢাকার বংশাল থানা দুটির ভবনে বাঙ্কার তৈরি করে লাইট মেশিনগান (এলএমজি) নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন ফকির ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ডিএমপির উর্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে গত ১০ এপ্রিল থেকে থানায় বাঙ্কার তৈরি করা হয়। এসব বাঙ্কারে লাইট মেশিনগান (এলএমজি) ও চাইনিজ রাইফেল সংবলিত ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ২৪ ঘণ্টা প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ২৮ মার্চ হেফাজতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব চালায় হরতাল সমর্থনকারীরা। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর ও ঢাকায় হামলা-ভাংচুর চালায়। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় থানা, ভূমি অফিস, সড়কে থাকা গাড়ি ও বসতবাড়ি। এরপরই পুলিশ সদর দফতর থেকে দেশের সবগুলো থানার নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশ দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার থানার আশপাশে সবসময় একাধিক দলের টহল ও ঢাকার সব থানার নিরাপত্তা বৃদ্ধির নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম।
