ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ, প্রবাসীদের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা

প্রকাশিত: ২৩:৪৪, ১৪ এপ্রিল ২০২১

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ, প্রবাসীদের ফেরা নিয়ে অনিশ্চয়তা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট। এতে হাজার হাজার প্রবাসীর নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। টিকেটের মূল্য কিংবা হোটেল বুকিংয়ের টাকা ফেরত নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এ অবস্থায় প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়েছে ট্রাভেল এজেন্ট মালিকদের সংগঠন এ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) ও বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা)। মঙ্গলবার রাজধানীতে পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দুইজন সচিব বলেছেন-প্রবাসগামী শ্রমিকদের প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হবে। বেবিচক জানিয়েছে- মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধের নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। অন্যদিকে গত ৪ এপ্রিল থেকে বন্ধ আছে দেশের সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট যা ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এমন অবস্থায় প্রবাসী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু রাখার দাবি জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠন। কারণ আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট বন্ধ করায় তাদের মতো এমন হাজার হাজার প্রবাসীর নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। টিকেটের মূল্য কিংবা হোটেল বুকিংয়ের টাকা ফেরত নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। এর চেয়েও বড় ভয়ের আশঙ্কায় থাকা প্রবাসীরা জানান, ওইসব দেশে তাদের ভিসা, আকামার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। যথাসময়ে ফিরতে না পারলে এগুলো নবায়ন করাও সম্ভব হবে না। এমনকি হয়তো তারা আর ফিরেও যেতে পারবেন না সেসব দেশে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আটাব সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম, হাব সভাপতি শাহাদত হোসেন তসলিম, আটাব মহাসচিব মাজহারুল হক ভুইয়া বলেন, প্রবাসীদের ছুটি শেষে নিজ কাজে সুষ্ঠুভাবে ফিরে যাওয়া বা নতুন ভিসা নিয়ে কাজে যোগদান করতে তাদের যাতায়াত চলমান রাখা জরুরী। অন্যথায় তাদের চাকরি হারানোর শঙ্কা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে বহুমুখী কর্মসূচী নিয়েছেন। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরও কর্মী পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবে বলে আমরা দৃঢভাবে বিশ্বাস করি। লকডাউনের সময় যাদের ফ্লাইট তারা যেতে না পারলে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে তারা কর্মহীন হয়ে পড়বে। পরিবার, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শাহাদত হোসেন তসলিম বলেন, পূর্ব নোটিস ছাড়াই ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বিদেশগামী কর্মীরা। তাছাড়া কাতার এবং ওমানে যাত্রীরা টাকা খরচ করে কোয়ারেন্টাইন হোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছে, যেগুলো ফেরতযোগ্য না। এখন না যেতে পারলে তাদের লোকসান গুনতে হবে। লকডাউনের সাতদিনে প্রায় ২০ হাজার কর্মী বেশি দামে টিকেট কেটে কাতার, ওমানসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কোয়ারেন্টাইন হোটেল বুকিং করেছে। এই অবস্থায় দেশে এবং বিদেশে কর্মক্ষেত্রে এসব প্রবাসীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। আটাব মহাসচিব মাজহারুল হক ভুইয়া বলেন, লকডাউন চলাকালীন সময়ে বিদেশগামী কর্মীদের কথা বিবেচনায় এনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ না করে জনশক্তি প্রেরণ খাতকে জরুরী সেবা খাত হিসেবে বিবেচনা করা হোক। বর্তমানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার কর্মী কর্মস্থলে ফিরে যেতে অধিক মূল্যে টিকেট কিনেছেন। এদিকে বেবিচক জানিয়েছে, চার্টার্ড ফ্লাইট, কার্গো ফ্লাইট, এয়ার এ্যাম্বুলেন্স এবং বিশেষ অনুমতিপ্রাপ্ত ফ্লাইট চলাচল এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকছে। তবে এসব ফ্লাইটের ক্ষেত্রেও মানতে হবে বিশেষ নির্দেশনা। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
×