ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাদানীর মোবাইল পর্নো ভিডিওতে ঠাসা

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ১৪ এপ্রিল ২০২১

মাদানীর মোবাইল পর্নো ভিডিওতে ঠাসা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ বিতর্কিত বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীর মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ ‘এডাল্ট কনটেন্ট’ অশ্লীল ভিডিও চিত্রসহ পর্নোগ্রাফিতে রয়েছে ঠাসা। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মাদানীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এসব পর্নোগ্রাফির সন্ধান পেয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ গাছা থানায় অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানিয়েছেন। পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, কথিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৬) গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মোবাইল ফোনের ফরেনসিক টেস্টের পর বিশেষজ্ঞদের যে মতামত পাওয়া গেছে- তাতে দেখা যায়, রফিকুল ইসলাম মাদানী তার মোবাইলে এডাল্ট ছবি ও ভিডিও নিয়মিত দেখতেন এবং সেগুলো স্টোর করতেন ও লিঙ্ক দিতেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(৫)(ক) ধারা সংযোজন করা হয়েছে। রফিকুল ইসলাম মাদানী মোবাইল ফোনে নিয়মিত পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখাসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। গত ৮ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে জিএমপি’র গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ১১ এপ্রিল বাসন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃত রফিকুল ইসলাম জেলহাজতে রয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ১৫ এপ্রিল রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। জিএমপি’র গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীর কাছ থেকে জব্দকৃত মোবাইল এক্সপার্টের কাছে দেয়া হয়। এতে দেখা গেছে তিনি পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখতেন এবং সংরক্ষণ করতেন। পর্নোগ্রাফি ভিডিও সংরক্ষণ করা একটি দ-নীয় অপরাধ। তাই তার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় পর্নোগ্রাফি মামলার ওই ধারাও সংযুক্ত করা হয়েছে। চার্জশীট দেয়ার সময় ওই দুইটি বিষয়ে আলাদাভাবে চার্জশীট দেয়া হবে। জিএমপি’র গাছা থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এডিসি মোহাম্মদ আহসান, গাছা থানার ওসি ইসমাইল হোসেন ও পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দলাল উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, কথিত ‘শিশু বক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানী বিভিন্ন মাহফিলে রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইন শৃঙ্খলা পরিপন্থী উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করেন। যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়। রফিকুল ইসলাম মাদানীর উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে তার অনুসারীরা গত ২৬ মার্চ ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা করে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণœ করা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘœ ঘটানো, আইন শৃঙ্খলা বিনষ্ট করা, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে শত্রুতাসহ সরকারের প্রতি ঘৃণারভাব সৃষ্টি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশে দেশের সরল ও ধর্মানুরাগী মানুষের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ধর্মী অনুভূতিতে আঘাত করে বক্তব্য প্রদান করেন, যা ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তিনি বাড়িয়ালী এলাকাস্থিত নিজের ‘মারকাজুল নূর আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায়’ বসে দেশদ্রোহ ও সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং নাশকতা কর্মকা- ঘটানোর পরিকল্পনা করতেন। তিনি সরাসরি সশস্ত্র জিহাদের ডাক দেন, এবং এখনই জিহাদের উপযুক্ত সময় বলে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ে উস্কানির ভিডিও চিত্র ফেসবুক, ইন্টারনেট ও ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেল ও পেজে আপলোডের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন বলে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়।
×