ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সীমিত পরিসরে বগুড়া জেলার জন্মদিন পালিত হচ্ছে আজ

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ১৩ এপ্রিল ২০২১

সীমিত পরিসরে বগুড়া জেলার জন্মদিন পালিত হচ্ছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ দুই শ’ বছর আগে আজকের এই দিনে (১৩ এপ্রিল ১৮২১ খ্রিস্টাব্দ) বগুড়া জেলার গোড়াপত্তন হয়। এমনটি দাবি করে বগুড়া সদ্য গঠিত ‘ইতিহাস চর্চা পরিষদ’ বগুড়ার জন্মদিন পালন করছে আজ। কোভিড-১৯’র কারণে অনুষ্ঠান সংক্ষেপ করে সকালে জিলা স্কুল মাঠে বেলুন উড়ানোর পর একটি হোটেলে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে দিনটি বগুড়ার প্রকৃত গোড়াপত্তন কিনা এ নিয়ে সুধীজনের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বগুড়া জেলার গোড়াপত্তনের যে তারিখটি পরিষদ দিয়েছে তা ঠিক নয়। এই তারিখটি কোন গেজেটিয়ার, অন্তর্জালে ওয়েবসাইটে ও উইকিপিডিয়ায় নেই। একটি মাধ্যমে প্রচ্ছন্নভাবে বলা হয়েছে ১৮২১ সালের নবেম্বর মাসে বগুড়া জেলার যাত্রা শুরু। সময়কালটি ছিল ইংরেজ শাসনামলের। বগুড়ার প্রবীণ ব্যক্তি ইতিহাস অনুসন্ধানী আব্দুর রহিম বগ্রা জানিয়েছেন, বগুড়ার গোড়াপত্তন দুই শ’ বছরেরও আগে। মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে বঙ্গদেশের শেলবর্ষ পরগনার অন্তর্ভুক্ত ছিল বগুড়া। মহাস্থানগড়ের খাদেমের কাছে তার সনদ ছিল। তিনি জানান, বগুড়াকে নিয়ে গবেষণার পালা শুরু হয়েছে অনেক আগে। ‘ইতিহাস চর্চা পরিষদ’ আরও বিজ্ঞজনকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারত। তারা যে সময়কালকে বগুড়ার জন্মতিথি বলছেন তা ব্রিটিশ শাসনামলের। ঢাকায় ব্রিটিশ কাউন্সিলে এই বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে অবশ্যই পাওয়া যাবে এবং তা হবে সমৃদ্ধ। তবে এই বিষয়ে ইতিহাস চর্চা পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট রেজাউল হাসান রানু বলেন, ইতিহাস চর্চার কেবল দ্বার উন্মোচন হয়েছে। আগামীতে বছরব্যাপী আয়োজন করা যাবে। বগুড়ার সুধীজনের একজন জানিয়েছেন, ইতিহাস চর্চা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন একজন প্রবীণ চিকিৎসক। এই পরিষদের যারা আছেন তাদের কাউকে এক মাস আগেও বগুড়ার জন্ম ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে দেখা যায়নি। আরেক দিকে বগুড়ায় যারা ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছেন তাদেরও কেউ এই পরিষদে নেই এবং আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পরিষদে প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের কোন গবেষককেও রাখা হয়নি। বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের উপাধ্যক্ষ আব্দুল কাদের পু-্রকথায় লিখেছেন, বগুড়ার উত্তরে মহাস্থানগড় (যা পু-্রনগর) সেই যুগে পূর্ব ভারতীয় সমৃদ্ধ রাজ্য এবং বঙ্গদেশের রাজধানী ছিল। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কার্যকর হওয়ার পর বঙ্গ দেশের সর্ববৃহৎ জেলা রাজশাহী থেকে কয়েকটি এলাকা আলাদা হয়ে বগুড়া জেলা গঠিত হয়। এর মধ্যে রাজশাহী থেকে আসে আদমদীঘি শেরপুর নওখিলা (বর্তমানের সারিয়াকান্দি) রংপুর জেলা থেকে আসে দেওয়ানগঞ্জ গোবিন্দগঞ্জ দিনাজপুর জেলা থেকে আসে লালবাজার (বর্তমানে পাঁচবিবি) জয়পুরহাট ক্ষেতলাল বদলগাছি। এই বিষয়ে আব্দুর রহিম বগ্রা এই ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে যুক্ত করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হিলি। এই এলাকাগুলোও বগুড়ার ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে ছিল। ইতিহাসের উত্থানপতনের ধারাবাহিকতায় ১২৭৯ সাল থেকে ১২৮২ সাল পর্যন্ত দিল্লীর সম্রাট গিয়াস উদ্দিন বলবনের দ্বিতীয় পুত্র নাসির উদ্দিন ওরফে বগ্ড়া খাঁ তৎকালীন বাংলার শাসক ছিলেন।
×