ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওয়েবিনারে বক্তারা

করোনা মোকাবেলায় বাজেটে দিক নির্দেশনা প্রয়োজন

প্রকাশিত: ২৩:০১, ১১ এপ্রিল ২০২১

করোনা মোকাবেলায় বাজেটে দিক নির্দেশনা প্রয়োজন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আগামী অর্থবছরের বাজেটে চার খাতে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ২০২১-২২ অর্থছরের বাজেটে কোন খাতে সরকারের বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত, সে বিষয়ে মতামত জানাতে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ আহ্বান জানান সংগঠনের নেতারা। আসন্ন বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনিদিষ্ট দিক-নির্দেশনার পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজনে ‘প্রাক-বাজেট আলোচনা : অর্থবছর ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এবং ব্র্যাকের চেয়ারপার্সন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন। ড. মসিউর রহমান বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটিকে সকল জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, শুল্ক বা করের হার গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে না থাকলে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে। তিনি অর্থনৈতিক কর্মকা- ব্যাহত না করে কি হারে রাজস্ব বাড়ানো যায় তার একটি দিক-নির্দেশনা সরকারকে প্রদানের আহ্বান জানান। উপদেষ্টা বলেন, ৭-১০ বছরের জন্য একটি টেকসই ও সহনশীল কর কাঠামো দেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও তিনি দেশের জিডিপিতে করের অবদান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন এবং বিভিন্ন খাতকে বিভিন্ন হারের কর অব্যাহিত দেয়ার কারণে জিডিপিতে করের অবদান কমছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি উল্লেখ করেন, ট্যাক্সের হার নির্ধারণ ও সরকারের ব্যয়ের বিষয়ে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে, সেই সঙ্গে নাগরিকদের ওপর আরোপিত ট্যাক্স সেই নাগরিকের নিকট গ্রহণযোগ্য কিনা সে বিষয়ে নজর দেয়া প্রয়োজন। উপদেষ্টা আরও বলেন, বিভিন্ন পর্যায়ে মূসক আদায়ের ফলে অনেক ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে এর হার বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে ঘন ঘন করের হার বাড়ানো-কমানো ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন। ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাজেট শুধু কর আহরণের বিষয় নয়, এটি সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা-ের একটি রূপরেখা। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছি, যেটা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এবং বাজেটে করোনা পরিস্থিতি উত্তরণের একটি সুনিদিষ্ট দিক-নির্দেশনা থাকতে হবে, সেই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিও বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, দেশের এসএমই খাতকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে এবং এসএমই খাতের জন্য আর্থিক সহায়তা নিশ্চিতকল্পে মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউটগুলোকে (এমএফআই) বিবেচনা করা যেতে পারে এবং প্রণোদনা প্যাকেজ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের নিকট পৌঁছানো যায়, সে লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক ও রেমিটেন্সের পর আমাদের প্রবৃদ্ধির নিয়ামকগুলো কি হবে, সেগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে আমাদের একটি যুগান্তকারী পরিকল্পনা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন, যেখানে সরকার ও বেসরকারী খাত একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাত নিয়েও চিন্তা করতে হবে এবং বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকল্পে বেসরকারী বিনিয়োগ খুবই জরুরী। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, সরকার ব্যবসাবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থা, শিল্পায়নের বিকাশ এবং উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে যেতে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। করোনা পরবর্তী অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের গুরুত্ব বিবেচনায় বেসরকারী খাতের প্রত্যাশা পূরণে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ যেমন আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর, আর্থিক খাত, শিল্প ও বাণিজ্য এবং জ্বালানি, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য অবকাঠামো খাত প্রভৃতি খাতসমূহকে বাজেটে গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। ওয়েবিনারে ৪টি খাতের ওপর সরকারী ও বেসরকারী খাতের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করে তাদের মতামত প্রদান করেন। ‘আর্থিক খাত’ সেশনের আলোচনায় আইপিডিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, নগদের সিইও রাহেল আহমেদ এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম অংশগ্রহণ করেন। মমিনুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে বন্ড মার্কেট উন্নয়নে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জন্য ব্যাংকের ওপর চাপ কমানো সম্ভব হবে। নাসের এজাজ বিজয় বলেন, এসএমইদের ঋণ সহায়তা পেতে হলে একটি স্কিম থাকা প্রয়োজন। তিনি ভূমির মৌজা ভ্যালু কমানোর প্রস্তাব করেন, সেই সঙ্গে রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য সহায়তা আরও বাড়ানো আহ্বান জানান। রাহেল আহমেদ বলেন, ডিজিটাল লেনদেন কার্যক্রমে প্রণোদনা দিতে হবে এবং ডিজিটাল লেনদেনে মোবাইল অপারেটরদের যে চার্জ আছে তা কমানো প্রয়োজন, সেই সঙ্গে স্মার্ট ফোন আমদানি ও উৎপাদনে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করেন। আসিফ ইব্রাহীম বলেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার কমানো প্রয়োজন এবং লিস্টেড কোম্পানির কর্পোরেট কর হার কমানো প্রয়োজন। তিনি এসএমই কোম্পানিসমূহকে স্টক মার্কেটে আসার জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার ৫ বছর পর্যন্ত ১০ শতাংশ হারে কর সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করেন। ‘শিল্প ও বাণিজ্য’ সেশনের আলোচনায় বাংলাদেশ সুপার মার্কেট ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইনাম আহমেদ, বিকেএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও প্লামি ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফজলুল হক, বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জসিম উদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. মোঃ মাসুদুর রহমান অংশগ্রহণ করেন। কাজী ইনাম আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০০টির মতো সুপারশপ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতেও সুপারশপসমূহ নির্ধারিত মূল্যে পণ্য প্রদান করছে এবং অসংখ্য তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি রয়েছে। সুপার মার্কেটের পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের ফলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং অনেক সুপারশপ বন্ধ হয়ে গেছে। মোঃ ফজলুল হক বলেন, গার্মেন্ট খাতে সবুজ কারখানা বাংলাদেশে পৃথিবীতে আলোড়ন তৈরি করছে, তবে ইটিপি স্থাপনে প্রয়োজনীয় ক্যাপিটাল মেশিনারিজ ও কেমিক্যাল আমদানিতে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যা অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ তৈরির জন্য বাজেটে পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন এবং করোনা মোকাবেলায় প্রণোদনার প্যাকেজের ঋণের টাকা ফেরতের সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, করোনা মোকাবেলায় সকল শিল্প খাতের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ সুবিধা অব্যাহত থাকা প্রয়োজন, সেই সঙ্গে বিশেষ করে কুটির শিল্পের জন্য ভ্যাট ও ট্যাক্স সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে বাজেটে সমন্বয় থাকা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন। ড. মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান ২৫ শতাংশ এ অবদান বাড়াতে না পারলে ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হতে পারে। তিনি জানান, করোনায় দেশের এসএমই খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ঘোষিত প্রণোদনার প্যাকেজের ৬৮ শতাংশ এ খাতের উদ্যোক্তাদের মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসএমই খাতে মোট কর্মসংস্থানের ৮০-৮৫ শতাংশ সুযোগ তৈরি হয়, কিন্তু করোনার কারণে এ খাতে কর্মী ছাঁটাই এবং মজুরি কমার প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় বলে মত প্রকাশ করেন। ‘ট্যাক্সেশন ও ভ্যাট’ সেশনের আলোচনায় কেপিএমজি-এর সিনিয়র পার্টনার আদিব হোসেন খান, এফসিএ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সদস্য (কাস্টমস পলিসি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, সদস্য (ভ্যাট নীতি) মোঃ মাসুদ সাদিক এবং সদস্য (কর নীতি) মোঃ আলমগীর হোসেন অংশগ্রহণ করেন। আদিব হোসেন খান বলেন, আমাদের সোর্স ট্যাক্স কমাতে হবে এবং একটি স্বচ্ছ আপীল সিস্টেম চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ভ্যাট বিষয়ে ইনপুট রিবেট নিশ্চিতকরণেরও প্রস্তাব করেন। সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া বলেন, এনবিআরের ৩ লাখ কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সে বিষয়টিতে সকলকে বিবেচনার আহ্বান জানান। তিনি এসএমই খাতকে আমদানি পর্যায়ে সহায়তা প্রদানের আশ^াস প্রদান করেন এবং কৃষিভিত্তিক খাতকে সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়াও ট্রেড ফেসিলিটেশন চুক্তির কমপ্লায়েন্স বিষয়টি বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হবে তিনি অবহিত করেন। মোঃ মাসুদ সাদিক বলেন, ২০১৯ সালের জুলাই হতে ভ্যাট আইন চালুর পর থেকে রেজিস্ট্রেশন ও ভ্যাট রিটার্ন বেড়েছে এবং বর্তমানে ভ্যাট রেজিস্টার্ড প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ লাখ ৫৩ হাজার। রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে ১ লাখ ৫৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের এবং অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে ১ লাখ ৮ হাজার প্রতিষ্ঠানের। তিনি বলেন, ভ্যাট প্রদানে অটোমেশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তিনি সকলকে অনলাইনে ভ্যাট প্রদানের আওতায় চলে আসার আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে ভ্যাট প্রদান হয়রানি কমবে। ভ্যাট প্রদানে অটোমেশন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ভ্যাটের আওতা বাড়াতে হবে ফলে বর্তমানে যারা ভ্যাট দিচ্ছেন তাদের ওপর চাপ কমবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ৩০০০ ইএফডি মেশিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্থাপন করা হয়েছে এবং এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ হাজার ইএফডি মেশিন সংস্থাপন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিত মোকাবেলায় সরকারের বিপুল অঙ্কের প্রয়োজন এবং এটি মেটাতে রাজস্ব বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই, তবে এমন বাস্তবতায় করদাতাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, সরকার কর হার ক্রমান্বয়ে কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ‘অবকাঠামো (জ্বালানি, লজিস্টিক ও স্বাস্থ্য)’ সেশনের আলোচনায় ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ফাইজুর রহমান, প্রাইভেট ই জেড এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ এস এম মাইনুদ্দিন মোনেম এবং বুয়েটের পেট্রোলিয়াম এ্যান্ড মিনারেল রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম অংশগ্রহণ করেন। মোঃ ফাইজুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছর আমাদের স্বাস্থ্য খাতে ক্রমাগত অগ্রগতি হচ্ছে, তবে আমাদের দেশে এ খাতে দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে কাজ করতে হবে এবং এ খাতকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কিছু সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রয়োজন। ফাইজার রহমান বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং এ খাতের অবকাঠামো উন্নয়ন চালাতে হবে। এ এস এম মাইনুদ্দিন মোনেম বলেন, অবকাঠামো খাতের চলমান প্রকল্পসমূহের কাজ শেষ হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির আরও উন্নয়ন পরিলক্ষিত হবে। তিনি বলেন, ইপিজেড এলাকায় বিদ্যুত, জ্বালানি, গ্যাস সংযোগ ও রাস্তাঘাট তৈরির কাজ সময় মতো শেষ করতে হবে। অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের কি ধরনের জ্বালানি প্রয়োজন, সেটি সঠিকভাবে নির্ধারণ করে সে মাফিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বস্তবায়ন খুবই জরুরী। তিনি বলেন, বাজেটে এলএনজি খাতে বিদ্যমান ট্যাক্স ও ভ্যাট পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে জ্বালানি, বিদ্যুত, গ্যাস, পানি অন্যান্য অবকাঠামো সেবা দ্রুততম সময়ে নিশ্চিতকরণের প্রস্তাব করেন। মুক্ত আলোচনায় বিল্ডের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, আমরা বর্তমানে মহাসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, এ অবস্থায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে চাহিদা ধরে রাখা প্রয়োজন। তিনি শিল্প খাতে গবেষণা কাজে ব্যবহৃত বরাদ্দকে কর অব্যাহতি দেয়ার প্রস্তাব করেন। এছাড়াও উত্তরা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মাতিউর রহমান আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারীর কারণে সংবাদপত্র মারাত্মক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, সংবাদপত্র শিল্প প্রায় ৩৭ শতাংশ কর দিয়ে থাকে, যার মধ্যে কর্পোরেট কর সাড়ে ৩২.৫ শতাংশ এবং নিউজ প্রিন্ট আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ। তিনি নিউজপেপার আমদানি শুল্ক শূন্য হারে নামিয়ে আনার আহ্বান জানান। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারা চলমান বজায় রাখার লক্ষ্যে আগামীতে এ ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
×