বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ে একদিনে মৃত্যুর নতুন রেকর্ড হয়েছে। সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন ৭৭ রোগী। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে নয় হাজার ৬৬১ ব্যক্তি। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) একদিনে সর্বোচ্চ ৭৪ রোগী মারা যায়। একই সময়ে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৪৩ জনের মধ্যে। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৯৩৭। গত এক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হলো ছয় হাজারের কম। তবে আগেরদিনের চেয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষাও কম হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার। আর গত ২৪ ঘণ্টার আগের ছয়দিনের মধ্যে পাঁচ দিনই সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে সাত হাজারের বেশি, একদিন কেবল শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮৫৪টি। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডাঃ মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার স্বাক্ষরিত কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের সরকারী-বেসরকারী মিলিয়ে আগেরদিনের মতোই ২৪৩টি আরটি-পিসিআর, জিন এক্সপার্ট ও এ্যান্টিজেন ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ২৫ হাজার ১৮৫টি। আগেরদিনের নমুনাসহ মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৬ হাজার ৭৭টি। আগেরদিন মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ৩১ হাজার ৬৫৪টি। এ নিয়ে দেশে মোট ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার ৪৮৯টি নমুনা পরীক্ষা হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে ৫ হাজার ৩৪৩টি নমুনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৯৩৭ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন রেকর্ড ৭৭ ব্যক্তি। এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমণ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৯ হাজার ৬৬১ রোগী। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪২ শতাংশ। এই ৭৭ জনের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৫৩ পুরুষ এবং ২৪ নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৭৭ মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৪৪ জন ষাটোর্ধ, ২২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৫০ বছর। এছাড়া ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী পাঁচ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী দুইজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী তিনজন এবং ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে এই সময়ে।
মৃত এই ৭৭ জনের ৫১ জনই ঢাকা বিভাগের, চট্টগ্রাম বিভাগের ১৫ জন। এছাড়া রংপুর বিভাগের চার, রাজশাহী বিভাগের তিন, খুলনা বিভাগের দুই এবং একজন করে মারা গেছেন বরিশাল ও সিলেট বিভাগে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৮৩৭ ব্যক্তি। আগেরদিন এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৫১১ ব্যক্তি। সে হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় আগেরদিনের তুলনায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে ৩২৬ ব্যক্তি। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হলেন ৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৮ ব্যক্তি। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পরিমাণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার হার কমছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সারাদেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন মোট ৭০ লাখ ১৪ হাজার ৫০৯ ব্যক্তি। সে হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ১৪ হাজার ৮৪৭ ব্যক্তি। শুক্রবার (৯ এপ্রিল) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভ্যাকসিন প্রয়োগ বন্ধ ছিল। ফলে প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহীতার সংখ্যা বৃহস্পতিবারের মতোই রয়েছে ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ৫০৭ ব্যক্তি।
