ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন মামুনুল, মাদানী কারাগারে

প্রকাশিত: ২১:৫০, ৯ এপ্রিল ২০২১

যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন মামুনুল, মাদানী কারাগারে

শংকর কুমার দে ॥ হেফাজতের তাণ্ডব মোকাবেলায় রাবার বুলেটের পরিবর্তে প্রয়োজনে আরও ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ। কথিত শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেফতারের পর তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের এবং আদালতের নির্দেশে ওই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে সহিংস তাণ্ডবের উস্কানির ঘটনায় যে কোন সময়ে গ্রেফতার হতে পারেন নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। মামুনুলের নারী কেলেঙ্কারির মতোই রফিকুলেরও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা সামনে আসায় তা তদন্ত করছে পুলিশ। মামুনুলের নারী সঙ্গী জান্নাত আরা ঝর্ণার আরও একটি নতুন ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বৃহস্পতিবার মুন্সীগঞ্জে পূর্বনির্ধারিত স্থানে হেফাজতের সমাবেশ স্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং হেফাজত সমাবেশ না করার ঘোষণা দিয়ে পিছটান দিয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে হেফাজতে ইসলামের সহিংস তাণ্ডব মোকাবেলায় পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তাদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে পুলিশ সদর দফতরে। সহিংস তাণ্ডব মোকাবেলায় রাবার বুলেটে সম্ভবপর না হলে আরও বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের আইজি ড. বেনজীর আহমেদ। সহিংসতা ঠেকাতে কোথাও পুলিশের ত্রুটি বা ঘাটতি ছিল কি না, তা খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে পুলিশকে মনোবল শক্ত রাখারও তাগিদ দেন আইজিপি। বুধবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে আইজিপি এসব কথা বলেন পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের। এতে দেশের সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি), মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার, জেলার পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) অংশ নেন। পুলিশ সদর দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে দেড়টা পর্যন্ত। বৈঠকে আইজিপি সহিংসতা দমনে কঠোর অবস্থান নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। বিপরীতে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আইজিপিকে আশ্বস্ত করেছেন, তারা আগামী দিনগুলোতে কোন পরিস্থিতি তৈরি হলে তা আরও কঠোরভাবে মোকাবেলার ব্যবস্থা নেবেন। আইজিপি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়ে সারাদেশের দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। বৈঠকের একপর্যায়ে বেনজীর আহমেদ ফরিদপুরের সালথার ঘটনার বিষয়ে জানতে চান জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আলীমুজ্জামানের কাছে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার আইজিপিকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। তখন আইজিপি এসপির উদ্দেশে বলেন, আরেকটু ভালভাবে চেষ্টা করলে ভাল হতো। আইজিপি চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর অঞ্চলে অথবা অন্য জেলায় আবার হামলা হতে পারে বলে উল্লেখ করে পুলিশকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেন বলেও জানা গেছে। আইজিপির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে গত শনিবার হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের ঘেরাওয়ের প্রসঙ্গটিও আসে। তিনি বলেন, মামুনুলকে পুলিশের কাছ থেকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল। এ কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইজিপি সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনার বিষয়ে বলেন, কোথাও পুলিশের ত্রুটি বা ঘাটতি ছিল কি না, এক জায়গায় পুলিশ সফল, আরেক জায়গায় কেন ব্যর্থ হয়েছে, তা তদন্ত করে বের করতে হবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আইজিপি স্যার বলেছেন, হেফাজতের সহিংসতায় বেশি গুলি চালানো হলেও পরিস্থিতি সেভাবে নিয়ন্ত্রণে ছিল না। সহিংসতায় কারা উস্কানি দিয়েছে, কারা অংশ নিয়েছে, তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে সহিংস তাণ্ডবে মেতে উঠেছে হেফাজতে ইসলাম। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, ভূমি অফিস, থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। এমনকি পুলিশের হাত থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। হেফাজতের সহিংস তাণ্ডবের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসন উদ্বিগ্ন। দেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও সহিংসতায় গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিনদিনে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এদিকে গত সোমবারও ফরিদপুরের সালথায় উপজেলা কমপ্লেক্স ও থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। এমনই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন আইজিপি। ১৪৪ ধারা মুন্সীগঞ্জে॥ হেফাজতে ইসলাম মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে সমাবেশের আয়োজন করেছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমাবেশস্থলসহ আশপাশে মোতায়েন করা হয় যাতে সভা না করতে পারে। এরপর প্রশাসন সমাবেশ স্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপের পর সমাবেশ না করার ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলাম। মামুনুল যে কোন সময়ে গ্রেফতার হতে পারেন॥ পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন। ইতোমধ্যে মামুনুল হকের গ্রেফতারের ব্যাপারে সরকারের হাইকমান্ড থেকে সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়েছে বলে ওই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি। হেফাজতে ইসলামের এই কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিবের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মূলত হেফাজতের আমির আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের নেতৃত্বে আসে জুয়ানেদ বাবুনগরী এবং মামুনুল হক। এরা সরকারের বিরুদ্ধাচরণ শুরু করে। যে কোন বিষয়েই তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আর এই ঘটনাগুলোতে মামুনুল হকের বিরাট হাত ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে হেফাজত। বিশেষ করে বায়তুল মোকাররমে তারা নারকীয় তাণ্ডব চালায়। আর এই আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মামুনুল হক। হাজার হাজার মাদ্রাসার শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসে এবং ২৭ মার্চ সারাদেশে হরতাল পালনের নামে একাত্তরের কায়দায় তাণ্ডব চালায়। এ তাণ্ডবের ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবড়িয়ায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তারা সরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাংচুর করে। এরইমধ্যে মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে প্রমোদবিহারে গিয়ে এক নারীসহ ধরা পড়েন। সেখানে মামুনুল হক যদিও সেই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন, কিন্তু সে তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এমনকি এই দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়ে তার প্রথম স্ত্রীও জানত না। এভাবেই অনেকদিন ধরেই তিনি নানা রকম মিথ্যার আশ্রয় ও প্রতারণা করে আসছিলেন। এরইমধ্যে সোনারগাঁও থানা এলাকায় সহিংস তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে সোনারাগাঁও থানায় মামুনুল হকসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অন্তত আরও তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মাদানীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ॥ কথিত শিশু বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে তার বিরুদ্ধে গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে র‌্যাব। এরইমধ্যে আটক মাদানীকে থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে তোলার পর আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে গাছা থানা পুলিশ। বুধবার সকালে নেত্রকোনার গ্রামের বাড়ি থেকে রফিকুল ইসলামকে আটক করে র‌্যাব। এরপর তাকে গাজীপুরের গাছা থানায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হেফাজত নেতা মামুনুল হক এক নারীসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে জনতার হাতে আটক হওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়াসহ ওয়াজের নামে অন্য ধর্ম, নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকার, দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধান নিয়ে আপত্তিকর মনগড়া বক্তব্য দিয়ে ওয়াজের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত ২৫শে মার্চ শাপলা চত্বর থেকে আটক করা হলে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান বিতর্কিত এই বক্তা। গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার ইলতুৎমিশ সাংবাদিকদের বলেন, ওই মামলায় আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে মাদানীকে। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ও র‌্যাবের সদস্যদের প্রহরায় গাজীপুর জেলা কারাগার নেয়া হয় মাদানীকে। তিনি জানান, গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজারের কলমেশ্বর এলাকায় একটি কারখানা চত্বরে গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক ওয়াজ মাহফিলে সরকারকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন মাদানী। ওই ঘটনায় বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে গাছা থানায় মামলা হয়েছে। র‌্যাব-১ এর ডিএডি আব্দুল খালেক বাদী হয়ে ওই মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘আসামি গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা থেকে ১০টায় গাজীপুরের গাছা থানাধীন বোর্ড বাজারের কলমেশ্বরর এলাকার শীতক ফ্যাক্টরির ভেতর ওয়াজ মাহফিলে বক্তা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করে, যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়।’ তার ‘উস্কানিমূলক বক্তব্যের ফলে’ ২৬ মার্চ ঢাকায় বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সংগঠিত হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। গাজীপুর জেলা কারাগারের সুপার মোঃ বজলুর রশিদ আকন্দ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে মাদানীকে কারাগারে বুঝে পেয়েছেন তারা। গাজীপুরে তার মাদ্রাসায় তালা ॥ গাজীপুর মহানগরের বাড়িয়ালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মারকাজুন নূর আল ইসলামিয়া নামে একটি আবাসিক মাদ্রাসা রয়েছে। হাফেজ ক্কারী মোঃ রফিকুল ইসলাম মাদানী ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ও পরিচলক। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে মাদাসাটির প্রধান ফটকে ভেতর থেকে দুটি তালা ঝুলছে। রফিকুলের ফোনে পর্নো ভিডিও, বিয়ে নিয়েও অস্পষ্টতা ॥ ‘শিশু’ বক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসছে তার নানা ঘটনা। বক্তা হিসেবে আলোচিত এই ব্যক্তির ব্যক্তিজীবনও বেশ আলোচিত। তার মোবাইল ফোনে মিলেছে বেশ কিছু পর্নো ভিডিও; রয়েছে বিয়ে নিয়েও অস্পষ্টতা। বুধবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় ২৬ বছর বয়সী রফিকুল মাদানীকে, এরপর বিকেলে তার বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব, তার মোবাইল ফোনও তল্লাশি করা হয়। র‌্যাবের একটি সূত্র জানিয়েছে, রফিকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে তার ফোনে তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু পর্নো ভিডিও পাওয়া গেছে। ‘আসমা বেগম’ নামের এক নারীকে তিনি বিয়ে করেছেন বলে যে দাবি করেছেন তা নিয়েও নানা তথ্য পাওয়া গেছে। ওই নারীর সঙ্গে রফিকুলের সামাজিকভাবে বিয়ে হয়নি। বিয়ে নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুল জানান, প্রতিবার ওয়াজের জন্য তিনি ১৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন। ওয়াজ করেই মাসে ৫-৬ লাখ টাকা আয় করেন তিনি। মাঝে মাঝে বিমান ও হেলিকপ্টারে গিয়ে ওয়াজ করেন। যারা তাকে নিমন্ত্রণ জানান, তারা এর খরচ বহন করেন। ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে হঠাৎ পরিচিত হয়ে ওঠা রফিকুল ইসলাম কিছুটা অস্বাভাবিক খর্বকায়, বালকসুলভ চেহারা ও কোমল কণ্ঠস্বরের অধিকারী। তার নিজের ভাষ্যমতে, ‘১৯৯৫ সালে আমার জন্ম। কে বলছে আমি শিশু ? আমার বয়স ২৬ বছর। রফিকুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। স্থানীয় স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু হলেও পরে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন ও নূরানি, হেফজ পড়েন। এরপর আট বছর কিতাবখানায় পড়েন। মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করতেন রফিকুল। তিনি দাওরায়ে হাদিস পড়েছেন রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদ্রাসায়। একইসঙ্গে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অঙ্গসংগঠন যুব জমিয়তের নেত্রকোনা জেলার সহ-সভাপতি। নেত্রকোনার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদ্রাসার পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন ‘শিশু বক্তা’। রফিকুলের নামের শেষে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। সাধারণত সৌদি আরবের মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করেন, তাদের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ যুক্ত করা হয়। অভিযোগ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করেই নিজের নামের সঙ্গে ‘মাদানী’ শব্দ যুক্ত করেছেন তিনি। এরইমধ্যে ‘মাদানী’ শব্দ প্রত্যাহার করতে রফিকুলকে আইনী নোটিস পাঠিয়েছেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। তার পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী শরীফুল হাসান খান গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই নোটিস পাঠান। বিতর্কিত বক্তা হওয়ায় রফিকুল ইসলামকে ওয়াজকারী বক্তাদের সংগঠন রাবেতাতুল ওয়ায়েজিন বাংলাদেশের সদস্য করা হয়নি। বরং সংগঠনটির পক্ষ থেকে তাকে বিভিন্ন সময় অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য না দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ঝর্ণার নতুন ফোনালাপ॥ হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ উঠে এসেছে তার সেই নারী সঙ্গী জান্নাত আরা ঝর্ণার একটি কথোপকথনে। সোনারগাঁওয়ের স্থানীয় এক হেফাজত নেতার সঙ্গে ঘটনার দুই দিন পর প্রায় আট মিনিট ১১ সেকেন্ড কথা বলেন ঝর্ণা। ঘটনার দিন স্থানীয় জনতা তাদের ঘেরাও করার সময় কে কী বলেছিলেন এবং এর পরবর্তী ঘটনা প্রবাহও উঠে এসেছে তাদের কথোপকথনে। এমনকি ঝর্ণার বোরকার রং নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, সেই বিষয়টিও পরিষ্কার করেছেন ঝর্ণা নিজেই। আলাপে ঝর্ণা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মামুনুল হক কারও কারও কাছে তাকে না চেনার বিষয়ে বলেছেন। এতে তিনি বিপদে পড়ে যেতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেন, ঝর্ণার এই কথোপকথনে স্পষ্ট হয় যে মাওলানা মামুনুল হক নারী সঙ্গীসহ আটক হওয়ার পর থেকে একাধারে মিথ্যাচার করে চলেছেন। ওই নারীর সঙ্গে তার বৈধ কোনও সম্পর্ক ছিল না। এখন ‘সম্মান’ বাঁচাতে তিনি অকপটে একটার পর একটা মিথ্যা বলে চলছেন। ফাঁস হওয়া এই কথোপকথনের অডিও ক্লিপ পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হলো ঃ জান্নাত আরা ঝর্ণা : এইটার ফিনিশিং কী হবে ? জনৈক হেফাজত নেতা : এহন একটা খবর পাইলাম। যে এহসান সাব বলল যে, তুমি একটু থানায় যাও। থানার পরিস্থিতিটা কী, মামলা করবে আরকি। এই জন্য আমি থানায় যাচ্ছি। জান্নাত আরা ঝর্ণা : আচ্ছা কীসের জন্য মামলা করবেন ? জনৈক হেফাজত নেতা : এই যে তারা বেইজ্জতি করছে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : এজন্য মামলা করবে ? এইটা মিটাবে কীভাবে ? এটা তো সরকার, থানাতে গেলে তো ডকুমেন্ট চাইবে। তখন কীভাবে কী করবেন ? জনৈক হেফাজত নেতা : এখন আজকে তিনটার সময় সাংবাদিক সম্মেলন আছে তো। তখন বলা যাবে কী হবে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : আচ্ছা, সাংবাদিক সম্মেলন আছে। সবকিছু ঠিক আছে। যদি আমাকে এর ভেতরে ডাকে তাহলে অবশ্যই কিন্তু.. মানে আমার ইনফর্ম না করে আবার হঠাৎ করে ডাইকেন না। তাহলে জনৈক হেফাজত নেতা : এখন এখানে হুজুরে নাম বলছে আমেনা তৈয়বা। এখন আমি যখন আপনাকে বলছি আপনার নাম কী আপনি বলছেন ঝর্ণা। জান্নাত আরা ঝর্ণা : এই বিষয়টা আমি ভাল করে আপনাকে ক্লিয়ার করতেছি। যেটা হচ্ছে যে হুজুর যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসছিল, যখন হুজুর প্রথম একদম প্রথম দফা তারা যখন জেরা করতেছিল, তখন সে বলছে আমার স্ত্রীর নাম হচ্ছে আমেনা তৈয়বা। ঠিক আছে। তারপর যখন তারা চলে গেল, টিএনও সাহেব আসল, এসআই আসল, সাংবাদিকদের সবগুলারে বের করে দিল, তখন আমি শুনতেছিলাম যে হুজুর বলছে যে এটা আমার সেকেন্ড ওয়াইফ। আমি বিয়ে করেছি আমি কোনও অবৈধ কিছু করি নাই। যখন তিনি সেকেন্ড ওয়াইফ বলছে তারপর আমাকে জেরা করা হইছে। এখন আমি কীভাবে ফেইক বলি। আমি তো তার বাবার নাম জানি না। আমি কী করে কী বলব, বলেন ? আমাকে তো আলাদা জেরা করছে। ঝর্ণা : এটা নিয়ে লাস্টে কি ? জনৈক হেফাজত নেতা : তারপর মনে করেন আমাগো লোকজন বেশি আবেগ দেখাইতে গিয়া আপনার ছবিগুলা বিকৃত করতেছে। এইটা ওইটা বিভিন্ন কথাবার্তা লেখতেছে। এইটা জান্নাত আরা ঝর্ণা হইতে পারে না। এগুলো নিয়ে লেখালেখি করতেছে। জিনিসটা আরও বেশি বাড়তেছে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : এই জিনিসটা ক্লিয়ার হওয়া দরকার। জনৈক হেফাজত নেতা : আমি মনে করি ওয়াশ রুমে আপনার যে ইন্টারভিউ নিছে। আপনার নাম-ঠিকানা, এইটা তো সত্য তাই না ? জান্নাত আরা ঝর্ণা : এইটা হান্ডের্ড পারসেন্ট সত্য। জনৈক হেফাজত নেতা : আর ওই যে বোরকার কালার নিয়ে যে কেউ বলতেছেন কালা বোরকা, কেউ বলতেছেন ব্লু কালার। আমি সঙ্গে যখন ছিলাম তখন তো দেখলাম ব্লু কালারের বোরকাটা। জান্নাত আরা ঝর্ণা : ব্লু কালারের ওপরের খিমারটা (হিজাব) ছিল, নিচের কালারটা ছিল কালো কালার। এইটা লাস্টে কী হইতে পারে ? আপনার কী ধারণা হচ্ছে ? জনৈক হেফাজত নেতা : আমাদের ধারণা এখন মানে আমার যেইটা এখন এগুলা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলেই আরও বেশি সমস্যা। হুজুরে এখন আসবে শুনছি, আমি যেভাবে পারছি যে হুজুর এই মুহূর্তে সোনারগাঁও না আসাটা ভাল। আসার দরকার নাই। যতটুকু হইছে হইছেই। কারণ এখানে ক্ষয়ক্ষতি তো কম হয় নাই। কারণ জিনিসটা আরও বাড়বে। মানে প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ কইরা এই মুহূর্তে পারব না। যতটুকু করছি ততটুকুই আল্লাহ উদ্ধার করতে পারছে দুইজনকে। এইটাই বেটার ছিল। জান্নাত আরা ঝর্ণা : হুজুর আপনারা মনে করতেছেন যে ওনার নরম হওয়া দরকার ? জনৈক হেফাজত নেতা : নরম বলতে কী ওইভাবে নরম না। মানে যখন গরম হওয়ার দরকার গরম হইতেই হইবো। আমরা চাচ্ছি না যে ইচ্ছাকৃতভাবে জিনিসগুলো আরও ছড়াইতে। এই আর কি। জান্নাত আরা ঝর্ণা : ওহ। জনৈক হেফাজত নেতা : কারণ সোনারগাঁও যদি আবার আসে, স্বাভাবিক প্রবলেম হইতে পারে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : আপনারা বললে কি সে শুনবে না ? জনৈক হেফাজত নেতা : আমি চেষ্টা করতেছি, আমার মুরুব্বিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতেছি, দেখি কী বলে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : সে আবার কথায় কথায় অস্বীকার করছে আমি তাকে সে আমাকে চিনে না। জনৈক হেফাজত নেতা : না, এখন তো অস্বীকার না, এখন যেখানে যেখানে অস্বীকার করছে মানে কী বলব। মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন মনে করেন মাথা ঠিক থাকে না। বুঝেন নাই ? জান্নাত আরা ঝর্ণা : হ্যাঁ। জনৈক হেফাজত নেতা : উনি দেখতেছে যে ওনার যে মোবাইলটা দিয়ে কথা বললে ফোন ফাঁস হইয়া যাইতেছে, আবার এই নাম্বার দিয়াই সবার লগে কথা বলতেছে। এইটা সঙ্গে সঙ্গে ফোনালাপটা দিয়া দিতাছে সাংবাদিকদের, ইন্টারনেটে। এই হলো অবস্থা। জান্নাত আরা ঝর্ণা : ওই কাজগুলো নতুন কারও ফোন দিয়া ফোন দিতে পারতেছে না ? জনৈক হেফাজত নেতা : এটাই তো। এই নাম্বার দিয়া ওনার ওয়াইফরে ফোন দিছে যে তুমি বিষয়টা টেনশন কইরো না। সাক্ষাতে বলব। সে আমার স্ত্রী না। তোমার কাছে আইসা আমি বলতেছি। এইটাতে গোমর ফাঁস হইয়া গেছে। যে হুজুর প্রথম স্ত্রীর কাছে নাকচ করছে। এইটা মানি প্রচার হইছে না ? একটা দুইটা ইয়া করা যায়। কিন্তু প্রবলেম। জান্নাত আরা ঝর্ণা : ওইখানে বলছে মানে বউ মানে ওইখানে যেন ঠিক থাকে। জনৈক হেফাজত নেতা : উনি বলছে, যে বড় খালাম্মাকে বলতেছে আরকি, টেনশন কইরো না। আমি সাক্ষাতে আইসা বলতেছি। সে অন্যের স্ত্রী, আমার স্ত্রী না। হয়ত বড় খালাম্মারে সান্ত¦না দিতে কথা বলতেছে। পরে বলছে ঠিক আছে, তুমি বাসায় আসো। এই কথাটা ফাঁস হয়ে গেছে। আবার মনে করেন ওনার বোন বলছে যে, ভাবি, খালাম্মারে বলতেছে যে ভাবি, আপনি বলবেন যে আমি জানি, সবকিছু জানি। আমাদের পারিবারিক আম্মা থাকা অবস্থাতেই বিয়ে হইছে। এইটাও ফাঁস কইরা দিছে। কোনকিছু তো থাকতেছে না। এই নাম্বারটা দিয়ে কথা বললেই তো ফাঁস হইয়া যাইতেছে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : আপনারা যা বলতেছেন, আমার মনে হইতেছে উনি পুরা নিজে ফাঁইসা গেছে। জনৈক হেফাজত নেতা : নিজের লাইগাই ফাঁসতেছে। জান্নাত আরা ঝর্ণা : হ্যাঁ। জনৈক হেফাজত নেতা : এখন আমরা এত মর্মাহত, এত কষ্টে আছি। ভাবছি, উনি তো বিপদেই আছে, উনি কেমন কষ্টে আছে। এখন আমরা কিছু করতে পারতেছি না। আমি হ্যাং হয়ে গেছি। বুঝছেন না? আর আপনি কোনও সমস্যা নাই তো না? জান্নাত আরা ঝর্ণা : এখন কোনও সমস্যা নাই। কিন্তু আপনাদের মুখ দিয়ে যা শুনতেছি এভাবে যদি বলে তাহলে তো আমি আমার মানে প্রবলেমে পড়ে যাব। জনৈক হেফাজত নেতা : না, প্রবলেম কী এখন। আপনার আর হুজুরের কথা তো এক থাকতে হবে, তাই না? জান্নাত আরা ঝর্ণা : আমার কথা আর হুজুরের কথা এক থাকতে হবে। কিন্তু সে এখন একেকজনের কাছে একেক কথা বলতেছে। সেইগুলো ফাঁসও হয়ে যাইতেছে। তাহলে আমার কথা আর তার কথা কি এক থাকবে? উনি একসঙ্গে কেন অটল থাকতে পারল না? টিএনও সাহেব যখন বলল, যখন ওসি সাহেবকে বলল, আমি রেকর্ড করে রাখতে পারি নাই। তখন সাংবাদিক ছিল না। তখন উনি যখন এই কথাগুলো বলল, তখন উনি এই কথাগুলোর ওপর অটল থাকলেই তো হয়ে যেত। সত্যের জানেন সব সময় না জয় হয়, আর মিথ্যার সব সময় অপমৃত্যু হয়। উনি কেন মিথ্যার আশ্রয় নিলো ? স্ত্রীকে খুশি করতে সীমিত পরিসরে সত্য গোপন করা যায়- মামুনুল ॥ আমি একাধিক বিয়ে করার ক্ষেত্রে আমার স্ত্রীকে কিভাবে ম্যানেজ করব, তার সঙ্গে আমি কোন পরিস্থিতিতে কোন কথা বলে সান্ত¡না দেব সেটি আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসলামী শরিয়তে এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ এখতিয়ার দেয়া হয়েছে। স্ত্রীকে খুশি করার জন্য প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে সত্যকে গোপন করারও অবকাশ রয়েছে। কাজেই সে বিষয়ে যদি কোন অভিযোগ থেকে থাকে সেটি থাকবে একান্ত স্ত্রীর। সোনারগাঁও রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে একথা বলেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। খবর বাংলানিউজ ও অনলাইনের। হেফাজত নেতা বলেন, আমার স্ত্রীদের সঙ্গে আমার ফোনালাপ একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয়, পারিবারিক বিষয়। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, আমার সেই ব্যক্তিগত গোপনীয় বিষয়কে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমি আমার ব্যক্তিগত আইন পরামর্শদাতাদের সঙ্গে পরামর্শ শুরু করেছি। অচিরেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। একই সঙ্গে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সেদিন রিসোর্টে যাওয়া মোটেই সমীচীন হয়নি বলেও স্বীকার করেন মামুনুল। তিনি বলেন, ‘সেদিন নারায়ণগঞ্জের রয়েল রিসোর্টে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, আমি কেন এ পরিস্থিতিতে রিসোর্টে গেলাম। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি যে, এমন অনবধানতাবশত সেখানে আমার যাওয়া সমীচীন হয়নি। আমি জানতাম না যে, দেশের মানুষের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা চরমভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। সন্ত্রাসীরা আমার চরিত্রহরণের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
×