ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৪৪ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠছে না

প্রকাশিত: ২০:৫০, ৯ এপ্রিল ২০২১

৪৪ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠছে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হলেও একটি চক্র এটাকেই বড় করে গুজব ছড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তারা আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ৬৬ কোম্পানি ছাড়াও বাকিগুলোর শেয়ার কম দামে হাতিয়ে নিয়েছে। বাকি ৪৪ টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস আপাদত উঠছে না। অথচ টানা তিনদিন বড় উত্থানের পড়ে বাজারে স্বাভাবিক সমন্বয় হতে পারত। তাই আতঙ্কিত না হয়ে নিজস্ব বিচার-বিবেচনা দিয়ে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন স্বাভাবিক। তাই বলে ১টি কোম্পানির কারণে অন্য কোম্পানির শেয়ার কম দামে বিক্রি করে দেয়া যৌক্তিক হতে পারে না। এছাড়া কেউ ১টি বিষয়কে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করলেই তাতে আতঙ্কিত হয়ে কম দামে বিক্রি করে দেয়া ঠিক হবে না। তাই আতঙ্কিত না হয়ে কোম্পানির পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে বিনিয়োগ ধরে রাখতে হবে। বুধবার বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে ঈদকে কেন্দ্র করে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন দর সীমা) তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের প্রয়োজনে ওইসব কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলতে পারেন। তবে বাকি কোম্পানিগুলোর ফ্লোর প্রাইস এই মুহূর্তে তুলে দেয়ার কোন পরিকল্পনা নেই কমিশনের। বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন স্বাভাবিক। তাই একদিনের পতনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গত তিনদিনের টানা বড় উত্থানের পরে মুনাফা নেয়ায় কারেকশন হয়েছে। এছাড়া মার্জি ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে সপ্তাহের শেষ দিন বিক্রির চাপ কিছুটা থাকে। তারা শুক্রবার ও শনিবারের সুদ থেকে রেহাই পেতে এদিন ক্রয় করে না। বরং বিক্রি করে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পরে শেয়ারবাজারে পতন হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হিসেবে রয়েছে টানা তিনদিনের বড় উত্থানের পরে দর সমন্বয়। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া নিয়ে একটি চক্রের সৃষ্ট আতঙ্কও ভূমিকা রেখেছে। অন্যথায় ওই ৬৬ কোম্পানির দরপতন হলেও বাজারে তেমন কোন প্রভাব পড়ত না। কারণ ওই কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন মাত্র ৫ শতাংশ। যদি ওই সব কোম্পানির ১০ শতাংশ করেও দরপতন হতো এবং গ্রামীণফোনের ৮ টাকা দর বাড়ত, তাহলে সমান সমান হতো। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পেছনে ৬৬ কোম্পানির বাজার মূলধনে এই কম অংশগ্রহণকেও বিবেচনা নেয় কমিশন। তবে অনেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার জন্য বর্তমান সময়কে যৌক্তিক মনে করছেন না। এটা আরও আগে বাজারে যখন লেনদেন ১৫০০-২০০০ কোটি হচ্ছিল এবং সূচকে তেজিভাব ছিল, ওইসময় ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে নেয়া যেত বলে অনেকে মনে করেন। তবে কমিশনের একটি সূত্রে জানা গেছে, কমিশন ধারণা করেছিল মূল্যসূচক ৫৯শ’ থেকে নেমে কারেকশন হয়ে ৫৬শ’ পয়েন্ট পর্যন্ত নামবে। এরপরে সূচক আবার উর্ধমুখী হবে। ওইসময় ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হবে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটি হয়নি। সূচক ধারাবাহিক পতন হয়ে ৫ হাজার ১শ’র নিচে নেমে যায়।
×