ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাইবান্ধার তিন নদীতে নাব্য সঙ্কট ॥ হুমকিতে নৌ চলাচল

প্রকাশিত: ২০:৪১, ৯ এপ্রিল ২০২১

গাইবান্ধার তিন নদীতে নাব্য সঙ্কট ॥ হুমকিতে নৌ চলাচল

নিজস্ব সংবাদদাতা, গাইবান্ধা, ৮ এপ্রিল ॥ নৌ চ্যানেলগুলো ড্রেজিং না করায় গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও তিস্তার নাব্য সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষের যাতায়াত মারাত্মক বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া উল্লেখিত নদীপথগুলোতে নৌ চলাচল হুমকির মুখে পড়েছে। এতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে নদীনির্ভর সেচ সঙ্কট সৃষ্টি হওয়ায় কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মার্চের শুরু থেকেই তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সব নদ-নদীর পানি কমে গিয়ে সেগুলো শাখা-প্রশাখায় ভাগ হয়ে এখন শীর্ণকায় রূপ নিয়েছে। আকস্মিক পানি শূন্যতায় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা নৌ ঘাটগুলোর অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ইতোমধ্যে অনেক নৌঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব নৌ ঘাট এখনও কোন রকমে টিকে রয়েছে সেগুলোরও এখন বেহাল দশা। মূলত পানি সঙ্কটের কারণে নৌ যোগাযোগ এখন হুমকির মুখে। যেসব রুটে এখনও যান্ত্রিক নৌকাগুলো চলছে জেগে ওঠা চরের কারণে ঘুর পথে চলাচল করতে হচ্ছে বলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। অপরদিকে ছোট ছোট নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ওইসব নদীতে ইতোপূর্বে স্থাপিত সেচ যন্ত্রগুলো এখন পানি সঙ্কটের মুখে পড়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট সেচ যন্ত্রের আওতাধীন বোরো জমি পানির অভাবে এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। এদিকে নদীগুলো নাব্য হারানোর ফলে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রুটে যান্ত্রিক নৌকাগুলো চলাচল করতে পারছে না। ব্রহ্মপুত্রে সবচেয়ে বড় ঘাট হচ্ছে বালাসী নৌ ঘাট। এরপরও এই ঘাট এলাকায় নদী পাড় থেকে ১৫টি রুটে যাত্রীবাহী যান্ত্রিক নৌকা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। অথচ আগে ২৮টি রুটে এখান থেকে নির্বিঘ্নে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করত। বর্তমানে এ ঘাট থেকে যেসব রুটে নৌ চলাচল করছে সেগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর ও কর্তীমারী, সদর উপজেলার মোল্লার চর, কুন্দেরপাড়া ও পারদিয়ারা, ফুলছড়ির সানন্দবাড়ী, ফুটানী বাজার, জিগাবাড়ী, হরিচন্ডি, খোলাবাড়ী, খাটিয়ামারী এবং জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদ, ঘুটাইল ও দেওয়ানগঞ্জ। আগে যেখানে একেক রুটে চারটি করে নৌকা চলাচল করত এখন সেখানে মাত্র দুটি করে নৌকা চলাচল করছে। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানানো হয়েছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে নদীগুলো আরও ভরাট হয়ে যাবে এবং নাব্য সঙ্কটের সৃষ্টি হবে। সেজন্য অবিলম্বে নৌ চ্যানেলগুলো ড্রেজিং না করলে এ জেলার চরাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে দেশের নদীগুলো ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য ফিরিয়ে আনার সরকারের একটি মহাপরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
×