ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্ল্যাপ থেকে...

সমসাময়িক জীবনের দলিল

প্রকাশিত: ২০:১৩, ৯ এপ্রিল ২০২১

সমসাময়িক জীবনের দলিল

এই উপন্যাস বয়ে চলে একটি নির্দিষ্ট সময় ঘিরে। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ যার শুরু, ২০২০ সালের আগস্টের ১৯ তারিখে তা শেষ। এরমধ্যে আসে ভয়াল করোনা- যা অব্যাহত থাকে আর লণ্ডভণ্ড করে তোলে সারাবিশ্ব, আতঙ্কে কেঁপে ওঠে বাঙলাদেশ, পর্যুদস্ত হয় সাধারণ মানুষের জীবন। সাধারণ জীবন ও জীবিকা যখন চূড়ান্ত অনিশ্চয়তায়, তখন দুঃসময়কে সুদাসলে ব্যবহারের ফন্দি ফিকিরও কেউ কেউ করে। এ যেন যুদ্ধকালে চিরকালের বাস্তবতা- তারপরও জীবনের চলমানতা নিরন্তর। সমস্ত সুখ-অসুখ-সীমাবদ্ধতা বহমান থাকে, থাকে অনড় সাম্প্রদায়িকতার দুর্ভেদ্য দেয়াল, অসম বৈষম্যের সুবিধাভোগী আরও- উপরে- ওঠার চেষ্টায় দৌড়বাজ মানুষের উল্লম্ফন— তারুণ্যের নিষ্কলুষ সৃজনশীলতা ক্ষমতা-টাকার অসহায় ফাঁদে পড়ে পর্যুদস্ত। সব ছাপিয়ে চিরকালের অদেখা, অজানা, বিস্ময়কর নিয়তি কখন যে প্রচণ্ড নির্মম বীভৎস থাপ্পড় বসিয়ে দেয়, কোন অন্ধকার কুণ্ডলী থেকে বেরিয়ে- আমরা কেউ তা জানি না। কোনদিন জানব না। এ উপন্যাসের মূল কথা তাই এই সময়- যার অনেককিছু গোপন, লুকনো, অপ্রকাশ্য। নিয়তির আচমকা উপস্থিতির সামনে হতবিহ্বল মানুষ- আজো তাই ঈদিপাসের উত্তরসূরি হয়ে থাকে- আড়াই হাজার বছর পরও- এই সময়ে, এই করোনাকালে, আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ছিদ্রপথে আরেক ঈদিপাসকে আমরা চোখের সামনে দেখতে পাই। এই উপন্যাসে সাম্প্রদায়িকতার কুৎসিত রূপ যেমন নির্বিকারভাবে উপস্থিত, তেমনই নির্লিপ্ত ভাষায় এতে সমকালীন নিম্নবিত্ত তারুণ্যের প্রান্তিকতা উপস্থিত। এতে আছে ফল্গুধারার মতো এক প্রেম- যে দ্বিধায় থরোথরো, যুক্তির কাছে বার বার পরাজিত। আপন আপন বলয় ছেড়ে তাই উপন্যাসের চরিত্রেরা- ঢাকায় কবি হতে আসা রাহাত, প্রত্যয়ী ভাস্কর তুতন চৌধুরী, আরো ধনী হতে চাওয়া রাকিব, বুয়েটের শিক্ষক পারভেজ, আটিস্ট অনাদি আশ্চর্য বা আরেক কবি নির্ঘুম ছন্দহীন অথবা ডাকসাইটে আমলা- লেখক আবদুল মোমিন মজুমদার বা বাদিহাটির একরোখা পিতা- কেউ কেউ বা অনেকে- একে অপরের মুখোমুখি হয়ে এই সময়ের প্রতিরূপ হয়ে উঠে সকলে মিলে। আর, অপ্রকাশ্য সেই বাস্তবতা আর সব ছাপিয়ে জিতে যায় বা হারে- উপন্যাস অন্তিমে না পৌঁছনো পর্যন্ত অবশ্য তা আমরা জানতে পারি না।
×