ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

লালমনিরহাটে শিলাবৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ৮ এপ্রিল ২০২১

লালমনিরহাটে শিলাবৃষ্টিতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট ॥ লালমনিরহাট জেলায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতের শীলাবৃষ্টিতে ও কালবৈশাখী ঝড়ে ধান, ভূট্টা শস্য জাতীয় ফসল, আম, জাম, লেচু জাতীয় ফলের গুটি ও গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, বুড়িতিস্তা, সতী নদীর চরাঞ্চলের মানুষের বসত ভিটা গাছপাতা ও ফসলের শিলাপড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। চলতি বোরো ও রোপা আউশ মৌসুমে জেলায় ৪৭ হাজার দুইশত হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কিন্তু চাষ হয়েছে ৪৭ হাজার চারশত ৪০ হেক্টও জমিতে। প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদন ধরা হয়েছে ৪.৩০ মেঃ টন। শীলাবৃষ্টির কারণে ধান উৎপাদন হ্রাস পেতে পারে। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ভোর রাতে হঠাৎ থেমে থেমে শিলা বৃষ্টি হয়েছে। সবখানে শীলবৃষ্টি এক রকমের হয়নি। কোথাও কোথার শিলা বৃষ্টির পরিমাপ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। শীলাবৃষ্টির সাথে বরফের টুকরো গুলোর আকার বেশ বড় ছিল। জেলার কালীগঞ্জের কাকিনায়, চামটা, শিয়ালখাওয়া, আদিতমারীর সারপুকুর, সরলখাঁ, মহিষখোচা তিস্তার চর, সদরের নয়ারহাট, বড়বাড়ি খুনিয়াগাছ, রাজপুরসহ কয়েক জায়গায় শীলাবৃষ্টির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। এ সময় শীলাবৃষ্টির আঘাতে ধান জাতীয় শস্যেরে পুষ্পরেণু (পরাগরেণু) আম, জাম, কাঁঠাল, লেচু জাতীয় ফলের গুপি ঝরে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, বুড়িতিস্তা, সতী নদীর চরাঞ্চলের কোথাও কোথাও কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপাতা ও বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। সারাদিন ছিল মেঘলা। নয়ারহাটের কৃষক কৃষক জাকির(৪৫) জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আগুর রোপন করা হয়েছে বোরো ধানের চারা, ভুট্টা। ধান ও ভূট্টার থোরে পুস্পরেণু ( পরাগরেণু ) এসেছে। শীলা বৃষ্টির কারণে সেই পুষ্প রেণু ঝওে মাটিতে পড়ে গেছে। এতে করে ধান জাতীয় ফসল উৎপাদন হ্রাস পাবে। তবে তামাক তুলে রোপা আউশ জাতীয় ধান এখনো পুষ্প রেণু আসেনি তাই ক্ষতি হয়নি। বোরো ধানের পুষ্পরেণু আসায় আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে এই অঞ্চলে ধান পাকতে শুরু করবে। এমন কি? ভুট্টার ক্ষেতে মোচা বের হয়েছে। ভুটআও মে মাসে উঠবে। এমন সময় শীলাবৃষ্টির কারণে দানা জাতীয় ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাবে। যারা সারা বছর ধরে সবিজি জাতীয় নানান ফসল করেন, সবুজ শাক সসবজি, লাউ, করলা, মিষ্টিকুমড়া, কুমড়া । সেই সব সদ্যহাত ফসলের ক্ষেতে শীলাবৃষ্টির কারণে পানি জমে ক্ষেত নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি বড়বড় বরফের টুকরো পড়ে কমদামি হালকা ও পুরনো টিনের চালা ফুটা হয়ে গেছে। লালমনিরহাট জেলার জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনে মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগ ও ইউএনও গণ কাজ করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসা গণ ক্ষতি গ্রস্থদের তালিকা দিলে তবে ক্ষতির পরিমাণ বলা সম্ভব। জেলা কৃষিকর্মকতর্কা মোঃ শামীম আশরাফ জানান, শীলাবৃষ্টির কারণে পুষ্পরেণু বা পরাগরেণুর ক্ষতি ক্ষতি হয়েছে। তবে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যাবে। এরপরে যদি কোন প্রাকৃতিক বিপর্য আসা তবে সেই ক্ষতি পুরন করা সম্ভব নয় বলে হানান।
×