ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৮ মাসে অনলাইনে নিত্যপণ্য লেনদেন ৩ হাজার কোটি টাকা ॥ ই-ক্যাব

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ৮ এপ্রিল ২০২১

৮ মাসে অনলাইনে নিত্যপণ্য লেনদেন ৩ হাজার কোটি টাকা ॥ ই-ক্যাব

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনা মহামারিতে শুধু নিত্যপণ্যে ২০২০ সালের শেষ ৮ মাসে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি ডেলিভারি হচ্ছে। গত বছর সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্যপণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে সচল রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল। এ বছরও একইভাবে অনলাইনে নিরাপদে পণ্য ও সেবা ক্রয় সচল রাখতে ই-কমার্স ডেলিভারির সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে বাড়িয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গত ৭ এপ্রিল ছিল ই-কমার্স দিবস। এবারের ই-কমার্স দিবসের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয় ‘ঘরে থাকাই নিরাপদ, ই-কমার্সই ভবিষ্যৎ’। অনুষ্ঠানে ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার সভাপতিত্ব করেন। ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বসাধারণকে অনলাইনে কেনাকাটার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা জানি, বিগত বছর করোনার আপদকালীন সময়ে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিত্যপণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে সচল রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও একইভাবে অনলাইনে নিরাপদে পণ্য ও সেবা সচল রাখার ব্যাপারে পরিপত্র জারি করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আবেদনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ই-কমার্স ডেলিভারীর সময়সীমা সন্ধ্যা ৬টা থেকে বর্ধিত করে রাত ১২টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ই-ক্যাব সভাপতি আরো বলেন, চলতি বছর ই-ক্যাব চারটি মূখ্য বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরী করেছে। বিষয়গুলো হলো গ্রামীণ ই-কমার্স, ক্রস বর্ডার ই-কমার্স, সোস্যাল মিডিয়া কমার্স ও ই-কমার্সে অভিযোগ ব্যবস্থাপনা। এছাড়া সরকারের ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা বাস্তবায়নসহ পরিস্থিতির আলোকে বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে করনীয় পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করবে ই-ক্যাব। ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফের সঞ্চালনায় ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু সংবাদ সম্মেলনে ই-কমার্সের বিভিন্ন দিক এবং ই-ক্যাবের কার্যক্রম তুলে ধরেন। অর্থ সম্পাদক বলেন, শুধুমাত্র নিত্যপণ্যে ২০২০ সালের শেষ ৮ মাসে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা, বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশী ডেলিভারি হচ্ছে প্রতিদিন, ৫০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান, ৬ হাজার তরুণদের প্রশিক্ষণ, ১৬ হাজার কোটি টাকার সার্বিক ডিজিটাল লেনদেন । ই-কমার্সে বিগত বছর সমূহে যেখানে ২৫% প্রবৃদ্ধি ছিল গত বছর তা ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৩০০% প্রবৃদ্ধিও ঘটেছে, বিশেষ করে নিত্যপণ্য ও খাদ্য ব্যবসায়। তিনি আরো বলেন, করোনা চলাকালীন সময়ে সদস্যদের অর্থসংকট মোকাবিলায় ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগযোগ করা হয়। ই-ক্যাবের এই প্রচেষ্টায় প্রাইম ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে মোট ১৩ টি প্রতিষ্ঠানকে জামানতবিহীন বিভিন্ন মেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা করা হয়। আরো ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফ বলেন, ই-কমার্স খাত শৃংখলা আনতে ই-ক্যাব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশনা’ চূড়ান্ত করার কাজ করছে। এটা চূড়ান্ত হলে আমরা আশা করি বর্তমানে অনেক সমস্যার সমাধান। এতে ক্রেতারা সচেতেন হয়ে দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা করতে পারবে। ক্রেতাদের সচেতন হওয়ার মাধ্যমে সমস্যা অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া ই-ক্যাবের কাছে যেসব প্রশ্ন আসে সেগুলোও আমরা সদস্য প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করি। ই-ক্যাবের জয়েন্ট সেক্রেটারী ই-ক্যাবের ডিরেক্টর জনাব আশীষ চক্রবর্তী, জিয়া আশরাফ, নাসিমা আক্তার নিশা এবং ডিরেক্টর সাইদ রহমান ও জেনারেল ম্যানেজার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। অনুষ্ঠানে জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন, ডেপুটি ম্যানেজার মাহমুদ উর রহমানসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য ও সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
×