ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় কৃষকের বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তোলা হচ্ছে না

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ৮ এপ্রিল ২০২১

কলাপাড়ায় কৃষকের বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তোলা হচ্ছে না

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ কলাপাড়ায় কৃষকের বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তোলার রঙ্গিন স্বপ্ন বিবর্ণ হয়ে গেছে। অর্ধেক ধান চিটা হয়ে গেছে। ৪ এপ্রিল দিবাগত রাতের কালবৈশাখীর ঝড়োবাতাসে এমন সর্বনাশ হয়ে গেছে বলে কৃষকের দাবি। তবে যাদের আগাম আবাদ করা ছিল ওইসব ক্ষেতের ফলন কম ক্ষতি হয়েছে। যেসব ধান কেবল বের হয়েছে ওইসব ক্ষেতের ধান প্রবল বাতাসে চিটা হয়ে গেছে। এখন লালচে-খয়রি রঙ ধারন করছে। প্রত্যেকটি ছড়ার অর্ধেক ধান চিটা হয়ে গেছে। কৃষকরা একারণে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। আমনের ভাল ফলন এবার পায়নি এখানকার কৃষক। ধানের ভাল দাম থাকায় বোরোর ব্যাপক আবাদ করেছিলেন। ফলনও হয়েছিল বাম্পার। কিন্তু প্রকৃতি সব যেন শেষ করে দিল। দুর থেকে দেখা যায় ক্ষেতে ধানে সয়লাব, কিন্তু ক্ষেতের ছড়া হাতে ধরে দেখলেই সর্বনাশের চিহ্ন চোখে দেখা যায়। কুমিরমারা, মজিদপুর, পূর্বসোনাতলা, এলেমপুর, মোস্তফাপুর, খলিলপুর, পাখিমারার আংশিক ঘুরে দেখা গেল কৃষকের সর্বনাশা দৃশ্য। কুমিরমারা গ্রামের চাষী গাজী সাইফুল্লাহ জানালেন প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ১০বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কথা হয় এ চাষীর সঙ্গে। বললেন, ‘ ধানের ছড়ার গোড়া এখন শুকাইয়া চিটা হইয়া যাচ্ছে। অর্ধেক অলরেডি চিটা হয়ে গ্যাছে।’ ওই ধান ক্ষেতে ছত্রাক নাশক ওষুধ ছিটাচ্ছিলেন সাইফুল্লাহ। জাকির গাজী জানালেন, তিন একর বোরোর দুই একর নষ্ট হয়ে গেছে। একই বক্তব্য সুলতান গাজীর, আবুল কালামসহ সকলের। এখন আবার সেচের সঙ্কট চলছে। এসব চাষীর সেচ সঙ্কটের কারণ পাখিমারার খালের যুগীর খালের সংযোগ স্থলে শুকিয়ে প্রায় আধাকিলোমিটার খাল খেলার মাঠ হয়ে গেছে। পাখিমারার ১০-১২ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির দুই পাড়ের মানুষ এবছর ব্যাপকভাবে বোরোর আবাদ করেছেন। শুধু নীলগঞ্জ ইউনিয়ন নয়। কমবেশি বাকি ১১ ইউনিয়নের চাষীদের এখন একই হাল। কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, দীর্ঘ অনাবৃষ্টিতে তাপদাহের কারণে ঠিকমতো পরাগায়ন হয়নি। ফুল শুকিয়ে যাচ্ছে তাপদাহে। তবে কৃষককে ক্ষেতে পানি ছিটানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় ওষুধ ছিটানোর জন্য বলা হয়েছে। উল্লেখ্য এবছর গেল বছরের চেয়ে কলাপাড়ায় অন্তত ছয় গুন বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। গেল বছর বোরোর আবাদ হয়েছিল দুই হাজার চার শ’ একর জমিতে। সেখানে এবছর আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৩৫০ একর জমিতে।
×