ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাজার স্বাভাবিক রাখতে চাল আমদানি করা হচ্ছে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ৮ এপ্রিল ২০২১

বাজার স্বাভাবিক রাখতে চাল আমদানি করা হচ্ছে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ভোগ্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে চাল আমদানি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও গম কেনা হচ্ছে না। বেশি চাল কেনা হলে দেশের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজন মতো চাল আমদানি করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণরোধে দ্বিতীয় দফা বিধিনিষেধের কারণে কাজ হারানো নিম্নআয়ের মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যখন যে ব্যবস্থা প্রয়োজন সেটা নেয়া হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। সরকারের গুদামে মজুদ বাড়াতে আরও দেড় লাখ টন চাল আমদানিসহ ১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা ব্যয়ের ছয় ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনে ক্রয় সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত ও সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী জানান, প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল ও গম কেনা হচ্ছে না। সরকারের বেশি চাল ও গম কেনার ইচ্ছাও নেই। কারণ বেশি চাল কিনলে আমাদের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। তবে ভোগ্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে এ বছর বেশি চাল আমদানি করতে হয়েছে। চাল আমদানি হচ্ছে বলেই চালের দাম আর বাড়েনি। এখন ভোক্তারা ন্যায্যমূলে চাল কিনতে পারছেন। অর্থমন্ত্রী এর আগে চাল সংক্রান্ত এক বৈঠকে জানিয়েছিলেন, এ বছর আগাম দুদফা বন্যার কারণে ধান উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে চাল আমদানির প্রয়োজন পড়ে। তবে এবার ধানের ফলন ভাল হলে আমাদের আর আমদানিতে যেতে হবে না। সরকারের মজুদ বাড়াতে দেড় লাখ টন চাল আমদানি ॥ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সরকারী পর্যায়ে ভারতের একটি কৃষি বিষয়ক সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভায় ভারতের বেসরকারী কোম্পানি পি কে এগ্রি লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। সরকার গত জানুয়ারি থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নিলেও মজুদ দিন দিন কমছে। গত ৪ এপ্রিলে খাদ্যের মজুদ ছিল ৪ লাখ ৮৮ হাজার টন, যার মধ্যে চাল ছিল ৩ লাখ ৯৯ হাজার টন। গত ২৪ মার্চ ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির প্রস্তাবের অনুমোদন দেয় সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। ছয় ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন ॥ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম এবং সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৪তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি এবং ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে উপস্থাপিত প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৪টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি এবং সেতু বিভাগের একটি প্রস্তাব ছিল। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি ক্রয় প্রস্তাবে কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়নি। এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপূর্ত অধিদপতর অপর একটি প্রস্তাবে পুনঃদরপত্রের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ অনুমোদিত ৬ টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ১ হাজার ৫৬৬ কোটি ৭১ লাখ ৭৯ হাজার ১৬০ টাকা। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনে নীতিগত অনুমোদন ॥ বাংলাদেশ ৩য় সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনে সংশ্লিষ্ট অংশের ক্রয় কাজের জন্য রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধতন কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়নে তিন প্রস্তাব অনুমোদন ॥ শরীয়তপুর-ইব্রাহিমপুর ফেরি ঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে চার লেনে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণের পূর্ত কাজের তিনটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৮ কোটি ৬০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩৯ টাকা। মেঘনায় সেতু নির্মাণে ৬ পরামর্শ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ ॥ মেঘনা নদীর ওপর শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে ও গজারিয়া মুন্সীগঞ্জ সড়কে সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা এবং মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে ৬ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ২৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৩ টাকা।
×