ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষার আলোয় আলোকিত

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৮ এপ্রিল ২০২১

শিক্ষার আলোয় আলোকিত

ওমর খৈয়াম ইরানের একজন কবি, গণিতবেত্তা, দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ ছিলেন। তার বিখ্যাত উক্তি দিয়ে শুরু করা যাক, রুটি-মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে। বই, সে তো অনন্ত যৌবনা। যদি তেমন বই হয়। তিনি আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন, যদি কোনদিন সবকিছুর সমাপ্তি ঘটে, প্রিয়জন ব্যথা দিয়ে চলে যায় কিংবা সংসারে অভাব নেমে আসে। সেদিনও অবশিষ্ট থাকবে আমাদের অর্জিত জ্ঞান। যা আমরা বইপড়ার মাধ্যমে অর্জন করে থাকি। আমাদের জ্ঞান অর্জনের সহজ দুটি পন্থা হলো, প্রথমত দেশভ্রমণ করা, দ্বিতীয়ত বইপড়ার মাধ্যমে জ্ঞান আহরণ করা। দেশভ্রমণ করতে প্রচুর টাকা-পয়সার প্রয়োজন হয়! যা আমাদের সকলের জন্য সম্ভব হয় না । তাই আমাদের কাছে জ্ঞান অর্জনের সহজ ও সুন্দর উপায় হচ্ছে বইপড়া। ইতিহাস, দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞানসহ পৃথিবী সমন্ধে জ্ঞান অর্জন করা করা যায় বইপড়ার মাধ্যমে। আমরা যদি অনুধাবন করার চেষ্টা করি তাহলে বুঝব মহৎ ব্যক্তিদের বিশ্বসেরা হওয়ার পেছনে বইয়ের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একজন অন্ধ ব্যক্তি যেমন সুন্দর পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে না, তেমনি একজন মানুষ বই পড়া ব্যতীত পরিপূর্ণ মানুষে পরিণত হতে পারে না। আমাদের সমাজের কিছু সহজ চিত্র তুলে ধরি, আমাদের পড়াশোনার মূলত একটি উদ্দেশ্য থাকে, ভাল একটি চাকরি পাওয়া। সেজন্য আমাদের বইপড়ার অনিচ্ছা থাকলে ও ¯œাতক কিংবা ¯œাতক সমমানের পরীক্ষাগুলোতে কৃতকার্য হওয়ার জন্য অনিচ্ছাকৃত হলে ও লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হয়। তারপর চাকরি জীবনে প্রবেশ কিংবা বেকার জীবনে প্রবেশ করে সিংহভাগ ব্যক্তির বইপড়ার প্রতি অনীহা তৈরি হয়ে যায়! তখন বইয়ের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করা হয়না। নষ্ট হয়ে যায় সুন্দর সুন্দর বইগুলো! আর বইয়ের সুন্দর টেবিলখানি পরিণত হয়ে যায় ইঁদুর কিংবা তেলাপোকার বাসস্থানে। কালের বিবর্তনে সেই সুন্দর বইয়ের টুকরাগুলোর স্থান নির্ধারণ হয় ডাস্টবিন কিংবা ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে অথবা চানাচুর বিক্রির কাজে। বহুল প্রচলিত একটি উক্তি আছে, কোন সভ্য জাতিকে অসভ্য করার ইচ্ছা যদি তোমার থাকে তাহলে তাদের সব বই ধ্বংস কর এবং সকল প-িতকে হত্যা কর। তোমার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী কর্তৃক এদেশের সূর্যসন্তানদের হত্যাযজ্ঞের কথা। তারা বাঙালী জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য সেই জঘন্যতম কাজটি করেছিল। কালের বিবর্তনে আমরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে অসভ্য থেকে সুসভ্য হয়েছি। আর সেই আলোর উৎস হচ্ছে বই। সহজ ভাষায় শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে হলে বই পড়তে হবে। আজকালকার বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি অসক্ত হয়ে বইপড়ার প্রতি অনীহা প্রকাশ করছে। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের সুন্দর ভবিষ্যত, সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের সমাজ। দিনাজপুর থেকে
×