ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আবু ফারুক

জ্ঞানের স্বর্গরাজ্য

প্রকাশিত: ২০:৫১, ৮ এপ্রিল ২০২১

জ্ঞানের স্বর্গরাজ্য

বই মানুষের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে জ্ঞানের তৃষ্ণা নিবারণের পাশাপাশি দূর করে নিঃসঙ্গতা, মনের ক্লান্তি ও বিমর্ষতা। একটি ভাল বই যে কোন বয়সের পাঠকের মনের অন্ধকার দূর করে দৃষ্টিভঙ্গিকে করে উন্নত ও প্রসারিত। দেশ, সমাজ, সভ্যতা, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে জানতে বই পড়ার চেয়ে উত্তম আর কিছুই হতে পারে না। তাই বইকে যেমন বিশ^কবি অতীত ও বর্তমানের সাঁকো হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, তেমনি পল্লী কবি জসীমউদ্দীন জ্ঞান ও আনন্দের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিন্তু বর্তমানে শিশুসহ প্রায় সকলেই বিভিন্ন কারণে নির্জলা এই জ্ঞান ও আনন্দের উৎসের সান্নিধ্য পেতে খুব একটা উন্মুখ নয়। কারণ পরীক্ষায় তথাকথিত ভাল ফলাফল অর্জন করে ভবিষ্যত নিরাপদ করার অমানসিক চাপে নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক আর নোট-গাইড বই-ই জ্ঞানের আধার হিসেবে জায়গা পাকাপোক্ত করছে। আবার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভাবনীয় ক্রমোন্নতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রভাবে তাদের ও আমাদের যান্ত্রিক জীবনে অবসর বিনোদনের অনুষঙ্গ হয়েছে টিভির কার্টুন ছবি এবং মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার গেমস। অথচ একটা সময়ে সব বয়সের মানুষের অবসর বিনোদনের সাথী ও আড্ডার প্রিয় বিষয় ছিল বই। প্রতিদিনের পড়ালেখার পাশাপাশি পাঠ্যবইয়ের ভেতরে লুকিয়েও চলত পছন্দের সব বইপড়া। বন্ধুত্ব গাঢ় হতো গল্প, কবিতা কিংবা রহস্যোপন্যাসের বইয়ের আদানপ্রদান আর পঠিত বইয়ের সংখ্যা জানানোর প্রতিযোগিতায়। প্রিয়জনকে দেয়া উপহারের তালিকায় শীর্ষে ছিল বই। আর অমর একুশ উপলক্ষে আয়োজিত বইমেলা তো প্রাণের উৎসব বলেই স্বীকৃত। পরিবার-পরিজন আর বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বৈচিত্র্যময় বিষয় ও মনকাড়া সব রঙিন প্রচ্ছদে মোড়া রাশি রাশি নতুন বইয়ের সে কী মধুর সুবাস! এখনো রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় ও অনেক জেলা শহরে বইমেলার আয়োজন হয়। কিন্তু অন্য যে কোন মেলার চেয়ে এখানে দর্শক ও ক্রেতা উভয়ের সংখ্যা অনেক কম। কারণ সৈয়দ মুজতবা আলীর বলা ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।’ কথাটা প্রায় সবাই জানলেও অনেকেই বিশ^াস করি না। স্বাধীন চিন্তা ও কল্পনাশক্তি এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ নিশ্চিতে শিশু-কিশোরদের বই পড়া নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হওয়া দরকার। বান্দরবান থেকে
×