ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইমাম ইমু

ক্যাম্পাসের চড়ুইভাতি

প্রকাশিত: ২০:১১, ৪ এপ্রিল ২০২১

ক্যাম্পাসের চড়ুইভাতি

বিস্তীর্ণ পুকুরপাড়। নিরিবিলি স্থান। চৈত্রের কড়া রোদ। সঙ্গে রয়েছে বৈশাখের আগমনী দমকা হাওয়া। একপাশে কয়েকজন মিলে কিছু রান্না করছেন। অদূরে সেলফি তুলছেন কেউ। কেউবা আড্ডায় ব্যস্ত। কেউবা আবার গল্প করছেন দীর্ঘ সময় পর দেখা হওয়া বন্ধুর সঙ্গে। এটি একটি চড়ুইভাতির দৃশ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করে কাটাপাহাড় হয়ে শহীদ মিনার গিয়ে বাম দিকে সোজা গেলেই দেখা মিলবে পুকুরটির। বোটানিক্যাল পুকুরপাড় বলে খ্যাত এটি। আড্ডা, ফটোগ্রাফি আর চড়ুইভাতির জন্য এ স্থানের জুড়ি নেই। ক্যাম্পাসের চড়ুইভাতি মানেই অন্যরকম আনন্দ-উল্লাস, আড্ডা আর গানের আসর। কেউ রান্না রান্না করবে, কেউ তরকারি কাটবে, কেউ লাড়কি কুড়াবে, কেউ বসে গল্প জমাবে, কেউবা মেতে থাকবে ফটোগ্রাফিতে, কেউবা আবার ছুটবে বাজার আনতে। এতে নিজেরা রান্না করাটা থাকে আনন্দের মূল উৎস। খাওয়া শেষে থাকে সাংস্কৃতিক পর্ব। কৌতুক, গান আর কবিতা ছাড়াও হরেক রকমের প্রতিভা পরিবেশিত হয় এ পর্বে। পুরো আয়োজনে সবাই হাসি-ঠাট্টায় মেতে থাকেন। করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ব্যক্তিগত কাজে গুটিকয়েক ক্যাম্পাসে থাকলেও বেশিরভাগই রয়েছে বাসা-বাড়িতে। এরমধ্যে আবার বেড়েছে করোনার প্রকোপ। তবু ক্যাম্পাসের আশপাশে যারা রয়েছে তাদের নিয়ে চড়ুইভাতির আয়োজন করেছে সুবর্ণচর উপজেলা স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পড়ুয়া নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক ও ভালবাসার সংগঠন এটি। বর্তমানে প্রায় ৬০ জন সদস্য রয়েছে এ সংগঠনে। ডাক পড়লেই শিকড়ের টানে মিলিত হয় সবাই। হুট করেই সিদ্ধান্ত হয় এ আয়োজনের। আগের দিন রাতে বাজার-সদাই শেষ করে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন সংগঠনের সদস্যরা। বুধবার সকাল থেকেই রান্নার প্রস্তুতি শুরু হয়। শেষ হয় বাকি বাজার-সদাইও। চুলা বানানো আর লাড়কি কুড়াতে ব্যস্ত একদল। অপরদিকে চড়ুইভাতির খবর পেয়ে ক্যাম্পাসের অদূরে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা আসা শুরু করেছে। এসেই গল্প আর ফটোগ্রাফিতে ব্যস্ত অনেকেই। রান্না শুরু হয়ে গেল। দারুণ গন্ধ ছড়িয়েছে চারদিক। রান্না শেষ হলো। এবার খাওয়ার পালা। সবাই খেতে বসেছেন। কয়েকজন বেড়ে দেওয়ার কাজ করছেন। এ কাজ করে আনন্দ পান অনেকেই। খাওয়া শেষে আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন সবাই। আবার কেউ কেউ কর্মব্যস্ততার কারণে চলে যেতে হয়েছে। ফের জড়ো হন সবাই। এবার শুরু হলো গানের আসর। বিকালের স্নিগ্ধ বাতাস। পুকুরপাড়ে বসে গলা ছেড়ে গান গাওয়ার মজাই আলাদা। গানে গানে শেষ চড়ুইভাতির আয়োজন। শেষ গানটি ছিল ‘তোমার ঘরে বাস কারা ও মন জানো না, তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা, মন জানো না।’
×