ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দাবি

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ৯ মার্চ ২০২১

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার দাবি

মিয়ানমারে ক্রমেই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে জনতা। সরকারের দমন-পীড়নের মধ্যেও গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে গণতন্ত্রপন্থীরা। এদিকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত দেশটির অন্তত ১৮টি ট্রেড ইউনিয়ন জনগণকে কাজ বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সংগঠনগুলো সোমবার থেকে ধর্মঘটের প্রস্তুতি নেয়। দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সংকুচিত করতে এবং ক্ষমতাসীন সরকারকে আরও চাপের মধ্যে ফেলতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোন পক্ষ গ্রহণ না করে বরং ‘সব পক্ষের’ সঙ্গে আলোচনার ্যমে প্রতিবেশী দেশটির চলমান সঙ্কট সমাধানের পথ সহজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বেজিং। চীন সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং-ই রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। আলজাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি, এপি ও ব্লুমবার্গ। নির্মাণ, কৃষি ও পণ্য উৎপাদনসহ অন্তত নয় খাতের ট্রেড ইউনিয়ন এই ধর্মঘটে যোগ দিচ্ছে। সেনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে ‘মিয়ানমারের সব জনগণের’ প্রতি কাজে ইস্তফা দেয়ার ডাক দিয়েছে তারা। ধর্মঘটের জন্য দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যবসা ও অর্থনীতি সচল রাখলে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করা হবে কারণ তারা জনগণের শক্তি দমন করছে। এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের গণতন্ত্রের জন্য পদক্ষেপ নেয়ার সময় এখনই।’ এদিকে চীনের পার্লামেন্টের বার্ষিক সমাবেশ অনুষ্ঠানের ফাঁকে সংবাদ সম্মেলনে ওয়াং বলেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছায় এবং দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখে চীন সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগ্রহী। দেশটিতে চলমান উত্তেজনা নিরসনে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে চায়।’ গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতার দখল নেয় দেশটির সেনাবাহিনী। পশ্চিমা দেশগুলো সেনাঅভ্যুত্থানের কঠোর নিন্দা জানিয়ে দ্রুত আউং সান সু চিসহ তার দলের আটক নেতাদের মুক্তি এবং বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বলেছে। নতুবা মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেয়া হয়েছে। তবে চীন অভ্যুত্থানের বিষয়ে কিছু বলছে না। বরং তারা প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সেটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ওপর জোর দিচ্ছে। সেনাঅভ্যুত্থানের পরপরই এর বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ গণবিক্ষোভে শুরু করেছে। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুঞ্জন রয়েছে, মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পেছনে চীনের হাত রয়েছে। এ গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বেজিংয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনাভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ‘চীন নিশ্চিতভাবেই এমনটা দেখতে চায়নি।’ অভ্যুত্থানের পর মিয়ামনার সেনাবাহিনী ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়া সু চি এবং তাদের দলের নেতাদের আটক করে এবং দেশজুড়ে এক বছরের জরুরী অবস্থা জারি করে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ থেকে এক বিবৃতিতে সু চি এবং বাকি নেতাদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং জরুরী অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
×