ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

‘চিৎকার কর মেয়ে দেখি কতদূর গলা যায়’

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ৯ মার্চ ২০২১

‘চিৎকার কর মেয়ে দেখি কতদূর গলা যায়’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আমি এ যুগের মেয়ে/তোমাদের পানে চেয়ে/অবহেলা আর নারীত্বের অবমাননার অপেক্ষায়/বসে থাকবার জন্য নয়/হাওয়া বদলের হাওয়ায় বদলে যাওয়া এই সময়ে/অবলাখ্যাত আমার পূর্ব নারীদের সকল না বলা কথা/বলার প্রত্যয়ে তোমাদেরই সামনে এসে দাঁড়ালাম ...। কবিতার শিল্পীত উচ্চারণে এভাবেই দিন বদলের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করলেন নারী আবৃত্তিশিল্পীরা। সোমবার বিকেল থেকে রাত অবধি চলল সেই আবৃত্তির উপস্থাপনা। বৃত্ত ভাঙার প্রত্যয় জাগানো আবৃত্তিতে সাজানো ছিল আয়োজন। গাওয়া হলো নারীর জয়গান। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘চিৎকার কর মেয়ে দেখি কতদূর গলা যায়’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহ্্কাম উল্লাহ্। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আনিসা জামান চাপা। কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন রচিত ‘নারী উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন শিরিন ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পরিষদের সভাপতি ও সংস্কৃতিজন আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। আয়োজনে সংহতি প্রকাশ করেন কাবেরী গায়েন, ইসরাত জাহান উর্মি ও নাজনীন মুন্নি। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রেজিনা ওয়ালী লীনা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অনন্যা লাবনী পুতুল। সেলিনা হোসেনের প্রবন্ধে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রশাসনিকভাবে নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি সচেতনভাবে প্রশাসনে নারী-পুরুষের সমতার জায়গা সৃষ্টি করেছিলেন। প্রশাসনের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলায় নারীর সমতার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আসাদুজ্জামান নূর বলেন, নারীদের যেমন অধিকার আদায় করে নিতে হবে তেমনি পুরুষদেরও পুরুষ হয়ে না থেকে মানুষ হয়ে উঠতে হবে। মানুষ হওয়ার জন্য পুরুষের চেতনার প্রয়োজন। পুরুষ হওয়ার বদলে মানবিক হওয়াটাই সেই চেতনার মূল উৎস। তাই বদলাতে হবে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আচরণ। তাহলেই মিলবে কাক্সিক্ষত সমতার সমাজ। আর নারী-পুরুষের সমতা না হলে উন্নত হবে না সমাজ। কাব্যিক এ আয়োজনে কবিতার আশ্রয়ে ব্যক্ত হয় পুরুষের সমান্তরালে নারীর এগিয়ে চলার প্রত্যয়। সম্মেলক ও একক পরিবেশনার সঙ্গে ছিল শিশু শিল্পীদের উপস্থাপনা। খুদে আবৃত্তিশিল্পীরা উপস্থাপন করে ‘স্বাধীনতার অমর কাব্য’ শীর্ষক প্রযোজনা। এটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনায় ছিলেন মীর মাসরুর জামান রনি। একক আবৃত্তি পর্বে সাফিয়া খন্দকার রেখা পাঠ করেন ‘পরীবানুর জবানবন্দি’ শিরোনামের স্বরচিত কবিতা। তামান্না তিথি পাঠ করেন মীর বরকতের লেখা কবিতা ‘এ কোন নিয়তি’। এছাড়া একক কণ্ঠে আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ, নায়লা তারানুম চৌধুরী কাকলি, ঝর্ণা সরকার, শামীমা তন্দ্রা, তামান্না সারোয়ার নীপা, মাহমুদা আখতার, শ্যামলী সুলতানা, সালমা শবনম, রোকেয়া প্রাচী ও পদ্মাবতী দেবী। সমন্বয় পরিষদের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আবৃত্তি সংগঠনের প্রতিনিত্বশীল শিল্পীদের অংশগ্রহণে সজ্জিত ছিল সমবেত পরিবেশনা। রাম চন্দ্র দাস রচিত ‘এ যুগের মেয়ে’ শীর্ষক কবিতা আবৃত্তি করেন তারা। এই শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন রেজিনা ওয়ালী লীনা, কানিজ গোফরানী কোরায়শী, সুবর্ণা আরফিন, অনন্যা সাহা, মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি, নাসিমা খান বকুল, শিখা সেন গুপ্তা, কাজী বুশরা আহমেদ তিথি, সাবিরা মাহবুব জনি, সুপ্রভা সেবতী, রূপালী বড়ুয়া ও রাবিয়া সুলতানা পান্না।
×