ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ছেলের গায়ের রঙ নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে ॥ সাক্ষাৎকারে মেগান

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ৮ মার্চ ২০২১

ছেলের গায়ের রঙ নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে ॥ সাক্ষাৎকারে মেগান

অনলাইন ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কল বলেছেন, তার ছেলে আর্চির জন্ম হওয়ার আগে থেকেই তার গয়ের রঙ কতোটা কালো হবে তা নিয়ে উদ্বেগ ছিল ব্রিটিশ রাজপরিবারে; আর কেন তাকে প্রিন্স খেতাব দেওয়া হয়নি, তার ব্যাখ্যা ওই ঘটনা থেকেই পাওয়া যায়। রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া হ্যারি ও মেগান রবিবার রাতে হাজির হয়েছিলেন সিবিএস টেলিভিশনে ওপরা উইনফ্রির সাক্ষাৎকারে। বিস্ফোরক ওই সাক্ষাৎকারে মেগান তুলে ধরেছেন রাজপরিবারের বধূ হিসেবে তার নানা উপলব্ধি আর অভিজ্ঞতার কথা। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় কৃষ্ণাঙ্গ মা আর শ্বেতাঙ্গ বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া মেগান সাক্ষাৎকারে বলে, ২০১৮ সালে রাজপরিবারে বিয়ে হওয়ার আগে তিনি ছিলেন সাদাসিধে জীবনের মানুষ। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর অসহায়ত্বের বোধ তাকে এতটাই গ্রাস করেছিল, যে তিনি আত্মহত্যার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন। সাহায্য চেয়েও যখন কাউকে পাশে পাননি, তখন নিজের ক্ষতি করার কথাও ভাবতে শুরু করেছিলেন। “তারা চায়নি ও (সে সময় মেগানের অনাগত সন্তান) প্রিন্স বা প্রিন্সেস হোক, সে মেয়ে না ছেলে হবে তা না জেনেই। রীতি অনুযায়ী যা হওয়ার কথা তা না হওয়ায় ভবিষ্যতে সে নিরাপত্তাও পেত না।” “আমি যখন অন্তঃস্বত্ত্বা, আমার দিনগুলো একইরকম ছিল, বার বার ওই কথাগুলো ঘুরে ফিরে আসছিল- ‘তুমি নিরাপত্তা পাবে না, কোনো খেতাবও পাবে না’। আর যখন ওর জন্ম হবে, ওর গায়ের রঙ কতটা কালো হতে পারে সেসব নিয়ে তাদের আলাপ আর উদ্বেগও তো ছিলই। রাজ পরিবারের কে বা কারা গায়ের রঙ নিয়ে ওই উদ্বেগের কথা বলেছিল, তা প্রকাশ করতে চাননি মেগান। তিনি নিজেই সে সময় চুপ ছিলেন, না তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল- এই প্রশ্নে মেগান বলেছেন- ‘পরেরটি’। সিবিএস টেলিভিশন ওই সাক্ষাৎকারের ৩০ সেকেন্ডের একটি টিজার প্রকাশ করেছিল কয়েকদিন আগেই। তখন থেকেই সবার আগ্রহ ছিল এই সাক্ষাৎকার নিয়ে। রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করেছেন মেগান ও হ্যারি। রয়টার্স লিখেছে, এই সাক্ষাৎকার তাদের সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সম্পর্ক আরও তিক্ত করে তোলার প্রেক্ষাপট তৈরি করল। হ্যারি বলেছেন, তিনি রাজপরিবারের দায়িত্ব ছেড়েছেন বোঝাপড়ার সঙ্কটের কারণে। তাছাড়া তার ভয় ছিল, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি আবার না ঘটে। ১৯৯৭ সালে নিজের মা প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যুর ঘটার দিকেই ইংগিত করেছেন হ্যারি। তিনি বলেছেন, নিজের দাদি, ব্রিটিশ রানিকে তিনি অন্ধকারে রাখতে চাননি, কারণ তাকে তিনি খুবই শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু বাবা প্রিন্স চার্লস তার ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। “দাদির সাথে আমার এ নিয়ে তিন দফা কথা হয়েছিল। আর বাবা ফোন ধরা বন্ধ করে দেওয়ার আগে তার সাথেও দুই দফা কথা হয়েছে। পরে উনি আমাকে বলেছিলেন, আমি সব কথা তাকে লিখিতভাবে জানাতে পারি কি না।” হ্যারি-মেগানের সমালোচকরা বলেন, রাজপরিবারের দায়িত্বে যে নিষ্ঠা প্রয়োজন, তার বদলে তারা গুরুত্ব দিয়েছেন ‘গ্ল্যামারকে’। অন্যদিকে তাদের সমর্থকদের ভাষায়, সেকেলে ব্রিটিশ ধ্যানধারণা যে এখনও বর্ণবাদের চেতনা বহন করে চলেছে মেগানের প্রতি তাদের আচরণই তার প্রমাণ।
×