কবি ও গল্পকার এলিজাবেথ বিশপের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস এর ওরচেষ্টারে ১৯১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখে। গ্র্যাজুয়েশন করার পর তিনি দেশ ভ্রমণে বের হন। প্রথমে আসেন ফ্রান্সে। চার বছর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ স্পেন, ইতালি ভ্রমণ করেন। এরপর আসেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। নিজ চোখে দেখেছেন অনেক কিছু যা তাকে অনুপ্রাণিত করেছে লেখাতে। এরপর তিনি ব্রাজিলের যান। সেখানে থাকে ১৯৫১ থেকে ৬৬ সালে পর্যন্ত বাস করেন। এ সময় তাঁর দুটো কাজ উল্লেখযোগ্য। এলিস ব্রায়ান্টের দি ডায়েরি অব হেলেনা মোরলি (১৯৫৭) তিনি অনুবাদ করেন। আর বিশ শতাব্দীর ব্রাজিলিয়ান কবিদের কবিতার সঙ্কলন করেন যা প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে।
কবির কাব্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নর্থ এ্যান্ড সাউথ, কোয়েশ্চেন অব ট্রাভেল, এ কোল্ড স্প্রিং, জিওগ্রাফি। এ ছাড়া প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সমগ্র কবিতার সঙ্কলন।
এলিজাবেথ বিশপ ডজন খানেক পুরস্কার পেয়েছিলেন যার মধ্যে শেলী স্মৃতি পুরস্কার, পুলিৎজার পুরস্কার, হ্যারিয়েট মনরো পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।
তিনি মারা যান ১৯৭৯ সালের ৬ অক্টোবর।
অনন্য এক শিল্প
কিছু হারিয়ে ফেলা এক অনন্য শিল্প- এ কাজে পণ্ডিত হওয়া কঠিন কোন কাজ নয়;
অনেক কিছুরই জন্ম যেন হারানোর জন্য
তাদের হারানোয় কঠিন কোন দুর্যোগ নেমে আসে না।
প্রতিদিন কিছু না কিছু হারায়, সামাল দেই ঘরের দরজার চাবি হারানোর ঝক্কি,
সময় কাটে কত বাজে ভাবে তখন,
হারিয়ে ফেলার শিল্প করায়ত্ত করা তেমন কোন কঠিন কাজ নয়।
আরও অনুশীলন হোক এখন দ্রুত কিছু হারানোর,
সেই সব জায়গা, আর জায়গার নামগুলো যেখানে যাবার কথা ছিল তোমার,
এসব ভুলে গেলেও ক্ষতি নেই, মাথার ওপর এ কারণে খড় নেমে আসবে না।
আমার মায়ের ঘড়িটা হারিয়ে ফেলেছি। আর দেখ! আমার প্রিয় তিনটা বাড়ির শেষটা,
শেষের আগেরটা সবগুলো হারিয়েছি,
হারানোর শিল্পে দক্ষ হয়ে ওঠা তেমন কঠিন কোন কাজ নয়।
আমি হারিয়েছি দুটো সুন্দর শহর এবং আরও বেশি কিছু,
কিছু জগত ছিল একান্ত আমার, দুটো নদী একটা মহাদেশ। আমি সেগুলোর অভাব অনুভব করি,
তবে তা কখনও বিপর্যয়ের কারণ হয়ে ওঠেনি।
এমন কি তোমাকে হারাই, তোমার কথা ও ঠাট্টা, তোমার অঙ্গভঙ্গি যা আমি ভালবাসি-
মিথ্যা তো বলিনি। এই সব সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে বোঝা যায় হারানোর শিল্পে
পারদর্শী হওয়া কোন কঠিন কাজ নয়,
লিখে রেখ, যদিও এসব ঘোর দুর্যোগের মতো মনে হতে পারে।