ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নারীবিরোধী প্রচারণা বন্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের আহ্বান

প্রকাশিত: ২৩:১৩, ৫ মার্চ ২০২১

নারীবিরোধী প্রচারণা বন্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের আলোকে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রণীত নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরা। তারা নারীকে সাইবার সন্ত্রাস ও উগ্রবাদী আগ্রাসন থেকে রক্ষা এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর নারী বিরোধী প্রচার বন্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার ইউএন উইমেন’র সহযোগিতায় বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) আয়োজিত জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান তারা। বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সংলাপে আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ইউএন উইমেন’র প্রোগ্রাম এ্যানালিস্ট তানিয়া শারমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. সায়েমা হক বিদিশা, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ শিপা হাফিজা, মহিলা পরিষদের সীমা মোসলেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সালমা আক্তার, ব্র্যাক প্রতিনিধি তাহমিনা ইয়াসমীন, অক্সফামের মাহফুজা আক্তার, আদিবাসী নেত্রী ফাল্গুনী ত্রিপুরা প্রমুখ। বিএনপিএস’র উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমীর সঞ্চালনায় সূচনা বক্তব্য উত্থাপন করেন মানবাধিকার ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞ এ্যাডভোকেট তৌফিক আল মান্নান। সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর বলেন, পৃথিবীতে নানা ধরনের সহিংসতা বাড়ছে। মানুষ কোথাও জাতিগত সহিংসতার শিকার হচ্ছে, কোথাও ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এই সহিংসতার কারণে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। তিনি আরও বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নারীর প্রতি ভয়াবহ সহিংসতা দেখেছি। এই করোনাকালেও ঘরে-বাইরে নারীরা নির্যাতন ও বাল্যবিয়ের শিকার হচ্ছেন। সম্প্রতি আফগানিস্তানে উগ্র সন্ত্রাসবাদীরা তিন নারী গণমাধ্যম কর্মীকে হত্যা করেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা জরুরী। ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা বলেন, একটি সহিংসতামুক্ত সমাজ ও পৃথিবী গড়তে নারীরাও বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাই শুধু বাংলাদেশে নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা করলে হবে না। উন্নত দেশগুলোকেও কাজটি করতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে উন্নয়ন নারী বান্ধব নয়। বরং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্বন্দ্ব সংঘাত তৈরি করছে। যার শিকার হচ্ছে নারীরা। নারীর শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে বাংলাদেশে অগ্রগতি ইতিবাচক উল্লেখ করে ইউএন উইমেন প্রতিনিধি তানিয়া শারমিন বলেন, প্রকৃতি ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগে নারীর সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্রণীত কর্মপরিকল্পনা আলোকে বাংলাদেশে জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে যে কোন দুর্যোগ পরিস্থিতিতে নারী ইস্যুগুলো গুরুত্ব পাবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ড. সায়েমা হক বিদিশা হক বলেন, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ ১২টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ভিত্তিক জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে। এসডিজি-৪ ও ১৬-র আওতায় বরাদ্দ আনা যেতে পারে। এছাড়া সহিংসতার শিকার নারীর আইনী সহায়তাসহ অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।
×