ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ২৩:১২, ৫ মার্চ ২০২১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ আর মাত্র একদিন পরই ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল ঢাকার রেসকোর্স ময়দান। স্বাধীনতার এক দাবিতে অনড় অবস্থান নিয়েছিল বাঙালী। প্রতি প্রাণের প্রতিধ্বনি ঠিক শুনেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। অবিসংবাদিত নেতা তাই পরিষ্কার ভাষায় বলে দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ সঙ্গে সঙ্গে গোটা উদ্যানজুড়ে জয়ধ্বনি। ৭ মার্চের আহ্বানের পরই প্রকৃত অর্থে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয় গোটা জাতি। পাকিস্তানীদের ভীত কাঁপিয়ে দেয়া ভাষণ আজও বাঙালীর জেগে ওঠার মন্ত্র। নানা উপলক্ষে ভাষণটি বাজানো হয়। দিবসটির তাৎপর্য নিয়ে সভা সেমিনারও হয় প্রচুর। তবে এবারই প্রথম জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে সরকারীভাবে দিবসটি উদ্যাপন করা হবে। হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর নতুন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে দিবস উদ্যাপন বা পালনের তালিকায় ৭ মার্চকে রাখা হয় ‘ক’ ক্যাটাগরিতে। এর ফলে ‘ক’ ক্রমিকে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসের পরে থাকছে ৭ মার্চ। আর মাত্র একদিন পর রবিবার সরকারী নির্দেশনা মতো দিবসটি উদ্যাপনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। করোনা কাল চললেও, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঢাকায় বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় অনেকদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। জানা যাচ্ছে, মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলা একাডেমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের বার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করছে। ওইদিন একক বক্তৃতা প্রদান করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির। জাতীয় জাদুঘরসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষ থেকে ৭ মার্চের বিশেষ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সরকারী কর্মসূচীর বিস্তারিত এখনও জানানো হয়নি। হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ॥ রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলোর নিচে কী যে জঘন্য অবস্থা! তাকানো যায় না। যার যেমন খুশি জায়গা দখলে করেছেন। ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে কোন কোন এলাকা। তবে সবচেয়ে কুৎসিত ছবিটি দেখা যায় হানিফ ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাওয়া আসার সময়। অনেকটা জায়গাজুড়ে দোকানপাট। ঘোড়ার আস্তাবল। ফ্লাইওভারের নিচে জায়গা দখল করে সেখানে ঘোড়া রাখার জায়গা করা হয়েছিল। সেখান থেকে কী যে দুর্গন্ধ! নাক টিপে যাতায়াত করতে হয়েছে। আরও কতভাবে যে দখল করা হয়েছিল। দখলবাজের সংখ্যাও গুনে শেষ করা কঠিন ছিল। স্থানীয় নেতা মস্তান ধরনের লোকজন এসব দখলবাজি করে আসছিল। সবাই তাদের চেনেন। কিন্তু বহুদিন তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এবং অতঃপর এগিয়ে এলেন দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস। তার নির্দেশে গত মঙ্গলবার মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়। অভিযান পরিচালনা করেন সংস্থাটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবির ত্রপা। চাঁনখারপুল থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত ১৫টি দোকান উচ্ছেদ করেন তিনি। পরবর্তীতে আবারও যাতে দোকান বসতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে বলেও জানান তিনি। নিঃসন্দেহে ভাল উদ্যোগ। তবে এমন অভিযান অব্যাহত রাখার কোন বিকল্প নেই। কয়েকদিন পরপর মনিটরিং করা চাই। তা না হলে আবারও দখলে চলে যাবে। আবারও পরিণত হবে ভাগাড়ে। তাই আবারও বলি, প্রকৃতই সুফল চাইলে মনিটরিংও অব্যাহত রাখুন।
×