ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জয়শঙ্করের সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্যা আলোচনায় সমাধান করা উচিত

প্রকাশিত: ২৩:০০, ৫ মার্চ ২০২১

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্যা আলোচনায় সমাধান করা উচিত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যে কোন সমস্যা সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বিকেলে গণভবনে সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করকে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাংলানিউজের আলোচনার মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সমস্যা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সমস্যা থাকে। সেগুলো আমরা মনে করি সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে এরইমধ্যে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে সবাইকে এই টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুতেই সবাইকে সম্পৃক্ত করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়ায় বাংলাদেশে এই ভাইরাস মোকাবেলা করা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মহামারীর মধ্যে দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসীদের দেশে ফিরিয়ে এনে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের পাশপাশি করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলা করার পরও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহও বেড়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবে দেশে যেন খাদ্য সঙ্কট দেখা না দেয় সে জন্য সরকার কৃষিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকার খাদ্য উৎপাদনে জোর দিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। টিকা সরবরাহসহ কোভিড-১৯ মহামারী সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোয় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাতকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর তার বাবা ভারতের সাবেক সরকারী কর্মকর্তা কে. সুব্রামারিয়ামের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা বই ‘লিবারেশন ওয়ার অব বাংলাদেশ’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। মুজিবশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদির অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের জন্য এটা অনেক বড় সম্মানের। করোনা মহামারী প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর বলেন, এই অঞ্চলের সবাই কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেছি। করোনা সঙ্কটে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কোভিডের প্রভাব কাটিয়ে ভারতের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং সেখানে শিল্প কারখানাগুলোতে আগে যেখানে তিন শিফটে কাজ হতো এখন সেখানে চার শিফটে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ায় বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা অনেক বড় অর্জন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে একটা বিস্ময়কর উন্নয়ন। বাংলাদেশের অগ্রগতির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। কর্মব্যস্ত দিন কাটিয়ে ফিরে গেলেন জয়শঙ্কর ॥ এদিকে বিডিনিউজের জানায়, ঢাকায় কর্মব্যস্ত দিন পার করে ফিরে গেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তেজগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটি থেকে বিশেষ বিমানে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা হন বলে জানিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিশেষ বিমানে এদিন সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় পৌঁছান জয়শঙ্কর। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে তিনি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। এরপর বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে গুলশানে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে পুরাতন হাই কমিশন ভবনে নতুন ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। এরপর বর্তমান ভারতীয় হাইকমিশনে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি দিনব্যাপী কর্মসূচীর ইতি টানেন।
×