ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাহীন চৌধুরী ডলি

ভয়াবহ জবরদখল

প্রকাশিত: ২২:২৩, ৪ মার্চ ২০২১

ভয়াবহ জবরদখল

বলপ্রয়োগের দ্বারা বা জুলুম করে বা জবরদস্তি করে অন্যের কিছু কেড়ে নিজের করে নেওয়া কোন ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দেশজুড়ে চলছে দখল রাজনীতির নতুন যুগ। দখল বাণিজ্যে কখনও প্রত্যক্ষভাবে কখনও আড়ালে থেকে কলকাঠি নাড়েন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলীয় নেতারা। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে প্রভাবশালীরা সর্বত্রই গড়ে তুলছে দখলদারির সিন্ডিকেট। নষ্ট নেতারা প্রভাব খাটিয়ে দাপটের সঙ্গে একের পর এক দখল করে নিচ্ছে জমিজিরাত, বাড়িঘর, খাল-বিল, নদী-নালা, রাস্তা ফুটপাত ওভারব্রিজ, পাহাড়, বন। দখলবাজির বিরামহীন দৌরাত্ম্য থেকে একচিলতে জায়গা ফাঁকা রাখার উপায় আর নেই। রাজধানীর সর্বত্র ফুটপাত ও ওভারব্রিজ দখল করে সারাবছর বেশুমার বাণিজ্য চলছে। দখলদাররা ব্যস্ততম রাস্তার পাশের অংশ দখল করে নানারকম স্থাপনা গড়ে তুলছে। গত এক দশকে দখলে গেছে রাজধানীর অন্তত ১২টি মাঠ ও শিশুপার্ক। ফুটপাত, রাস্তার দখলদারিত্ব চলছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। হাজার হাজার ফুটপাত দোকান থেকে দিনভিত্তিক চাঁদা তুলে চাঁদার সিংহভাগ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে গডফাদারদের কাছে। গডফাদারদের ধার্যকৃত মাসোহারার টাকা যথারীতি পাঠানো হচ্ছে থানা-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতিপরায়ণদের কাছে। ব্যস্ততম রাস্তার একাংশ দখল করে শত শত চৌকি বসিয়ে রেক্সিন বা পলিথিনের ছাউনিতে গজিয়ে উঠেছে দোকানপাট। প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার চাঁদা তুলছে নেতার সহযোগীরা। ১৬০ কিলোমিটার ফুটপাতের মধ্যে ১০৮ দশমিক ৬০ কিলোমিটারই এখন অবৈধ দখলদারদের দখলে। সারা দেশে জবরদখলের চিত্র ভয়াবহ। নদীর দুই পাড় দখল করে গড়ে ওঠা হাজার হাজার ইটভাটাকে ঘিরে চলছে নদী দখলের উৎসব। নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁশের বেড়া, টিনের চাল, এবং জালের ঘেরাও দিয়ে মাছ চাষ ও কেনাবেচা করে অনেকে ব্যক্তিগত খামার বানিয়ে ফেলেছেন। নদী, খাল, বিল, জমিজমা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ প্লট বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। এসব প্রভাবশালী দখলদারদের বিরুদ্ধে টুঁ-শব্দটি করার উপায় নেই। দখলদাররা যতই প্রভাবশালী হোক তাদের বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা নিতে না পারলে সরকারের উন্নয়ন ভাবমূর্তিতে তা বিরূপ প্রভাব ফেলবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
×