ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এইচটি ইমাম আর নেই

প্রকাশিত: ২২:০২, ৪ মার্চ ২০২১

এইচটি ইমাম আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম আর নেই। ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি কিডনির জটিলতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। মাসখানেক ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও শোক জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচটি ইমামের মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলেন, জানাজা ও দাফনের বিষয়টি পরে জানানো হবে। রাত সোয়া ১টায় চিকিৎসকরা এইচটি ইমামকে মৃত ঘোষণা করেন বলে বিপ্লব বড়ুয়া জানান। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করা এইচটি ইমাম ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের চাকরিতে থাকা অবস্থায় পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন এইচটি ইমাম। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিবও হন তিনি। হোসেন তৌফিক ইমামের জন্ম ১৯৩৯ সালে, পরে তিনি এইচটি ইমাম নামেই পরিচিত হয়ে ওঠেন। বাবার চাকরি সূত্রে তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। ম্যাট্রিক পাস করেন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে। আর ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে। রাজশাহী কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রী নিয়ে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রী নেন। তখন তিনি বাম ছাত্র সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। পড়াশোনা শেষে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছিলেন এইচটি ইমাম। রাজশাহী সরকারী কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সরকারী চাকরিতে যোগ দেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত তিনি মন্ত্রিপরিষদের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবও হন। অবসর নেয়ার পর আওয়ামী লীগে সক্রিয় হন এইচটি ইমাম। দলের নির্বাচন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ছিলেন, যে কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে উপদেষ্টার দায়িত্ব দেন। প্রথমে তিনি জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৪ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা বিষয়ে এইচটি ইমামের রচিত কয়েকটি গ্রন্থকে বেশ গুরুত্ব দেন গ্রন্থ সমালোচকরা। এইচটি ইমাম নিজে নির্বাচনে না দাঁড়ালেও তার ছেলে তানভীর ইমাম সিরাজগঞ্জের একটি আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য।
×