ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আইনজীবী হত্যা ॥ বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশিত: ১৫:১২, ৩ মার্চ ২০২১

আইনজীবী হত্যা ॥ বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ডিবি পুলিশের নির্যাতনে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিম রেজার (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ আজ বুধবার এ আদেশ দিয়েছেন। এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ এর (ক) ধারার ক্ষমতাবলে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনকারী আইনজীবী বলেন, আদালত বলেছেন আইনে যেহেতু সুযোগ আছে, সেহেতু আবেদনকারী সেই সুযোগ পেতে পারেন। এ কারণে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হলো। হাইকোর্টে আবেদনের পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির ও রাষ্ট্রপক্ষে ডিএজি সারওয়ার হোসেন বাপ্পী শুনানি করেন। সূত্রমতে, গত ৮ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়েছিলো। আবেদনকারী আইনজীবী আরও বলেন, শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার শুনানিতে মেট্রোপলিটন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। কিন্তু হত্যার অভিযোগে যেহেতু পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেহেতু সেটির তদন্তভার আবার পুলিশের ওপরেই দেওয়া সমিচীন নয়। পুলিশ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত করলে সঠিক তথ্য উঠে না আসা বা ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হতে পারে। তাই ফৌজধারি কার্যবিধির ৫৬১ এর (ক) ধারার ক্ষমতাবলে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিলো। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার হাইকোর্টের বিচারকদ্বয় চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, রেজা বরিশাল নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী ইউনুছ মুন্সীর পুত্র। তিনি জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য জাকির হোসেন মিন্টুর সাথে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করে আসছিলেন। গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে রেজাউল করিম রেজাকে আটক করেন ডিবির এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ। পরে আহতাবস্থায় রেজাউলকে থানার মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১ জানুয়ারি শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরেরদিন ২ জানুয়ারি রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেজার মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে এলাকাবাসি অভিযুক্ত ডিবির এসআই মহিউদ্দিনের বিচারের দাবি করে রেজার লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পুলিশের অমানুষিক নির্যাতনের কারণেই রেজার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে রেজাউলের বাবা গত ৫ জানুয়ারি আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মহানগর গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন আহমেদ মাহি সহ তিনজনকে আসামি করা হয়। মামলার পর অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
×