ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে : মেয়র তাপস

প্রকাশিত: ১৬:৫৯, ২ মার্চ ২০২১

রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে : মেয়র তাপস

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকল্পের উপর নির্ভরতা কমিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এছাড়া রাজস্ব সংক্রান্ত তথ্য হালনাগাদ করার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নির্দেশনা দেন। একইসাথে রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে বলেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটরিয়ামে সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আয়োজিত রাজস্ব সম্মেলনে কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হকের সঞ্চালনায় আজকের এই রাজস্ব সম্মেলনে কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী ও সচিব আকরামুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিএসসিসির কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, রেভিনিউ সুপারভাইজার, লাইসেন্স সুপারভাইজার, বাজার সুপারভাইজার ও রেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ব্যারিস্টার তাপস বলেন, আমরা পূর্বে অনেক কিছুই পারিনি। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আমরা ছিলাম কারণ আমরা রাজস্ব আহরণ করতে পারিনি। আমাদেরকে সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হয়েছে। আমাদেরকে প্রকল্প নির্ভর চলতে হয়েছে। আমরা প্রকল্প জমা দেই, তারপর সরকার আমাদেরকে অর্থ দেই এবং তারপর অর্থ ছাড় দেওয়া হয়। তারপর আমরা কাজ করি। এই প্রকল্প নির্ভরতা আমাদের কমাতে হবে। নিজস্ব সক্ষমতা বাড়াতে হবে, স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। ডিএসসিসি মেয়র বলেন,আপনারা উপলব্ধি করেছেন যে, আমাদের ট্রেড লাইসেন্স এর সংখ্যা মাত্র ২ লক্ষ ১৮ হাজার। এটা পর্যাপ্ত নয়, অপ্রতুল। এর বাইরে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ আমাদের শহরে ব্যবসা করছে কিন্তু আমাদের করের আওতায় আসেনি। সুতারাং তাদেরকে করের আওতায় আনতে হবে। তেমনি পৌর করের (হোল্ডিং ট্যাক্স) সংখ্যা মাত্র ১ লক্ষ ৮৩ হাজার। এই সংখ্যাটা অনেক পূর্বের মনে হচ্ছে। এ সংখ্যাটা অনেক বৃদ্ধি পাবে। সুতরাং হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা এবং ট্রেড লাইসেন্সের জন্য ২০০ কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা আমরা দিয়েছি, সেটি আদায়যোগ্য। আমরা সবাই মিলে ঐকবদ্ধ হয়ে সুষ্ঠুভাবে যদি কাজ করি তবে সেটি শতভাগ আদায় করা সম্ভব। শেখ তাপস বলেন, রাজস্ব আহরণের নতুন লক্ষ্যমাত্রা এমন কোন অসম্ভব লক্ষ্যমাত্রা নয়। আমরা যেটা বঞ্চিত হচ্ছি, সেটাই আমরা আদায় করতে চাচ্ছি। আমাদের যেটা প্রাপ্য আমরা সেটাই আদায় করতে চাচ্ছি। সেখানে আমাদের বিদ্যমান লোকবল দিয়েই সেটা আদায় করা সম্ভব। তারপরও আপনারা যে দাবি-দাওয়া দিয়েছিলেন, সেগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি। আপনাদের পদোন্নতি পর্ব শেষ। সামনের বছর আবারও পদোন্নতি পর্ব করব। এছাড়াও আমাদের জনবলের যে সঙ্কট রয়েছে, অবকাঠামোগত যে দুর্বলতা রয়েছে সেটাও আমরা পূরণ করব। কিন্তু আমার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দিতে হবে। এ সময় ব্যারিস্টার তাপস উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন,আমি দুষ্টের দমন, শিষ্টের লালনে বিশ্বাস করি। যে ভালো করবে, যে সংস্থাকে আপন মনে করে কাজ করবে, তাকে অবশ্যই পুরস্কৃত করা হবে। তাকে প্রণোদনা দেওয়া হবে। কিন্তু যে অন্যায় করবে, মানুষকে হয়রানি করবে, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে সেটা আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, রাজস্ব আহরণকে মানব শরীরের রক্ত সঞ্চালন হওয়ার মতো। আমরা যত বেশি রাজস্ব আহরণ করতে পারব তত বেশি নাগরিক সেবা বৃদ্ধি করতে পারব। একইসাথে আপনাদের সুযোগ-সুবিধা বলেন বা কাজের পরিবেশ বলেন বা মান-সম্মান যাই বলেন বলেন না কেন, সবই বৃদ্ধি পাবে।
×